অয়ন ঘোষাল: বৃহস্পতিবার সকালে নিউ টাউনের ইকোপার্কে প্রাতঃভ্রমণে আসেন বিজেপি সর্বভারতিয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ। সেখানেই সাংবাদিকদেড় মুখোমুখি হন তিনি। মুকুল রায় থেকে শুরু করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের জেলা সফর; সব বিষয়েই শাসক দলকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন তিনি।
মুকুল রায় প্রসঙ্গ
মুকুল রায়ের বিজেপি-তে যোগদান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘নেবো কিনা জানিনা। কে নেবে তাও জানিনা। ওর মধ্যে আর কিছু বাকি নেই। নিয়ে কার লাভ তাও ঠিক নেই। পার্থ বলে দল আমার সঙ্গে আছে। আছে কি আদৌ? মুকুল বলছে আমি ওর সঙ্গে আছি। আছে কি? মুকুল বলেছে বিজেপিতে ছিলাম, আছি, থাকব। উনি বলছেন সিপিএম কে তাড়াতে হবে। ওনার মাথা ঠিক আছে কি? এখানে কি সিপিএম আছে? কার হয়ে বলছেন? সেটা আগে ঠিক হোক। উনি অসুস্থ। নিজে বলছেন, আমি ঠিক আছি। ছেলে বলছে বাবা পাগল। আগে বাপ ছেলে ঠিক করুক কে কি? তারপর পাবলিক ঠিক করবে’।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের জেলা সফর প্রসঙ্গে
এই জেলা সফর বিষয়ে দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, ‘এর রেজাল্ট কি? দুয়ারে সরকারে কর্মচারি নেই। লক্ষীর ভাণ্ডারে আর দেওয়ার মতো টাকা নেই। দিদির দূত সব ভগ্ন দূত হয়ে গিয়েছে। লোকে গাছে বেঁধে আটকে রাখছে গ্রামে গ্রামে। এত দুর্নীতি করলে মানুষ তো বটেই, ভগবানও সঙ্গে থাকে না। তাই আজ কেউ নেই। বিচার ব্যবস্থাও পাশে নেই। তাই চেষ্টা করছে মানুষকে ভুলিয়ে ভালিয়ে রাখতে। উনি জীবনে প্রথম বার গ্রামে যাবেন। রাহুল যেমন গ্রামে গিয়ে এবারই প্রথম সূর্যোদয় দেখল। গ্রামের মানুষ কিরকম হয় উনি সেদিন পার্লামেন্টে বলছিলেন। ৫০ বছর বয়সে উনি ডিসকভারি অফ ইন্ডিয়া করলেন। এখানেও তাই। যুবরাজ ৪০ বছর বয়সে সবাইকে দর্শন দিতে যাবেন। অথচ উনি গ্রামের থেকেই প্রতিনিধি। এবার গ্রাম দেখতে যাবেন। মানুষ বিশ্বাস করে ভোট দিয়েছে এদের। একবার অন্তত যান। রাহুল ৫০-এ গেল। উনি একটু আগে ৪০-এ যান। একটু আগে শুরু করুন’।
২০২৪ সালে মাত্র ২০০ আসনেই শেষ বিজেপি: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ২০২৪ সালে বিজেপি ২০০-র থেকেও কম আসন পাবে। সেই প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘কার শাপে যেন গরু মরে না? কি একটা প্রবাদ আছে? ২০১৯ এও বলেছিলেন বিজেপি ফুস। ওরা নাকি ৪২ এ ৪২ পাবে। পরিণাম কি হল? ওনার এক ডজন সিট কমে গেল। যাদের উনি কলকাতায় সেবার সভা করতে নিয়ে এসেছিলেন তাদের অনেকেই পার্লামেন্ট পর্যন্ত পৌছাতে পারেনি। সবাই জেনে গিয়েছে ব্যাপারটা। তাই মমতাকে আর কেউ ডাকে না। কারণ ওনার দৃষ্টি পড়লেই সর্বনাশ’।
যদি শাহকে ফোন করেছি প্রমাণ হয়, আমি গদি ছেড়ে দেব : মমতা
অমিত শাহকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফোন প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষের দাবি, ‘এতে প্রমাণ করার কি আছে? ওরা সর্বভারতীয় নাকি আঞ্চলিক, তাতে মানুষের কি যায় আসে? রাজ্যের মানুষ পেটে গামছা বেঁধে আছে। অন্য রাজ্যে গিয়ে চাকরি খুঁজে বেড়াচ্ছে। সেই তো এখানে কাটমানি আর দুর্নীতি চলছে’।
আরও পড়ুন: Budg Budg: ফের অমানবিক শহর কলকাতা, ট্রেনের ধাক্কার পরেও লাইনের পাশে পড়ে রইলেন দেড় ঘন্টা
বিজেপি দেশ চালাচ্ছে না, দেশ জ্বালাচ্ছে: তৃণমূল
ব্জপ-র দেশ শাসন সম্পর্কে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘বিজেপি কীরকম দেশ চালাচ্ছে অন্য রাজ্যে গিয়ে দেখে আসুন। উনি একবার মোদীকে নকল করে ইনডোরে রোজগার মেলা করেছিলেন। দেখা গেল সব ভুয়ো। ওগুলো চাকরি নয়। সব ট্রেনিং এর কাগজ। যে কোম্পানিগুলোর নাম করেছিল, তারাই বলছে সব ভুয়ো। আমাদের নাম ভাঙানো হয়েছে’।
শুভেন্দুকে নাকে খত দিতে হবে : মমতা
শুভেন্দু অধিকারী প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে দিলীপ ঘোষের দাবি, ‘উনি আগে প্রমাণ করুন। তারপর দেখা যাবে। আর উনি মুখ্যমন্ত্রীত্ব থেকে পদত্যাগ করলেই বা কি যায় আসে? উনি যে আছেন তাও কি বোঝা যায়? না দলে কোনও সিস্টেম আছে। না রাজ্যে আইন শৃঙ্খলা বলে কিছু আছে। সরকারি টাকা লুঠ হচ্ছে। উনি এখানকার টাকা ওখানে দিয়ে তাপ্পি মেরে চালাচ্ছেন। রাস্তা, স্বাস্থ, শিক্ষা, কিছুই তো ঠিক নেই। অর্ধেক স্কুলে শিক্ষক নেই। ওনার থেকেই বা কি লাভ? উনি বাংলার মানুষের স্বার্থে নিজে থেকেই ছেড়ে দিন’।
স্ক্যানারে শেখ সুফিয়ান
সুফিয়ান প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষের দাবি, ‘এরা কেউ ছাড়া পাবে না। হাজার হাজার লোকের পিছনে সিবিআই লাগানো কাঁহাতক সম্ভব? এতো বছর ধরে লুঠ চলছে। পুলিস টাকা তোলায় ব্যস্ত। তাহলে তদন্ত কে করবে? সিবিআই গেলে পুলিস বাধা দিচ্ছে। এবার তো দেশের সমস্ত সিবিআই এখানে তুলে আনতে হবে, এতো কেস’।
নীলাদ্রি দানা সিআইডি স্ক্যানারে
নিলাদ্রি দানা কে সিআইডি-এর ডাক প্রসঙ্গে দিলীপ বলেন, ‘ওরা যদি মনে করে সিবিআই তাদের ডাকছে বলে পাল্টা সিআইডি দিয়ে ধমক দেবেন, তাহলে ভুল করবেন। মানুষ সব দেখছে।‘