এই সময়: ট্রামওয়েজ়ের কোনও জমি আর বিক্রি করা যাবে না। বুধবার এই নির্দেশ জারি করল হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই নির্দেশ মানতে হবে রাজ্যকে। ঐতিহাসিক শহরে ট্রাম যাতে ইতিহাসে পরিণত না হয়, সেই জন্য পরিবেশবান্ধব যানকে বাঁচাতে কমিটি গড়ার নির্দেশ দিয়েছে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি অজয় কুমার গুপ্তার ডিভিশন বেঞ্চ। হেরিটেজ রক্ষার দায় সরকারের রয়েছে বলে মত আদালতের।

ক্যালকাটা ট্রাম কোম্পানি (সিটিসি)-র জমি নিয়ে তথ্যের অধিকার আইনে বেশ কিছু তথ্য জানতে চেয়েছিলেন সুলগ্না মুখোপাধ্যায় নামে এক মহিলা। তাতে তিনি যে তথ্য সিটিসি-র কাছ থেকে পেয়েছিলেন, তার ভিত্তিতেই মামলা করেছিলেন। এদিন সেই মামলার শুনানি ছিল হাইকোর্টে।

Panchayat Election 2023 : ২২ কোম্পানি যথেষ্ট নয়: কলকাতা হাইকোর্ট
আরটিআই-এর জবাবে ওই মহিলা জানতে পারেন, ট্রামওয়েজ়ের জমি বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। ট্রাম রুটের দৈর্ঘ্য ১১৬ কিলোমিটার থেকে কমে ৩৩ কিলোমিটারে এসে দাঁড়িয়েছে। এদিনের শুনানিতে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, আদালত পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ট্রাম কোম্পানির জমি বা সম্পত্তি বিক্রি করা যাবে না।

সরকারি কাজ বা সাধারণ মানুষের কোনও কাজে লাগবে না, এটা নিশ্চিত হওয়ার পরই সরকারি জমি বিক্রি করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি। ট্রাম রক্ষায় রাজ্যকে নতুন কমিটি গড়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। সরকারি আধিকারিক, বিশেষজ্ঞ ও মামলাকারীর প্রতিনিধিদের নিয়ে কমিটি গড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর আগে যে সব জমি বিক্রি হয়েছে, তার টাকা কী কাজে লেগেছে, তা রিপোর্ট আকারে রাজ্যকে জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

Panchayat Election 2023: রাজ্য জুড়ে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে পঞ্চায়েত ভোট, নির্দেশ হাইকোর্টের
‘দুর্গাপুজো’র সঙ্গেও এদিন ট্রামের তুলনা করেন প্রধান বিচারপতি শিবজ্ঞানম। তিনি বলেন, “হেরিটেজ রক্ষার দায়িত্ব সরকারের। দুর্গাপুজো ইউনেস্কোর তরফ থেকে হেরিটেজ তকমা পাওয়ায় রাজ্যের মানুষ যেমন গর্বিত, ট্রাম মসৃণভাবে, আধুনিকতার সঙ্গে চললেও মানুষ গর্ববোধ করবেন।” ট্রামওয়েজ়ের জমি যখন বেসরকারি সংস্থার কাছে বিক্রি করা হয়েছিল, তখন কেউ কেন প্রতিবাদ করেননি, সেই প্রশ্নও তুলেছেন প্রধান বিচারপতি।

মামলাকারী জানিয়েছেন, আগে ট্রাম প্রায় ১১৬ কিমি পথ চলত, এখন সেটা কমে হয়েছে প্রায় ৩৩ কিমি। আগে ২০টি রুটে ট্রাম চলত, এখন তা চলে মাত্র ৩টি রুট। শহরে অবস্থিত ৬টি ট্রাম ডিপোর মধ্যে মাত্র ২টি চালু রয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। মামলাকারী আরও জানান, বেলগাছিয়া ও টালিগঞ্জের ট্রামডিপো বেসরকারি সংস্থার কাছে বিক্রি করা হয়েছে, সেখানে নির্মাণকাজও শুরু হয়েছে গিয়েছে। সব শুনে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ বলে মন্তব্য করেন প্রধান বিচারপতি।

Calcutta High Court : হাইকোর্টে এবার প্রশ্নের মুখে ভিসি সার্চ কমিটি’র অর্ডিন্যান্স
প্রধান বিচারপতির পরামর্শ, বর্তমানে ৮টি বাতানুকুল ট্রাম চালু আছে, সেটা বাড়িয়ে ২০টি করা যেতে পারে। বাড়ানো যেতে পারে ভাড়াও। বিশেষ পরিষেবা চালু করা যেতে পারে বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, “ট্রাম পর্যটকদের কাছে আকর্ষণের। সদর্থক পদক্ষেপ করলে আরও পর্যটক আসবে।”



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version