কত ব্যর্থতার পর সাফল্য আসে? তা হয়ত নির্দিষ্ট করে বলা যায় না। তবে সেই টমাস আলভা এডিসনের বৈদ্যুতিক বাল্বের আবিষ্কার থেকে হ্যারি পটারের স্রষ্টা জে কে রাউলিং কেউ একদিনে সাফল্য পাননি।

‘একবার না পারিলে দেখো শতবার।’ এ কথাই হয়ত অক্ষরে অক্ষরে মেনেছিলেন কোচবিহারের যুবক মৃণালকান্তি রায়। সপ্তমবারের চেষ্টাতে বাজিমাত করেছেন কোচবিহারের দিনহাটা ব্লকের প্রত্যন্ত গ্রামের বাসিন্দা মৃণাল। WBCS-পরীক্ষায় গ্রুপ-এতে সফল হয়ে হইচই ফেলে দিয়েছেন তিনি। ইতিমধ্যে যাবতীয় নথিপত্র ভেরিফিকেশন হয়ে গিয়েছে। আর কিছু নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া, তারপর চাকরিতে যোগ দেওয়ার অপেক্ষা। আর গ্রামের ছেলের এই সাফল্যে খুশি দিনহাটার ভিতরকামতা গ্রামের বাসিন্দারা।

Success Story: কোচিং ছাড়াই UPSC-তে সাফল্য, দ্বিতীয়বার সিভিস সার্ভিস দিয়ে IAS অফিসার তেজস্বী রানা

হতাশ হলে একেবারেই চলবে না। চেষ্টা করে যেতে হবে

মৃণালকান্তি রায়

কোচবিহার জেলার গুরুত্বপূর্ণ মহকুমা শহর দিনহাটা। এই দিনহাটা শহর থেকে ৮ কিলোমিটার দূরে ভিতরকামতা গ্রাম। এই গ্রামের যুবক মৃণাল ছোটবেলা থেকে পড়াশোনায় ছিলেন সাধারণ মানের। বাবা ছোটবেলাতেই মারা যান। মা অপর্ণা রায় পেশায় দিনহাটা মহকুমা হাসপাতালে একজন ডি-গ্রুপ কর্মী। গোটা সংসারের দায়িত্ব মায়ের ওপর। এরপর ২০১০ সালে স্নাতক হওয়ার পর সরকারি চাকরি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন মৃণাল।

Raiganj News : এমএ পাশ ফেরিওয়ালা! শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন ভুলতে বসেছেন রায়গঞ্জের রাজকুমার
রাজ্য সরকারের একাধিক পরীক্ষায় বসলেও প্রথমে সফলতা আসেনি। প্রশাসনের উচ্চপদে চাকরি করার ইচ্ছে ছিল। কিন্তু সে তো কঠিন ব্যাপার। একদিকে সংসারের টানাটানি অপরদিকে ভালো চাকরি করার ইচ্ছে। তাই বাড়িতেই টিউশনি পড়ানো শুরু করেন। দিনরাত টিউশনি যেমন করাতেন পাশাপাশি চলত চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতি।

IIT Jam Topper 2023 : সর্বভারতীয় পরীক্ষায় বাংলার জয়জয়কার, IIT জ্যামে প্রথম নৈহাটির রূপাঞ্জন
এরপর ২০১৪ সালে ডব্লুউবিসিএস পরীক্ষায় বসেন প্রথমবার। ব্যার্থ হন। নিজের ভুল ত্রুটি সংশোধন করে ফের বসেন। ফের ব্যার্থ। এরপর বুঝতে পারেন আরও প্রস্তুতি দরকার। এভাবে একটানা ছয় বার বসার পর সপ্তমবার সফলতা পান। ২০২০ সালের ডব্লুউবিসিএস- এ গ্রুপে পাশ করেন। ইতিমধ্যে জলসম্পদ উন্নয়ন দফতরে ক্লার্কের চাকরি পান গত ডিসেম্বর মাসে। বর্তমানে ওই দফতরের মাথাভাঙা অফিসে কর্মরত।

WBCS Result: অদম্য লড়াই এনে দিল সাফল্য, WBCS-এ দুর্দান্ত ফল নবীরুলের

মৃণালবাবুর কাকা তারাকান্ত রায় স্থানীয় গোসানিমারি -১ গ্রাম পঞ্চায়েতের পঞ্চায়েত সদস্য। তিনি বলেন, ‘ও সারাদিনই পড়াশোনা নিয়ে থাকত। খুব পরিশ্রম করেছে। আমরা তো ভাবতেই পারি না। খুব ভালো লাগছে।’ এলাকার বিধায়ক জগদীশ বর্মা বসুনিয়া বলেন, ‘প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে মৃণাল ডাব্লুউবিসিএস এ সুযোগ পেয়েছে। এটা খুব ভালো খবর। আশেপাশের গ্রামের ছেলেরা অনুপ্রেরণা পাবে।

মৃণালএই সময় ডিজিটাল-কে বলেন, ‘হতাশ হলে একেবারেই চলবে না। চেষ্টা করে যেতে হবে। আমার কাছে এই পরীক্ষা চাকরি ছিল না। ছিল স্বপ্ন। আমার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে, বাকিদেরও হবে। তবে কোনওভাবে হাল ছাড়লে চলবে না।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version