তাপস প্রামাণিক
রাস্তা ও সেতু নির্মাণে আধুনিক প্রযুক্তি কাজে লাগাতে চাইছে রাজ্য সরকার। এই সব নির্মাণকাজে ঠিকাদাররা যাতে উন্নত প্রযুক্তি এবং আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করেন–তার জন্যে টেন্ডারেই নতুন শর্ত আরোপ করতে চলেছে রাজ্য পূর্ত দপ্তর। সরকারের নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, রাস্তা ও সেতু নির্মাণের সময়ে কোন কোন যন্ত্রপাতি ব্যবহার করতে হবে, সেটা টেন্ডারেই উল্লেখ করে দেওয়া হবে। যাতে ঠিকাদার পরে আর অস্বীকার করতে না পারেন। এই মর্মে পূর্ত দপ্তর নতুন নির্দেশিকাও জারি করেছে।

Singur News : মুখ্যমন্ত্রীর উদ্বোধনের পরেও পথশ্রীতে রাস্তা হয়নি, প্রতিবাদে সিঙ্গুরে পথে CPIM
পূর্ত দপ্তরের এক কর্তার বক্তব্য, সময় বদলের সঙ্গে সঙ্গে রাস্তা ও সেতু নির্মাণে অনেক উন্নত প্রযুক্তি এবং আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহৃত হচ্ছে। তাতে কাজের মান যেমন ভালো হয়, তেমনই কাজটাও হয় দ্রুত। তাড়াতাড়ি কাজ শেষ হলে মানুষের দুর্ভোগ কমে। সে জন্যেই রাস্তা ও সেতু নির্মাণে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার সুনিশ্চিত করতে চাইছে সরকার।

Banga Bhawan : নতুন ভাবে সেজে উঠবে দিল্লির বঙ্গভবন
তাঁর কথায়, ‘বড় বড় ঠিকাদার সংস্থার হাতে রাস্তা তৈরির অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি থাকলেও বেশির ভাগ ঠিকাদার বাইরে থেকে যন্ত্রপাতি ভাড়া করে আনেন। অনেক সময়ে তাঁরা খরচ বাঁচাতে যন্ত্রের বদলে শ্রমিকদের দিয়েও কাজ করান। তাতে কাজ শেষ হতে বেশি সময় লাগে। এটা বন্ধ করতেই কোন কোন কাজে কোন কোন যন্ত্রপাতি রাখতেই হবে, সেটা টেন্ডারের শর্তে উল্লেখ করে দেওয়া হবে। টেন্ডারের শর্ত ভাঙলে সেই ঠিকাদারের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও নিতে পারবে সরকার।’

পূর্ত দপ্তরের নয়া নির্দেশিকা অনুযায়ী, রাস্তা অথবা সেতু নির্মাণে কী ধরনের যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হবে–সেটা যেমন টেন্ডারে লেখা থাকবে, তেমনই কতগুলি যন্ত্র রাখতে হবে, সেটাও বলে দেওয়া হবে। যেমন, বিটুমিনাস কংক্রিট, সেমি-ডেন্স বিটুমিনাস কংক্রিট, স্টোন ম্যাট্রিক্স অ্যাসফল্ট, মেকানাইজড ম্যাস্টিক অ্যাসফল্ট, প্লাস্টিক যুক্ত বিটুমিনাস কংক্রিটের রাস্তা তৈরিতে ব্যাচ টাইপ হটমিক্স প্লান্ট থাকা আবশ্যক। যার উৎপাদন ক্ষমতা প্রতি ঘণ্টায় কম করে ১০০-১২০ টন হতে হবে।

Executive Officer : পুর-একজিকিউটিভ অফিসার পদে নয়া মাপকাঠি, প্যানেল
তার সঙ্গেই অবশ্য থাকতে হবে দূষণ নিয়ন্ত্রণ ইউনিট। ছোট ছোট রাস্তার ক্ষেত্রে এক জন ঠিকাদারের পক্ষে হটমিক্স প্লান্ট বানানো সম্ভব না হলে সরকার থেকে একাধিক প্লান্ট বানিয়ে দেওয়া হবে। রাস্তা ও সেতু বানাতে ঠিকাদাররা যে সব যন্ত্রপাতি আনবেন–সে-সব চালু অবস্থায় থাকতে হবে। কোনও বিকল যন্ত্রপাতি রেখে পার পাবেন না ঠিকাদাররা। যন্ত্রপাতি সচল কিনা, সেটা পরীক্ষা করে দেখবেন সরকারি ইঞ্জিনিয়াররা। সেই সব যন্ত্রপাতির প্রকৃত মালিক কে, সেটাও ঠিকাদারকে হলফনামা দিয়ে জানাতে হবে। কারও কাছ থেকে যন্ত্রপাতি ভাড়া নিয়ে এলে তার চুক্তিপত্রও দেখাতে হবে।

Pathashree Project : পথশ্রী প্রকল্পে রাস্তার কাজের দাবিতে জিটি রোড অবরোধ গ্রামবাসীদের, ক্ষমা চাইলেন সভাপতি
নবান্নের এক শীর্ষ কর্তার ব্যাখ্যা, রাজ্য সরকারের অধীনে যত সরকারি বিভাগ রয়েছে, নির্মাণের ক্ষেত্রে তারা সাধারণত পূর্ত দপ্তরের নির্দেশিকা মেনেই চলে। পুরসভাগুলিও সেই নিয়ম অনুসরণ করে। ফলে সেখানেও টেন্ডারে নতুন শর্ত যুক্ত হবে। তবে ঠিকাদার সংস্থাগুলির আশঙ্কা, আধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবহার বাড়লে রাস্তা নির্মাণের খরচ বাড়বে। বড় ঠিকাদারদের ক্ষেত্রে সমস্যা না হলেও ছোট ঠিকাদারদের পক্ষে শর্ত মেনে কাজ করা মুশকিল হবে।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version