জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা মাধ্যমিকে বসার আগেই নাবালিকার উপর ছোঁড়া হয় অ্যাসিড, যার ফলে যখম হয় তার ডান হাত। তবে এই ঘটনায় মনের জোর হারায়নি ওই পরীক্ষার্থী। ‘রাইটার’ নিয়েই মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসে ওই পরীক্ষার্থী।
বীরভূমের নলহাটি থানা এলাকার তেজহাটি জস্মন্ত হাইস্কুলের ছাত্রী রাজলক্ষ্মী দে। এই বছর সে মাধ্যমিক পরীক্ষা দেয়। বসার জন্য তার প্রস্তুতি চলছিল জোরকদমেই। কিন্তু তার মাঝেই ঘটে যায় চরম বিপত্তি।
সেই ঘটনা নিয়ে নাবালিকা জানায়, “পরীক্ষার আগে আমি যখন বাড়িতেই পড়াশোনা করছিলাম তখন বাড়ির বাইরে থেকে একজন আমাকে ডাকে এবং আমি বাড়ির বাইরে যাই। বাড়ির বাইরে দাঁড়াতেই সেই ছেলেটা আমাকে বলে ‘বন্ধু তোর জন্য একটা সুন্দর গিফট এনেছি’। এরপরেই আমি যখন তার দিকে হাত বাড়িয়ে গিফট টা নিতে যাই তখন একটি কৌটো বের করে সে আমার হাতে অ্যাসিড ছুঁড়ে দেয়। আমার হাত প্রচণ্ড জ্বালা করতে থাকে এবং আমি যন্ত্রনায় ছটফট করতে থাকি। এরপরেই ছেলেটি একটি মোটরসাইকেলে করে অন্য একজনের সঙ্গে পালিয়ে যায়। এবং পরে দেখি ওই ছেলেটি একটি চিঠি ফেলে গেছে বাড়ির দরজার সামনে।”
পুলিশ সূত্রে জানা যায় সেই চিঠিতে লেখা রয়েছে , “তোর উপর হামলা না করলে তুই অনেক দূর চলে যেতিস। সেটা যাতে না হয় তার জন্য তোর উপর হামলা করা হল।” কিন্তু এই ঘটনা দমাতে পারেনি পরীক্ষার্থীর অদম্য ইচ্ছা শক্তিকে।
এই ঘটনার পরও পরীক্ষার্থী জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা দেয় রাইটার নিয়ে। তারই ফলস্বরূপ ৮০% নম্বর নিয়ে মাধ্যমিকে পাস করেছে সে। যদিও রাজলক্ষ্মী জানায়, “প্রাপ্ত নম্বর অনেক কম হয়েছে। এই রকম একটা ঘটনা না ঘটলে ৯০% নম্বর পেতাম আমি।”
তবে প্রাপ্ত নম্বর কম হলেও, তার অদম্য ইচ্ছা শক্তিকে কুর্নিশ জানাচ্ছেন তার পরিবার পরিজন, প্রতিবেশী সহ তার স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারা। সবার বক্তব্য, রাজলক্ষ্মীর লড়াই একটা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।