এই সময়: প্রশ্নপত্রেও হয়েছিল ‘সেটিং’। নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে এ বার এই দাবি সামনে আনল সিবিআই। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার অভিযোগ, শুধুমাত্র উত্তরপত্র বা ওএমআর শিটেই কারচুপি হয়েছে এমন নয়, প্রশ্নপত্রের ক্ষেত্রেও তা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত তাপস মণ্ডলের জামিনের বিরোধিতা করার সময়ে আদালতের কাছে সিবিআইয়ের আইনজীবী দাবি করেন, তাপস প্রশ্নপত্র তৈরির ক্ষেত্রেও নিজের প্রভাব খাটিয়েছিলেন।

OMR Sheet : কারচুপির কালিতে কি বাদ যোগ্যরা? কীর্তি অয়নের, দাবি ইডি-র
এবং সেখানেও দেদার দুর্নীতি হয়েছে। এই চাঞ্চল্যকর অভিযোগে মাধ্যমে এ বার প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের জেলবন্দি প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের জমানায় প্রশ্নপত্র তৈরির কাজে দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা, কোয়েশ্চেন সেটার থেকে বিশেষজ্ঞ কমিটি, মডারেটর- প্রত্যেককেই কাঠগড়ায় তুলেছে সিবিআই। তবে এ ব্যাপারে এখনই আদালতের সামনে খোলসা করে আর কিছু বলেনি তারা।

OMR Sheet : নীলাদ্রির সংস্থার হাতেই ছিল ওএমআর-মূল্যায়ন, টেন্ডারে ভুয়ো শংসাপত্র জমা দেওয়ার অভিযোগ
সিবিআই সূত্রের খবর, মানিক জমানায় যে তিনটি টেট পরীক্ষা (২০১২, ২০১৪, ২০১৭) হয়েছিল, তার প্রতিটিতেই এমন কারচুপি হয়েছে। ইতিমধ্যে ওএমআর শিট বা উত্তরপত্রে কারচুপির অভিযোগ সামনে এনেছে ইডি-সিবিআই। কিছু দিন আগে এসএসসির ওএমআর শিট কেলেঙ্কারির জন্য গ্রেপ্তার করা হয়েছে একটি বেসরকারি সংস্থার কর্তা নীলাদ্রি দাসকে। অভিযোগ, তাঁর মাধ্যমে উত্তরপত্রে জালিয়াতি করা হয়েছে। ইডি-ও সম্প্রতি দাবি করেছে, ধৃত প্রোমোটার অয়ন শীল উত্তরপত্রে পেন চালাতেন। যোগ্য প্রার্থীদের সঠিক উত্তর নষ্ট করে অযোগ্যদের সাদা খাতায় সঠিক উত্তর বসিয়ে দিতেন।

Recruitment Scam : নজরে সরকারি অফিসাররা, সূত্র ‘মিস্টার সামন্ত’, আধিকারিকদের নাম কেস ডায়েরিতে
কিন্তু সিবিআইয়ের দাবি, প্রশ্নপত্রেও এমন কারচুপি হয়েছে। গোয়েন্দারা মনে করছেন, দু’ভাবে এ কাজ করতে পারেন তাপস-কুন্তল-অয়নদের মতো এজেন্টরা। প্রথমত, আগেভাগে প্রশ্ন জেনে তা ফাঁস করা হতে পারে অযোগ্যদের কাছে। আবার আগে থেকে প্রশ্ন স্থির করে তা অযোগ্যদের হাতে তুলে দেওয়া হতো। তারপরে প্রাথমিক বোর্ডের প্রশ্ন যাঁরা তৈরি করেন, তাঁদের বলে দেওয়া হতো ওই নির্দিষ্ট প্রশ্নগুলি যেন পরীক্ষায় দেওয়া হয়। দুই পদ্ধতিতেই অনৈতিক ভাবে সুবিধে পেতেন অযোগ্য প্রার্থীরা।

Recruitment Scam : নীলাদ্রির সংস্থা: ঢালাও প্রশংসা শান্তিপ্রসাদের
নীলাদ্রি দাসের সংস্থাকে দেওয়া এসএসসির ধৃত প্রাক্তন উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদ সিনহার একটি শংসাপত্র সম্প্রতি সামনে এসেছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে নীলাদ্রির সংস্থার অন্যান্য কাজের সঙ্গে প্রশ্নপত্র তৈরির ‘দক্ষতা’কে দরাজ সার্টিফিকেট দিয়েছেন তিনি। এতেও তদন্তকারীদের সন্দেহ আরও জোরদার হয়েছে।

PSC Recruitment : পিএসসি নিয়োগেও যোগ ধৃত নীলাদ্রির!
প্রাথমিকের ক্ষেত্রে অবশ্য মানিক-মামলায় এর আগেই ইডির অভিযোগ ছিল, প্রশ্নপত্রে বিভিন্ন সময়ে যে ভুল করা হতো, তা-ও পূর্ব পরিকল্পিত এবং অযোগ্যদের সুবিধে পাইয়ে দেওয়ার জন্য। ইডির অভিযোগ, প্রশ্ন ইচ্ছে করে ভুল করা হতো। যাতে পরে এ ব্যাপারে আরটিআই করতে পারেন অযোগ্যরা। আরটিআইয়ের পরে আদালতে মামলা করা হতো।

Recruitment Scam : পুর নিয়োগের তদন্ত নিয়ে মামলার পথে ইডি
যাতে ভুল প্রশ্নের প্রেক্ষিতে বাড়তি নম্বর পেয়ে অযোগ্যরা এগিয়ে যেতে পারেন। এই গোটা প্রক্রিয়াই করা হতো অত্যন্ত গোপনে। কিন্তু সিবিআইয়ের দাবি, অনেক ক্ষেত্রে অযোগ্যদের আগেভাগে প্রশ্ন বলে দেওয়া হতো। শুধুমাত্র সেই প্রশ্নগুলির উত্তর দিয়ে আসতে পারলেই তাঁরা অনৈতিক ভাবে চাকরির দৌড়ে এগিয়ে যেতে পারতেন।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version