কুলি থেকে বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার আন্দির বাড়ির মেরেকেটে পাঁচ কিলোমিটার। মঙ্গলবার বীরভূম রওনা হওয়ার আগে অভিষেকের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য কুলির তাঁবুতে হাজির হন বিধায়ক পত্নী টগর সাহা। সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিকেল ৩টে। টানা পাঁচ ঘণ্টা বসে থেকেও তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কমান্ডের দেখা পাননি টগর। আরও নির্দিষ্টভাবে বলা যায় টগরের সঙ্গে দেখার করার কোনও আগ্রহ দেখাননি অভিষেক।
এই খবর চাউর হতেই টগরের সঙ্গে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগ করে এই সময় ডিজিটাল। ফোন ধরলেও ‘অভিষেকের সঙ্গে কেন দেখা করতে চেয়েছিলেন?’ প্রশ্ন শুনেই মুখের উপর ফোন কেটে দেন তিনি। এমনকী তাঁকে হোয়াটস্যাপে মেসেজ করা হলেও কোনও জবাব আসেনি। সেই কারণে প্রশ্নে উত্তর এখনও অজানা থেকে গিয়েছে।
জীবনকৃষ্ণ গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই তাঁর অসংখ্য ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের হদিশ পেয়েছে সিবিআই। কোটি কোটি টাকার সম্পত্তির খোঁজ পাওয়ার পাশাপাশি সেই অ্যাকাউন্টগুলি থেকে মোটা টাকার লেনদেন হয়েছে। জীবন ছাড়া তাঁর স্ত্রী টগরের একাধিক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টও গোয়েন্দাদের নজরে রয়েছে। তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে আগেই জানা গিয়েছিল, টগরের নামে আন্দি বাজার এলাকায় প্রায় দু’কোটি টাকা মূল্যের সম্পত্তি রয়েছে।
বিধায়ক পত্নী কেন অভিষেকের সঙ্গে দেখা করতে গেলেন সেই নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলার তৃণমূলের এক নেতা বলেন, ‘অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে জীবনের স্ত্রী কেন দেখা করতে চেয়েছিলেন, তা বলা মুশকিল। আমরা মনে হয় উনি জল মাপতে এসেছিলেন। স্বামীর গ্রেফতারির পর দল তাঁদের পাশে রয়েছে কিনা সেটা দেখার জন্য এসে থাকতে পারেন। তবে এভাবে আইনি বিষয় চলাকালীন এই কাজ করা উচিত হয়নি।’
উল্লেখ্য, নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে নেমে হঠাৎ একদিন তৃণমূল বিধায়ক জীবনের আন্দির বাড়িতে হানা দেয় সিবিআই। বাড়ির সদর দরজা বন্ধ করে শুরু হয় তল্লাশি-জিজ্ঞাসাবাদ। প্রায় ৬০ ঘণ্টারও বেশি সময় সেখানেই ছিলেন সিবিআই আধিকারিকরা। দীর্ঘক্ষণের জিজ্ঞাসাবাদের পর বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ককে গ্রেফতার করে সিবিআই। তাঁকে মুর্শিদাবাদ থেকে কলকাতার নিজাম প্যালেসে নিয়ে আসা হয়। আজ ফের জীবনকে আদালতে পেশ করা হবে।