অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখার জন্য প্রায় চার ঘণ্টা আগে পটাশপুরের বাঙ্গুচক মোড়ে পৌঁছে গিয়েছিলেন ৭০ বছরের এই বৃদ্ধ। প্রখর রৌদ্রে খোলা রাস্তার ধারে দাঁড়ানোর সুযোগ ছিল না। অথচ বিনোদবিহারী মাইতি নামে ওই বৃদ্ধ রোদ উপেক্ষা করে ঠায় দাঁড়িয়ে। হাতে গামছা। সেটা নিয়ে ঘন ঘন কপাল, মুখ মুছে প্রিয় নেতার আসার অপেক্ষায় ছিলেন।
বিকাল ৫টার পর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বাঙ্গুচক মোড়ে আসেন। মুহূর্তে বৃদ্ধের সব ক্লান্তি উধাও। চোখে মুখে তারুন্যের উদ্দীপনা। স্লোগানে সুর মিলিয়ে দলের জন্য নিজেকে উজাড় করে দেওয়ার অঙ্গীকারও করলেন। পটাশপুর-১ ব্লকের মথুরা গ্রাম পঞ্চায়েতের বালগোবিন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা বিনোদবিহারী মাইতি। তিন বছর ধরে বার্ধক্য ভাতা পান।
প্রতি মাসে নিয়মিত এক হাজার টাকা অ্যাকাউন্টে ঢোকে। এছাড়াও কৃষকবন্ধু এবং পিএম কিষাণ প্রকল্পে বছরে আরও ১২ হাজার টাকা। এভাবে প্রতি বছর তিনি ২৪ হাজার টাকা সরকারি সহায়তা পান। মঙ্গলবার পটাশপুরের বাঙ্গুচক মোড়ে বিনোদবিহারীবাবু বলেন, “বছরে এই ২৪ হাজার টাকা না পেলে আমি হয়ত আজ পর্যন্ত বেঁচে থাকতাম না।
কারণ, হাইপ্রেশারের জন্য প্রতি মাসে ৮০০ টাকার ওষুধ লাগে। দুই ছেলের মধ্যে দু’জনেই আলাদা থাকে। আমি এবং আমার স্ত্রী চঞ্চলা মাইতি দু’জনে থাকি। আমাদের রুজি রোজগার বলে কিছুই নেই। সরকারি এই সরকারি সাহায্য না পেলে আমি বাঁচতাম না। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আমার পুত্রসম। তাঁকে আশীর্বাদ করার জন্য আমি বাঙ্গুচক মোড়ে এসেছি”।
মঙ্গলবার বালগোবিন্দপুর গ্রামের রাজু দাসের বাইকে চড়ে ৭০ বছরের বিনোদবিহারী মাইতি পটাশপুরের বাঙ্গুচকের সভায় এসেছিলেন। বিনোদবাবু আগে সমাজবাদী পার্টি করতেন। প্রয়াত সমাজবাদী পার্টির নেতা জন্মেঞ্জয় ওঝাকে দেখেই ওই পার্টির সমর্থক ছিলেন তিনি। তারপর ১৯৯৮ সাল থেকে তৃণমূল কংগ্রেস করেন।
তিনি বলেন, “গরিব, খেটে খাওয়া মানুষের স্বার্থে তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের কোনও বিকল্প নেই। আমার মতো হাজার হাজার মানুষ বার্ধক্য ভাতার উপর নির্ভর করে নিজেদের ওষুধপত্র, খাবার, জামাকামড় জোগাড় করেন।
এরকম মানবিক সরকারের প্রতি আজীবন সমর্থন থাকবে”। রাজ্যের সাধারণ মানুষের কথা ভেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত ৭৪ টির মতো প্রকল্প চালু করেছে। সেই প্রকল্পের পরিষেবা পেয়ে অনেকেরই সুখে শান্তিতে দিন কাটছে। যেমনটা বিনোদবিহারী মাইতি।