পথ দেখাল বাঁকুড়া। শুধু চিকিৎসা পরিষেবা দিয়ে সুস্থ করে তোলাই নয়, দীর্ঘ ছ’মাস ‘নিখোঁজ’ ভিন রাজ্যের মানসিক ভারসাম্যহীন এক ব্যক্তিকে পরিবারের সদস্যদের হাতে তুলে দিলেন বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসকরা। হাসপাতালের চিকিৎসকদের সৌজন্যে শুক্রবার সন্ধ্যায় পরিবারকে ফিরে পান অসমের চিরাং জেলার এক বাসিন্দা। মানিকপুর থানা এলাকার লুংঝার গ্রামের ওই বাসিন্দার নাম ইসমাইল হোসেন।বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল সূত্রে খবর, ১২ এপ্রিল বাঁকুড়ার বড়জোড়া সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল থেকে ওই ব্যক্তিকে এখানে স্থানান্তরিত করা হয়। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সময় তাঁর সারা শরীরে, মাথায়, হাতে ও পায়ে গুরুতর আঘাত ছিল।

Uttar 24 Pargana : সম্পত্তিগত বিবাদের জেরে ভাইকে খুনের চেষ্টা! দেগঙ্গায় গ্রেফতার প্রৌঢ়
হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর সার্জারি বিভাগে শুরু হয় তাঁর চিকিৎসা। কিন্তু, চিকিৎসা শুরু হলে প্রায় ১৪ দিন তাঁর জ্ঞান ফেরেনি। হাসপাতাল সূত্রে খবর, জ্ঞান ফিরে আসার পরও সাত দিন সে স্বাভাবিক হতে পারেনি। পরে কথা বার্তা বলা শুরু করলে বোঝা যায় তিনি অসমের বাসিন্দা।

এই অবস্থায় সহকারী সুপার ডাঃ মলয় পাত্র ওই ব্যক্তির সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ ধরে কথা বলেন। পরে তার বিশেষ উদ্যোগে ‘হ্যাম রেডিও’র মাধ্যমে এই বিষয়টি সম্প্রচারিত হয়। পুলিশের মধ্যস্থতায় ‘নিখোঁজ’ ইসমাইল হোসেনের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ হয়। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, ওই ব্যক্তি বাসের ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে আহত হন। তারপরই তাঁকে হাসাপাতেল ভর্তি করা হয়।

Paschim Medinipur : জলের ট্যাঙ্কের মাথায় যুবক, নামিয়ে আনতেই দমকলকর্মীকে সটান প্রণাম! কারণ জানেন
খবর পেয়েই সুদূর অসমের গ্রাম থেকে বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে আসেন ওই ব্যক্তির দাদা ও প্রতিবেশীরা। পরিবার সূত্রে জানা গিয়ছে, ছ’মাস আগে বাড়ি থেকে বেরনোর পর থেকে সে আর ফিরে আসেনি। বিষয়টি মানিকপুর থানায় জানানো হয়েছিল, কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। ওই ব্যক্তির পরিবার তাঁকে ফিরে পাওয়ার আশা প্রায় ছেড়ে দিয়েছিল। তখনই ইসমাইলকে ফিরে পেয়ে খুশি তাঁর পরিবারের সদস্যরা।

এই প্রসঙ্গে বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল ও হাসপাতালে সুপার সপ্তর্ষী চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘বড়জোড়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল থেকে এখানে ভর্তি করা হয়। আমরা তাঁর চিকিৎসা শুরু করি। ১৪ দিন পর তাঁর জ্ঞান ফিরে আসে। তখন হ্যাম রেডিও-র মাধ্যমে আমরা খবর পাঠাই। কোনও বাসের ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে এই দুর্ঘটনা ঘটেছিল। আমরা পুলিশ, সংবাদমাধ্যম ও চিকিৎসক সবার সাহায্য পেয়েই আমরা বাড়ি ছেলে বাড়িতে ফিরিয়ে দিতে পারছি।’

Murhidabad News : ভিনদেশে কাজে গিয়ে বিপদে ছেলে! আতঙ্কে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বাবার
মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তির ভাই মোকসেদ আলি বলেন, ‘ছ’মাস আগে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল। আমরা থানায় খবর দিয়েছিলাম, কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। শেষমেশ আমার ভাইকে ফিরে পেয়ে খুবই খুশি। তাঁকে ফিরে পাব আশা করতে পারনি। হাসপাতালের চিকিৎসকদের অসংখ্য ধন্যবাদ। ১২-১৪ বছর ধরে মানসিক সমস্যা ছিল ভাইয়ের।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version