এই তালিকায় রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের একাধিক বাসিন্দাও। দশকের অন্যতম ভয়ংকর এই রেল দুর্ঘটনায় বাংলার ১০৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। তার মধ্যে অধিকাংশেরই মৃতদেহ রাজ্যে ফেরানো সম্ভব হয়েছে। এ ছাড়াও আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি বহু বাসিন্দা। প্রচুর মানুষের অঙ্গহানি হয়েছে। কেউ কেউ এখনও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত।
ওডিশা প্রশাসন জানাচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গের ৪৫ জন বাসিন্দা ওডিশার কটক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, AIIMS ভুবনেশ্বর সহ একাধিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ ICU-তেও ভর্তি। অনেকের শরীরের অনেকাংশ পুড়ে গিয়েছে। কারও কারও হাত-পা ভেঙে গিয়েছে।
বর্তমানে ওডিশার একাধিক হাসপাতালে ১১১ জন যাত্রী ভর্তি রয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও ২৩ জন ওডিশার বাসিন্দা, ৩২ জন বিহারের এবং সাতজন ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দার চিকিৎসা চলছে হাসপাতাগুলিতে। মধ্য প্রদেশ, তামিলনাড়ু এবং নেপালেরও একজন করে বাসিন্দা ভর্তি রয়েছেন।
কটকের SCB মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের তরফে অ্যাডমিনিস্ট্রেটর অবিনাশ রাউত জানিয়েছেন, ২০ জন দুর্ঘটনাগ্রস্ত যাত্রী এই মুহূর্তে ICU-তে চিকিৎসাধীন। তাঁদের প্রত্যেকেরই কোনও না কোনও অস্ত্রোপচার, প্ল্যাস্টিক সার্জারি হয়েছে। অবিনাশ রাউত আরও বলেন, “যে ২০ জন রোগী ICU-তে ভর্তি রয়েছেন তার মধ্যে ন’জন সেন্ট্রাল ICU এবং আটজন ট্রমা কেয়ার সেন্টারে চিকিৎসাধীন। প্রত্যেকেই বর্তমানে বিপন্মুক্ত। তবে এদের মধ্যে কেবলমাত্র একজনেরই পরিচয় পাওয়া গিয়েছে।” কটকের এই সরকারি মেডিক্যাল কলেজে হাসপাতালে আরও ৬৩ জন যাত্রীর অস্ত্রোপচার হয়েছে বলে জানান অবিশাশ রাউত। এই মুহূর্তে রেল দুর্ঘটনায় আহত যাত্রীদের সর্বচ্চো চিকিৎসা পরিষেবা দিয়ে দ্রুত সুস্থ করে তোলাই একমাত্র লক্ষ্য হাসপাতালের। এমনটাই মন্তব্য তাঁর।
ওডিশা প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, যে ৮৩টি মৃতদেহের কোনও শনাক্তকরণ সম্ভব হয়নি, সেগুলির DNA নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। সেই নমুনাগুলি ইতিমধ্য়েই দিল্লি AIIMS-এ পাঠানো হয়েছে। নবীন পট্টনায়েক সরকারের পক্ষ থেকে চালু করা সরকারি টোল ফ্রি নম্বরে দিনরাত পরিজনদের খোঁজে এখনও ফোন করছেন বহু মানুষ। বালেশ্বর এবং ভুবনেশ্বরের হাসপাতালে ভর্তি রেল দুর্ঘটনায় আহদের চিকিৎসার খরচ বহন করছে নবীন পট্টনায়েকের সরকার। এ ছাড়াও মৃতদেহগুলিকে পরিবারের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য নিখরচায় গাড়িরও বন্দোবস্ত করা হয়েছে।