বৃহস্পতিবার ভোট ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। ইতিমধ্যই মনোনয়ন প্রক্রিয়া ঘিরে ব্যস্ত সব রাজনৈতিক দল। এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে দুর্নীতি যে তৃণমূলের বিরুদ্ধে অন্যতম বড় হাতিয়ার তা বোঝাই যাচ্ছে। গোটা রাজ্যে তৃণমূলের অনেক পঞ্চায়েত সদস্যদের বিরুদ্ধে সরাসরি দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। সেখানে বাঁকুড়াতে এবার এক অন্য ছবি ধরা পড়ল।

শাসকদলের নেতা মানে বিলাসবহুল বাড়ি, একখানা ঝাঁ চকচকে গাড়ি, গলায় কয়েকখানা সোনালি চেন। হ্যাঁ এসবই দেখতে অভ্যস্ত আমজনতা। মানুষের ভোটে জিতে, মানুষেরই প্রতিনিধি হয়ে শেষমেশ আমজনতাকেই ভুলে যান জনপ্রতিনিধিরা। কিন্তু বাঁকুড়ার শাসকদলের নেতা অভয় কালিন্দি সেখানেই সবার থেকে আলাদা।

Trinamool Congress : বুথ কমিটি গঠন ঘিরে মতবিরোধের জের! রায়গঞ্জে অঞ্চল সভাপতিকে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ
পাঁচ বছর ধরে তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতে প্রধানের দায়িত্বে রয়েছেন অভয়। বাঁকুড়া জেলার ওন্দা ব্লকের অন্তর্গত নিকুঞ্জপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বর্তমান পঞ্চায়েত প্রধান তিনিই। কিন্তু তাসত্ত্বে বিলাসিতা ও আড়ম্বর তাঁকে ছুঁতে পারেনি। যেখানে শাসকদলের সামান্য এক বুথ স্তরীয় কর্মীর জীবনযাপন দেখলে চক্ষু চড়কগাছ হয়ে যেতে পারে, সেখানে সম্পূর্ণ উলটো পথের পথিক এই অভয়।

দুই ছেলে, দুই মেয়ে, মা এবং স্ত্রীকে নিয়ে বসবাস এক চিলতে কুঁড়ে ঘরে। তৃণমূলের নেতা হলেও সংসারের নুন আনতে পান্ত ফুরনোর জোগাড়। দু-বছর আগেই বকেয়া ইলেকট্রিক বিল মেটাতে না পারায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে তাঁর বাড়িতে। ইনি শাষক দলের পঞ্চায়েত প্রধান!! ভাবতে অবাক লাগছে না?

Birbhum TMC : বাম-কংগ্রেসের তরফে স্মারকলিপি জমা দেওয়াকে ঘিরে ধুন্ধুমার! মারধরের অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে
শুধু আর্থিক অসঙ্গতিই নয়, ১২ বছর আগে শারীরিক ব্যাধি তাঁর একটা পা কেড়ে নিয়েছে। তাসত্ত্বেও জীবন সংগ্রামে হাতে রাজি নন অভয়। রোজকার মতো এদিন ঝুড়ি তৈরির কাজ সেরে ব্যাগ হাতে অভয় বেরিয়ে পড়লেন স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের উদ্দেশে। বিভিন্ন গ্রামে একশ্রেণির শাসক নেতার বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা। সেখানে অভয়কে নিয়ে অন্য কথা শোনা গেল নিকুঞ্জপুরগ্রামে। প্রধানের কাজে খুশি এলাকার বাসিন্দারা।

Malda Weather : তীব্র গরমে জলের হাহাকার মালদায়! জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভে গ্রামবাসী
এক গ্রামবাসী খোলা কন্ঠে বলে উঠলেন শাসক দলের পঞ্চায়েত প্রধান হলেও তাদের গ্রামের ছেলে অভয় খেটে খাওয়া মানুষ। আপদে-বিপদে সব সময় পাওয়া যায় তাঁকে। অভয় কালিন্দী বলেন, ‘আমি পঞ্চায়েত থেকে কোনও সুযোগ সুবিধা নিইনি। আমি জঙ্গলের মাঝে বসবাস করি। কিন্তু আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, নিজে থেকে পঞ্চায়েতের কোনও সুবিধা নেব না। যদি নিয়ম অনুযায়ী কোনও কিছু পাই, তাহলে কোনও সমস্যা নেই।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version