কন্যা সন্তানের জন্ম দেওয়ায় চরম পরিণতি হল গৃহবধুর। বিয়ের এক বছরের মাথায় ওই গৃহবধূর অপ মৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্ত স্বামী ও শ্বশুরকে গ্রেফতার করল লালগড় থানার পুলিশ। মৃতার বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে রবিবার রাতে লালগড়ের বৈতা অঞ্চলের বালিশিরা গ্রাম থেকে অভিযুক্ত স্বামী অঞ্জন চালক ও তার বাবা অমৃত চালককে গ্রেফতার করা হয়। অভিযুক্ত অঞ্জনের মা চৈতালি অবশ্য পলাতক। মৃত বধূর নাম সবিতা চালক (২০)। সোমবার ঝাড়গ্রাম আদালতে তোলা হলে অঞ্জনকে ৩ দিনের পুলিশ হেফাজত ও তার বাবাকে ১৪দিন জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক।Balurghat News : স্বামীর সঙ্গে সদ্য বিবাহিতা জায়ের পরকীয়া! অভিমানে বাড়ি ছেড়ে ‘চরম প্রতিশোধ’ স্ত্রীর
পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছর এপ্রিল মাস নাগাদ ঝাড়গ্রাম থানার চুবকা অঞ্চলের বেনাডি গ্রামের বাসিন্দা সোনু চালকের সঙ্গে বালিশিরা গ্রামের সবিতার দেখেশুনে বিয়ে হয়। বিয়ের সময় সোনুবাবু সাধ্যমতো দামী সামগ্রী ও যৌতুক দিয়েছিলেন। তবে পাত্রপক্ষ নগদ ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা দাবি করেছিল।

কিন্তু বালি খাদানের শ্রমিকের কাজ করা সোনু বাবুর পক্ষে ওই টাকা দেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে বিয়েতে তিনি খাট, আলমারি, গয়না ও জামাইকে একটি সাইকেল দিয়েছিলেন। বিয়ের পর থেকেই পণের জন্য সবিতার উপর চলত অত্যচার, এমনটাই অভিযোগ। আড়াই মাস আগে সবিতা কন্যা সন্তান প্রসব করার পর অত্যাচারের মাত্রা চরমে ওঠে বলে অভিযোগ মৃতার পরিবারের।

National News : স্বামীকে খুনের পর সারারাত দেহ আগলে! গ্রেফতার স্ত্রী
বাড়িতে ফোন করে অত্যাচারের কথা জানাতেন সবিতা। মেয়ে ও জামাইকে একাধিকবার মিলেমিশে থাকার পরামর্শ দেন তাঁর বাবা। রবিবার দুপুর দেড়টা নাগাদ সবিতা তাঁর মা প্রতিমা চালককে ফোন করে জানিয়েছিল জামাই ষষ্ঠীর দিন তিনি স্বামীকে নিয়ে চলে যাবেন।

সেদিনই সবিতার বাড়ির সদস্যদের কাছে ফোন যায় যে, ঘর থেকে তাঁর মেয়ের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশের তরফে দেহ উদ্ধার করে ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সোনু ও প্রতিমা সন্ধ্যায় পৌঁছয় ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে পৌঁছে তাঁরা জানতে পারেন সবিতার দেহ মর্গে পাঠানো হয়েছে। শ্বশুর বাড়ির লোকেদের হাসপাতাল চত্বরে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তারপরই থানায় অভিযোগ জানানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

Shootout In Malda : পাওনা টাকা নিয়ে গোলমালে গুলি মালদায়
সবিতার মা প্রতিমা চালক বলেন,”বিয়ের সময় ৫০ হাজার টাকা দাবি করেছিল আমরা দিতে পারিনি । তাই মেয়ের উপর মাঝেমধ্যেই তার শ্বশুর ,শ্বাশুড়ি এবং স্বামী অত্যাচার করত। কয়েক মাস আগে মেয়ের কন্যা সন্তান হয়েছে । মেয়ের কেন ছেলে হলো না কন্যা সন্তান হল এই জন্য তা শ্বশুরবাড়ির লোকজন মানসিক ও শারীরিক অত্যাচার করে। আমার মেয়েকে খুন করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।’

ঝাড়গ্রামের এসডিপিও অনিন্দ্য সুন্দর ভট্টাচার্য বলেন, “অভিযোগের ভিত্তিতে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, এখনো পলাতক রয়েছে একজন। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।”



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version