শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ড নিয়ে এখন কার্যত ল্যাজে গোবরে অবস্থা রাজ্যের শাসকদলের। এই অবস্থার মধ্যেই সামনে এল শাসকদলের আস্থাভাজন পূর্ব বর্ধমানের কালনার খাঁপুর প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক তপন পোড়েলের নয়া কীর্তি। তিনি আবার কালনা পুরসভার উপ-পুরপ্রধানও বটে।
গ্রামের বাসিন্দারা জেলার প্রাথমিক স্কুল সংসদের চেয়ারম্যানের কাছে অভিযোগ দায়ের করে জানিয়েছেন, শিক্ষক তপন পোড়েল স্কুলে না এলেও হাজিরার খাতাতে যথারীতি তাঁর স্বাক্ষর হয়ে যাচ্ছে। তার দরুণ নির্দিষ্ট দিনে তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে শিক্ষকের বেতন ঢুকে যাচ্ছে। আবার পুরসভা থেকেও তপনবাবু নাকি যথারীতি সাম্মানিকও নিচ্ছেন। এলাকাবাসীর আনা এই অভিযোগের সারবত্তা রয়েছে বলে তদন্ত শেষে রিপোর্টও জমা দিয়েছেন স্কুল পরিদর্শক।
এ বিষয়ে প্রাথমিক স্কুল সংসদের চেয়ারম্যান তথা মেবারির বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য্য জানিয়েছেন, রিপোর্টের ভিত্তিতে সব পক্ষকে নিয়ে শুনানি করার পরে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে গোটা ঘটনা নিয়ে তপন পোড়েলের সাফাই, “সব কিছু স্বাভাবিক হয়ে গিয়েছে। এখন আমি নিয়মিত স্কুলে যাই। পুরসভা থেকে সাম্মানিক নিই না। শিক্ষক হিসেবেই বেতন নিয়ে থাকি।”
এলাকাবাসীর কথায়, খাঁ পুর গ্রামের ৫০ জন বাসিন্দা তাঁদের সই-সম্বলিত একটি অভিযোগপত্র গত ১৩ মার্চ জেলা প্রাথমিক স্কুল সংসদে জমা দেন। গ্রামবাসী সুমন হাজরা, প্রসেনজিৎ সরকাররা জানান, কালনা পূর্ব চক্রের খাঁপুর স্কুলের প্রধান শিক্ষক তপন পোড়েল গত দু’বছর ধরে স্কুলে আসেন না। বর্তমানে তিনি কালনা পুরসভার উপ-পুরপ্রধান। তাই স্কুলে না এসে পুরসভাতেই তিনি বেশি সময় দেন। অথচ হাজিরার খাতায় নিয়মিত তাঁর স্বাক্ষর হয়ে যায়।
পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান সবজি বিক্রেতা!
এ নিয়ে এবিপিটিএ শিক্ষক সংগঠনের জেলার সম্পাদক নীরব খান জানান, ওই শিক্ষক বেপরোয়া কাজ করেছেন। এসআই যে রিপোর্ট দিয়েছেন, তার ভিত্তিতে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে আশা করি। অন্যদিকে কালনার বিধায়ক তথা জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র দেবপ্রসাদ বাগ জানান, ব্যক্তিগতভাবে কেউ অন্যায় করলে দল তাঁর পাশে থাকবে না। এ রকম ঘটনা নিন্দনীয়। দলের ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হবে।