উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে জয়ী হয়ে রায়গঞ্জ ব্লকের বিন্দোল গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের প্রধান হন মনসুর আলির স্ত্রী লায়লা খাতুন। দীর্ঘদিন ধরেই গ্রামীণ রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত মনসুর। প্রথমে পা রেখে কংগ্রেসের টিকিটে গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য হন তিনি।
পরে তৃণমূলে যোগ দিয়ে উপপ্রধানও হন তিনি। অভিযোগ, গত নির্বাচনে তার স্ত্রী প্রধান হলেও আদতে বকলমে তিনি গোটা পঞ্চায়েতই সামলাতেন নিজের হাতে। কে কোন টেন্ডার পাবে তা ঠিক করতেন তিনি। ফলে অল্পদিনের মধ্যে তাঁর বিরুদ্ধে গ্রাম পঞ্চায়েতের বিভিন্ন খাতে আসা টাকা নয়ছয় ও আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে।
দুর্নীতিতে নাম জড়ায় তার স্ত্রী লায়লা খাতুনেরও। ঘটনায় তাঁদের শাস্তির দাবিতে তীব্র আন্দোলনে নামেন ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা। কিন্তু কোনও তদন্ত বা শাস্তি কিছুই হয়নি তাদের। সে কারণে এবারে আসন্ন নির্বাচনে তৃণমূল মনসুর আলিকে টিকিট দেয়নি। ফলে টিকিট না পেয়ে তিনি তৃণমূল ছেড়ে কংগ্রেসের যোগদান করেন।
সহজেই মেলে টিকিটও৷ এরপরই হাওয়া বদলাতে শুরু করে এলাকায়। বৃহস্পতিবার তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন আর্থিক তছরূপের অভিযোগে পোস্টার পড়ে এলাকায়। এলাকাবাসীদের দাবি যে মনসুর আলির বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতি ও কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে সেই মনসুর আবার ক্ষমতায় আসুক তা কেউ চায় না।
রশিদুল হক নামে এক গ্রামবাসী বলেন, ‘মনসুরের বিরুদ্ধে সরকারি ঘর প্রকল্পের টাকা থেকে শুরু করে ১০০ দিনের কাজের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। তাই গ্রামের মানুষ ওকে প্রত্যাখান করেছেন।’ মমতাজ আলি নামে অপর এক গ্রামবাসী জানিয়েছেন, ‘অনেক গরিব মানুষের টাকা মনসুর আত্মসাৎ করেছেন। তাছাড়াও পঞ্চায়েতের প্রচুর টাকা নয়ছয় করেছে। এই পোস্টারগুলো গ্রামের মানুষই লাগিয়েছেন।’
অপরদিকে এই বিষয়ে মনসুর আলি বলেন, ‘আমি যখন তৃণমূলে ছিলাম তখন কেন পোস্টার দেয়নি? কংগ্রেসে আসার পরে আমার ভাবমূর্তিকে নষ্ট করার চেষ্টা চালাচ্ছে তৃণমূল। আমার এলাকায় সাতটি পাড়ার মধ্যে একটিতেই এই ঘটনা ঘটেছে। তৃণমূল দেখছে ওদের পায়ের নিচে মাটি নেই। নির্বাচনে ওরা চার নম্বরে থাকবে। তাই এরা নোংরা রাজনীতি করে চলেছে, যার কোনও ভিত্তি নেই। যারা পোস্টার দিয়েছে তারা নিজেদের নামও দেয়নি। আমার নিট অ্যান্ড ক্লিন ইমেজকে নষ্ট করার জন্য এগুলো করে চলেছে। আমি আইনানুগ ব্যবস্থা নেব এবং মানহানির মামলা করব।’