২ জুন ওডিশার বালেশ্বরে ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে করমণ্ডল। শতাব্দীর অন্যতম বড় ট্রেন দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ২৯১ জন। অসংখ্য মানুষ আহত হন। বাংলার অনেকে অভিশপ্ত ওই ট্রেনে চেপে শালিমার থেকে চেন্নাইয়ের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন। দুর্ঘটনার দিন ট্রেনে থাকা অনেকেই এখনও ফিরে আসতে পারেননি।

ছেলেদের জীবিত ফেরত আসার আশা কার্যত ছেড়েই দিয়েছে সোনারপুর ও ন্যজাটের দুই পরিবার। কিন্তু তাও মনের কোথায় কোনও ক্ষীণ আশা রয়েছে। ছেলেকে ফিরে পাওয়ার জন্য মন্দিরে আকুতি মায়ের। কারও মা আবার অপেক্ষায় যে ছেলে ফিরে আসবে।

Odisha Train Accident : ‘আমাদের ফিরিয়ে দিন…’, রেল দুর্ঘটনায় নিখোঁজ শরিফুলের মৃতদেহ ফিরে পেতে কাতর আর্জি পরিবারের

অক্ষয় মিস্ত্রির আসল বাড়ি জয়নগরের নিমপীঠে৷ বর্তমানে অবশ্য পরিবারের সবাই সোনারপুরের বৈকুন্ঠপুর এলাকায়। অন্যদিকে দীপঙ্কর মন্ডলের বাড়ি উত্তর চব্বিশ পরগনা থানা এলাকার ন্যাজাট এলাকায় ৷ বছর চারেক আগে বৈকুন্ঠপুরে মামার বাড়িতে থেকে পড়াশুনা করার জন্য এসেছিল দীপঙ্কর৷ অক্ষয় ও দীপঙ্করের মধ্যে তৈরি হয় গভীর বন্ধুত্ব।

দুজনেরই পরিবার না চাইলেও পরবারের বাধা উপেক্ষা করেই দুই বন্ধু মিলে কাজের আশায় ভিন্ন রাজ্যে পাড়ি দেওয়ার স্বপ্নে দেখে দুই বন্ধু। ২রা জুন বাড়ি থেকে বেরিয়ে করমন্ডলে চেপে চেন্নাইয়ের উদ্দেশে রওনা দেয় দুই বন্ধু। সেদিনও বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত পরিবারের সঙ্গে কথা হয়েছিল তাঁদের। তারপরই হঠাৎ আসে ট্রেন দুর্ঘটনার খবর৷ এক মুহূর্তে সব ছারখার। বারবার ফোন করলেও রিং হয়ে গিয়েছে ফোনে।

Jnaneswari Express Accident Case: জ্ঞানেশ্বরী দুর্ঘটনার ১৩ বছর পার…আজও মেয়েকে খুঁজছেন হাওড়ার রাজেশ
বেশ কয়েকদিন পরও অক্ষয় ও দীপঙ্করের কোনও খোঁজ না মেলায় সোনার গয়না বন্ধক রেখে ও টাকা ধার করে দুর্ঘটনাস্থলে যায় দু’জনের পরিবার। এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতাল, লাশঘর ঘুরে কোথাও কোনও হদিশ মেলেনি দুই বন্ধুর। দু’জনের পরিবার মেনে নিয়েছে, যে তাঁদের ছেলেরা আর বেঁচে নেই।

ওডিশা সরকারের নির্দেশে দুই পরিবারের সদস্য গিয়ে ডিএনএ পরীক্ষা করিয়ে এসেছে। যদিও মর্গে থাকা কোনও মৃতদেহের সঙ্গে ডিএনএ নমুনা মিল খায়নি। মৃত হলেও দুই বন্ধুকে শেষবারের মতো বাড়ি ফিরিয়ে আনতে চান তাঁদের পরিবারের সদস্যরা।

Coromandel Express Accident : মিরাকল! মাথায় গুরুতর চোট, মৃতদের ভিড়ে ‘নিখোঁজ’ ছেলেকে ফিরে পেলেন বাবা
দীপঙ্করের বাবা রঞ্জিত মণ্ডল বলেন, ‘তিনবার গিয়েও আমি আমার ছেলের কোনও খোঁজ পাইনি। ডিএনএ পরীক্ষার আগে দেওয়া হবে না বলেই জানিয়েছে সেখানকার প্রশাসন। একটি দেহ আমার ছেলের বলে চিনতে পেরেছি, কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। এখন জানি না কী হবে।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version