দেবাশিসবাবু অবসরপ্রাপ্ত রেলকর্মী। ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন তিনি। দেবাশিস বলেন, ‘পিছন দিক থেকে তিন নম্বর বগি সামনে থেকে কুড়ি নম্বর এ-২ এসি বগিতে ছিলাম আমরা। সন্ধে সাতটা নাগাদ এই দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনার আগে শেষবার বালেশ্বর স্টেশনে ট্রেন দাঁড়িয়েছিল। দুর্ঘটনাস্থল বালাসোর থেকে ২৫ কিমি দূরে।হঠাৎ প্রচন্ড শব্দ ঝাঁকুনি দিয়ে ট্রেনের চাকা রেললাইন থেকে নেমে কংক্রিট স্লিপারের উপর দিয়ে যেতে শুরু করে। গোটা ট্রেনের যাত্রীরা তখন আতঙ্কে চিৎকার করতে থাকেন।’
অভিজ্ঞতার কথা বলতে বলতে প্রবীণের মুখে আতঙ্কের ছবিটা স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল। তিনি আরও বলেন, ‘হঠাৎ করেই ট্রেনে আলো নিভে যায়। ট্রেন থামতেই আমি স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে নেমে পড়েছিলাম। তখনই বুঝতে পেরেছি যে অনেক বড় দুর্ঘটনা ঘটে গিয়েছে। কপাল জোরে আমার বেঁচে গিয়েছিলাম।’
বনশ্রী দত্ত বলেন, ‘একটা দুঃস্বপ্নের রাত, ভাবলেই গায়ে কাঁটা দিচ্ছে ।আমি যে বেঁচে আছি সেটাই অবাক লাগছে। সাক্ষাৎ মৃত্যুমুখ থেকে ফিরে আসা । ট্রেনটা তখন ভালোই জোরে ছুট ছিল হঠাৎ একটা বিকট শব্দ তারপর ট্রেনটা কাঁপতে শুরু করে। আর হঠাৎ করেই একদিকে হেলে যেতে শুরু করে। বুঝতে পারি ট্রেনটি বিশাল বড় দুর্ঘটনা ঘটেছে।’
অন্যদিকে করমণ্ডল এক্সপ্রেসে দুর্ঘটনার পর থেকে নিখোঁজ হুগলি হরিপালের যুবক গোপাল হেমব্রম। পরিবার সূত্রে খবর, বাড়তি কিছু উপার্জনের আশায় বাবা মাকে ও স্ত্রীকে বাড়িতে রেখে কেরালায় কাঠের কাজ করার জন্য যাচ্ছিলেন তিনি।
গোপালের বাবা মানু হেমব্রম বলেন, ‘গতকাল রাত সাড়ে নটা নাগাদ জানতে পারি ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটেছে। তারপর থেকে ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাঁর কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। বাড়িতে থেকে চার বন্ধু মিলে বেরিয়ে কেরালা কাঠের কাজে যাচ্ছিল। তিনজনের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হলেও আমার ছেলের কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।’