জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: চলতি বছর গত ১৫ ফেব্রুয়ারির ঘটনা। ক্রিকেটার পৃথ্বী শাহ (Prithvi Shaw) ও সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার স্বপ্না গিল (Sapna Gill) ছিলেন শিরোনামে। স্বপ্নার অভিযোগ ছিল যে, মুম্বইয়ের এক পাবে পৃথ্বী নাকি তাঁর গোপনাঙ্গে হাত দিয়েছিলেন এবং শ্লীলতাহানি করেছেন। তিনদিন পুলিশ হেফাজতে থাকার পর ভারতীয় ক্রিকেটারের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ এনেছিলেন ভোজপুরী অভিনেত্রী। তিনদিন পুলিশ হেফাজতে থাকার পর ভারতীয় পৃথ্বীর বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির মামলাও করেছিলেন স্বপ্না। এরপরেই তিনি সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে একাধিক চাঞ্চল্যকর অভিযোগ আনতেই থাকেন। সোমবার মুম্বই পুলিসের এক আধিকারিক আন্ধেরি নগর দায়রা আদালতে হাজির হয়েছিলেন। সেখানে গিয়ে জানিয়ে দেন যে, পৃথ্বীর বিরুদ্ধে আনা স্বপ্নার অভিযোগ মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন।
প্রসঙ্গত, মুম্বই বিমানবন্দরের সামনে সেলফি তোলা নিয়ে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েছিলেন পৃথ্বী-স্বপ্না। তারপর থেকেই একে অপরের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ এনেছিলেন। যদিও মুম্বই বিমানবন্দর পুলিস স্বপ্নার অভিযোগে কোনও এফআইআর দায়ের করেনি পৃথ্বীর বিরুদ্ধে। এই বিষয়টি উল্লেখ করেই স্বপ্না আন্ধেরি নগর দায়রা আদালতে হাজির হয়েছিলেন তাঁর আইনজীবী আলি কাসিফ খানের সঙ্গে। এরপর আদালত মুম্বই পুলিসকে নির্দেশ দেয়, এই বিষয়ে রিপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য়। পুলিস রিপোর্ট দাখিল করার পর, আলি কাসিফ খানে আদালতকে অনুরোধ করেন, তাঁকে যেন স্বপ্নার বন্ধুর ফোনে রেকর্ড করা ঝামেলার ভিডিয়ো ফুটেজ পেশ করার অনুমতি দেওয়ার জন্য। ভিডিয়োটি সোস্যাল মিডিয়ায়, তার আগেই ভাইরাল হয়ে যান। পাবের বাইরে ঘটে যাওয়া ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজও দেখতে চেয়ে অনুরোধ করেন। এরপর আদালত পুলিসকে নির্দেশ দেয় যে, পুরো ঘটনার ফুটেজই জমা দিতে হবে। আদালত মামলার শুনানি ২৮ জুন পর্যন্ত মুলতবি করে দেয়।
স্বপ্না আদালতে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৫৪ ও ৫০৯ ধারায় অশালীন কাজের জন্য, এফআইআর নথিভুক্ত করার অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। পাশাপাশি ৩২৪ ধারাতেও অভিযোগ এনেছিলেন স্বপ্না। যে ধারায় ইচ্ছাকৃত ভাবে বিপজ্জনক অস্ত্র দিয়ে আঘাত করার কথা বলা হয়েছে। পৃথ্বী এবং তাঁর বন্ধু আশিস যাদবের বিরুদ্ধে স্বপ্নাকে ব্যাট দিয়ে আক্রমণ করার কথা উল্লেখ করা হয়। পুলিস সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে কোর্টকে জানায় যে, স্বপ্না ও তাঁর বন্ধু শোভিত ঠাকুর মদ্যপ হয়ে পাবে নাচছিলেন। ঠাকুর ঘটনার ভিডিয়ো রেকর্ড করতে চেয়েছিলেন। তখন পৃথ্বী তাঁকে থামিয়ে ছিলেন। পুলিস আদালতকে জানায় যে, কোনও ভিডিয়ো ফুটেজেই এটা প্রমাণিত হচ্ছে না যে, পৃথ্বী শ্লীলতাহানি করেছে স্বপ্নার। পুলিস ঘটনার সময়ে পাবে থাকা প্রত্যক্ষদর্শীদের যে বয়ান নিয়েছে, সেখানেও কেউ বলেননি যে, পৃথ্বী হেনস্তা করেছেন স্বপ্নার। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ফুটেজে দেখা গিয়েছে যে, বেসবল ব্যাট দিয়ে স্বপ্না পৃথ্বীর গাড়ির উইন্ডশিল্ড ভেঙে দিয়েছেন। সেই ভিডিয়োটি আবার পুলিস এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের থেকে নিয়ে খতিয়ে দেখে। এখানেই শেষ নয় পুলিস সিআইএসএফ আধিকারিকদেরও বয়ান নিয়েছে, তাঁরাও জানান যে, পৃথ্বীর কোনও দোষই ছিল না। এখন বোঝাই যাচ্ছে স্বপ্না প্রচারের আলোয় আসার জন্যই পৃথ্বীকে ফাঁসানোর চেষ্টা করেছিলেন।