সুতপা সেন: তপসিলি উপজাতি ঘোষণার দাবিতে আন্দোলনে নেমেছে কড়ুমিরা। তাদের সেই দাবির সঙ্গে সহমত পোষণ করলেন মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়। বুধবার নবান্নে কুড়মি নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠকে ছিলেন শুভেন্দু মাহাতো, সুনীল মাহাতো ও বিজয় মাহাতো। এছাড়াও দুই তৃণমূল বিধায়ক শান্তিরাম মাহাতো ও সুশান্ত মাহাতো এবং ঝাড়গ্রাম ও পুরুলিয়ার তৃণমূল নেতৃত্ব ছিলেন।
আরও পড়ুন-নবান্নে কুড়মি নেতাদের সঙ্গে বৈঠক, পঞ্চায়েত ভোটের আগে জঙ্গলমহলে কী বার্তা মমতার?
সামনেই পঞ্চায়েত ভোট। তার আগে জঙ্গলমহলে কুড়মিদের ক্ষোভে অনেকটাই প্রলেপ দিতে পারলেন মমতা। আজকের বৈঠকে কুড়মিদের তপসিলি উপজাতি ঘোষণার দাবির সঙ্গে সহমত পোষণ করেছেন মমতা। এনিয়ে কেন্দ্রের কাছে প্রস্তাব পাঠাবে রাজ্য সরকার। কুড়মিদের উন্নয়নের জন্য কুড়মি উন্নয়ন বোর্ড গঠনেরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ওই বৈঠকে। পাশাপাশি জঙ্গলমহলে আদিবাসীদের উন্নয়নে জোর দেবে রাজ্য সরকার।
কুড়মি ও আদিবাসীদের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আজ বৈঠকে বসেন মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়। মুখ্য সচিবের সঙ্গে বৈঠকের পর তাদের সঙ্গে বৈঠক হয় মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে। ওই বৈঠকে প্রথমত দুটো বিষয় উঠে এসেছে। তার মধ্যে একটি হল কুড়মি উন্নয়ন বোর্ড থাকলেও তা বহুদিন ধরেই নিষ্কৃীয় রয়েছে। তা নতুন করে গঠন করা হবে। পাশাপাশি, কুড়মিদের তপসিলি উপজাতির তকমার দাবি নিয়ে মমতা তাদের সঙ্গে একমত। মমতা তাদের জানান, ওই দাবির সঙ্গে রাজ্য সরকার সহমত। বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রের কাছে প্রস্তাব পাঠাবে রাজ্য সরকার।
জঙ্গলমহলরে বেশকিছু এলাকায় কিছু সমস্যা রয়েছে। সেইসব সমস্য়া নিয়েও বৈঠকে কথা হয়। পানীয়, রাস্তা সহ একগুচ্ছ বিষয় মমতার কাছে তুলে ধরেন আদিবাসী নেতারা। মুখ্যমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন ওইসব বিষয়গুলি তাড়াতাড়ি সম্ভব সমাধান করা হবে।
এদিকে, আজ তাদের ঘোষণা মতো আজ খড়গপুরে দিলীপ ঘোষের বাংলোয় গিয়ে বিক্ষোভ দেখাল কুড়মিরা। শুধু তাই নয়, বাংলো ভাঙচুর করেছে। কেন এই ভাঙচুর? গন্ডগোলের সূত্রপাত দিলীপ ঘোষের একটি মন্তব্যকে ঘিরে। কুড়মি নেতাদের দাবি, কুড়মি আন্দোলেন টাকা দিয়ে সাহায্য করেছেন এমনটাই দাবি করেছেন দিলীপ ঘোষ। কুড়মিরা কারও কাছ থেকে কোনও সাহায়্য নেয়নি। দিলীপ ঘোষকে বলতে হবে কাকে তিনি সাহায্য করেছেন। তা না হলে তাঁর বাড়িতে যাবে কুড়মিরা।
ঘোষণা মতো এদিন সকালে খড়গপুরে দিলীপ ঘোষের রেলওয়ে বাংলোর সামনে জমায়েত করেন কুড়মিরা। এরপর গেট ভেঙে ভিতরে ঢুকে পড়েন তাঁরা। শুধু তাই নয়, বাংলোর বাইরে বেশ কিছু জিনিসও ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ। এরপর যখন পুলিস যখন বিক্ষোভকারীদের বাংলোর বাইরে বের করে দেয়, তখন রাস্তা আটকে শুরু হয় বিক্ষোভ।
কুড়মি নেতা অজিত মাহাত বলেন, ‘কুড়মি জাতির কোনও একজন বা দু’জন ব্যক্তি চুরি করতে পারে, ধোকা দিতে পারে। কিন্তু কুড়মি জাতির কথা কেন বলল? যাঁরা করেছে, তার বিরুদ্ধে মুখোশ খুলুক। আমাদের কিছু বলার নেই। কুড়মি জাতি স্বভিমানে আঘাত। আমরা বলছি, প্রকাশ্য়েই ক্ষমা চাইতে হবে’।
এদিকে, এনিয়ে দিলীপ ঘোষ বলেন, ওদের সবার মুখোশ খুলে দেব। এখনও কারও নাম করিনি। ওরা হলেছিল ৫০ হাজার লোক নিয়ে আসব। দুশো লোক এনেছে। এদের সবার ব্যবস্থা করে দেব।