পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছর এপ্রিল মাস নাগাদ ঝাড়গ্রাম থানার চুবকা অঞ্চলের বেনাডি গ্রামের বাসিন্দা সোনু চালকের সঙ্গে বালিশিরা গ্রামের সবিতার দেখেশুনে বিয়ে হয়। বিয়ের সময় সোনুবাবু সাধ্যমতো দামী সামগ্রী ও যৌতুক দিয়েছিলেন। তবে পাত্রপক্ষ নগদ ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা দাবি করেছিল।
কিন্তু বালি খাদানের শ্রমিকের কাজ করা সোনু বাবুর পক্ষে ওই টাকা দেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে বিয়েতে তিনি খাট, আলমারি, গয়না ও জামাইকে একটি সাইকেল দিয়েছিলেন। বিয়ের পর থেকেই পণের জন্য সবিতার উপর চলত অত্যচার, এমনটাই অভিযোগ। আড়াই মাস আগে সবিতা কন্যা সন্তান প্রসব করার পর অত্যাচারের মাত্রা চরমে ওঠে বলে অভিযোগ মৃতার পরিবারের।
বাড়িতে ফোন করে অত্যাচারের কথা জানাতেন সবিতা। মেয়ে ও জামাইকে একাধিকবার মিলেমিশে থাকার পরামর্শ দেন তাঁর বাবা। রবিবার দুপুর দেড়টা নাগাদ সবিতা তাঁর মা প্রতিমা চালককে ফোন করে জানিয়েছিল জামাই ষষ্ঠীর দিন তিনি স্বামীকে নিয়ে চলে যাবেন।
সেদিনই সবিতার বাড়ির সদস্যদের কাছে ফোন যায় যে, ঘর থেকে তাঁর মেয়ের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশের তরফে দেহ উদ্ধার করে ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সোনু ও প্রতিমা সন্ধ্যায় পৌঁছয় ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে পৌঁছে তাঁরা জানতে পারেন সবিতার দেহ মর্গে পাঠানো হয়েছে। শ্বশুর বাড়ির লোকেদের হাসপাতাল চত্বরে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তারপরই থানায় অভিযোগ জানানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সবিতার মা প্রতিমা চালক বলেন,”বিয়ের সময় ৫০ হাজার টাকা দাবি করেছিল আমরা দিতে পারিনি । তাই মেয়ের উপর মাঝেমধ্যেই তার শ্বশুর ,শ্বাশুড়ি এবং স্বামী অত্যাচার করত। কয়েক মাস আগে মেয়ের কন্যা সন্তান হয়েছে । মেয়ের কেন ছেলে হলো না কন্যা সন্তান হল এই জন্য তা শ্বশুরবাড়ির লোকজন মানসিক ও শারীরিক অত্যাচার করে। আমার মেয়েকে খুন করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।’
ঝাড়গ্রামের এসডিপিও অনিন্দ্য সুন্দর ভট্টাচার্য বলেন, “অভিযোগের ভিত্তিতে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, এখনো পলাতক রয়েছে একজন। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।”