অনুপ দাস: তিন ছেলে এক মেয়ে। সবাই বিবাহিত। কিন্তু বৃদ্ধাকে থাকতে হয় মেয়ের বাড়িতে। ছোট ছেলে ও তার বউয়ের অত্যাচারে তাঁকে থাকতে হচ্ছে জামাইয়ের বাড়িতে। বাধ্য হয়ে তাঁকে আদালতের দ্বারস্থ হতে হয়। আদালতের রায়ে শেষপর্যন্ত ছেলে বউকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়ে বৃদ্ধার জিনিসপত্র ঘরে ঢোকাল পুলিস।
আরও পড়ুন-শাহের সফরের প্রাক্কালেই ফের নতুন করে হিংসা ছড়াল মণিপুরে, পুলিসকর্মী সহ নিহত ৫
নদিয়ার তেহট্ট থানার বেতাইয়ের জিতপুরের ওই ঘটনায় গ্রামে হইচই পড়ে গিয়েছে। গ্রামের বৃদ্ধা পুষ্পরানী বালার ৪ সন্তান। তিন ছেলের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। এক মেয়েও বিবাহিত। বৃদ্ধা থাকছিলেন ছোট ছেলে বিদ্যুত্ বালা ও পুত্রবধূ ও নাতির সঙ্গে। অভিযোগ, ছেলে-বউ এতটাই অত্যাচার এতটাই বেড়ে যায় যে বাড়ি ছাড়তে বাধ্য হন। থাকতে শুরু করে মেয়ের বাড়িতে। শেষপর্যন্ত তিনি দ্বারস্থ হন তেহট্ট আদালতের।
গত ১৫ মে আদালতের কড়া নির্দেশ, ছেলে বউকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করে বৃদ্ধাকে ওই ঘরে ঢুকিয়ে দিতে নির্দেশ দেন। আদালতের সেই নির্দেশ মতো পুষ্পারানীর বাড়িতে আসে পুলিস। মহিলা কনস্টেবল এসে বিদ্যুতের বউকে বাড়ি ছাড়তে বলে। ওই মহিলা ঘর ছাড়তে রাজি হননি। তার পরেই দুই মহিলা কনস্টেবল জেরা করে বিদ্যুতের বউকে জোর করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। চাবি দেয় বৃদ্ধার হাতে। সময় লাগে ৪ ঘণ্টা।
ছেলের বিরুদ্ধে আদালতে গেলেন কেন? পুষ্পরানী বলেন, ওর বউ, ছেলে আমার উপরে অত্যাচার করল। ও কিছুই বলল না। আমার চেুলের মুঠি ধরে মারে, কঞ্চি দিয়ে মারতে যায়। এই তো হচ্ছে দুনিয়া।
ঘর খালি হতেই একে একে বৃদ্ধার জিনিসপত্র ঘরে ঢোকানো হয়। ঘরের চাবি হাতে পেয়ে খুশি বৃদ্ধা। এদিকে, অত্য়াচারের কথা অস্বীকার করেছেন ছোট ছেলে বিদ্যুত্। বৃদ্ধার আইনজীবী গোবিন্দ বিশ্বাস বলেন, প্রশাসনের ভূমিকায় আমি খুশি। আমার মক্কেলকে বাড়িতে ফিরিয়ে দিয়েছেন। বাবা-মাকে ভালো বাসুন। অত্যাচার করবেন না। অত্যাচার করলে এমনই পরিণতি হবে। পুষ্পরানীর গোরু, গাছপালা সব বিক্রি করে দিয়েছে ওর ছেলে বিদ্যুত্। ওর স্বামীর টাকা তৈরি হওয়া বাড়ি থেকে ওঁকে নামিয়ে দেওয়া হয়। উনি থাকতে শুরু করেন মেয়ে বাড়িতে। উনি নিরুপায় হয়ে মামলা করেন।