শুক্রবার বাঁকুড়ার ঝাঁটিপাহাড়ি বাসস্ট্যাণ্ডে দলের এক নির্বাচনী সভায় বক্তব্য রাখছিলেন সায়ন্তিকা। তখনই চিৎকার করে কালিয়াগঞ্জের ঘটনায় যুক্তদের শাস্তির দাবি জানিয়ে সরব হন মহিলা। সেখানে জড়ো হওয়া তৃণমূল নেতাকর্মীরা এই ঘটনায় হকচকিয়ে গিয়েছিলেন।
মহিলার দাবি শুনে সভামঞ্চ থেকে সায়ন্তিকাকে বলতে শোনা যায়, ‘মহামান্য আদালত বিচার করবে। যে দলের লোকই জড়িত থাক, তাঁরা শাস্তি পাবে।’ পরবর্তীকালে জানা যায়, ‘রাজবংশী’ ওই মহিলা কালিয়াগঞ্জের নাবালিকা মৃত্যুর তদন্ত চান। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে তদন্তের দাবি পৌঁছে দিতেই তিনি সায়ন্তিকার কাছে এই আবেদন জানিয়েছেন। সভাস্থলে এই ঘটনা নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই অস্বস্ততিতে তৃণমূল।
সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সংঘমিত্রা অধিকারী নামে ওই মহিলা নিজেকে কোচবিহারের ‘রাজবংশী’ পরিবারের সদস্যা দাবি করেন। তিনি বলেন, ‘রাজবংশী আবেগ থেকে আমি এই কথা বলছি। কালিয়াগঞ্জের নাবালিকাকে নৃশংসভাবে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। টিএমসির চ্যালাচামুণ্ডাদের কাছে বলে কোনও লাভ নেই। তাই সায়ন্তিকার মাধ্যমে আমার বার্তা ‘দিদি’র কাছে পৌঁছে দিতে চাই। তৃণমূলের প্রতি রাজবংশী ও অন্যান্য মানুষের ফের আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে। সেই কারণে কালিয়াগঞ্জের ঘটনায় অভিযুক্তদের শাস্তি চাই। সায়ন্তিকাকে কাছে পেয়ে আমি সেই সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইনি। ধর্ষণকারীদের শাস্তির দাবি করছি।’
পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সায়ন্তিকা বলেন. ‘রাজবংশী হওয়া না হওয়া গুরুত্বপূর্ণ নয়। মানুষ পরিচয়ই আমাদের সবার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। ন্যায়ের বিচার মহামান্য আদালত করবে, আমরা বলার কেউ নই। অন্যায়কে আমরা কেউ সমর্থন করি না। যে অন্যায় করবে তাঁকে শাস্তি পেতেই হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অন্যায়কে প্রশয় দেয় না।’
কালিয়াগঞ্জের ঘটনা নিয়ে উত্তাল হয় রাজ্য রাজনীতি। নাবলিকাকে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগে দফায় দফায় উত্তেজনা ছড়ায় কালিয়াগঞ্জে। থানাতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া ও পুলিশকে মারধরের অভিযোগ ওঠে উত্তেজিত জনতার বিরুদ্ধে। কালিয়াগঞ্জের ঘটনায় সিট তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। আদালতের তরফে সিট গঠন করে দেওয়া হয়েছে। তদন্ত কোনদিকে যায়, সেটাই দেখার।