গত বছর রাজ্যের পুরসভা ও পুরনিগম নির্বাচনে একমাত্র নদিয়ার তাহেরপুর সাফল্য এসেছিল বামেদের। বিপুল সবুজ ঝড়ের মাঝে একমাত্র লাল পতাকা উড়েছিল তাহেরপুরে। পুরসভার মোট ১৩টি আসনের মধ্যে ৮টি আসনে জয় পেয়েছিল সিপিএম। ৫টি আসন দখল করেছিল শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। সেই একটি পুরসভা দখলই কিছুটা হলেও অক্সিজেন দিয়েছিল বামেদের। কিন্তু পঞ্চায়তে নির্বাচনে কার্যত শূন্য হাতেই ফিরতে হল তাহেরপুরের কমরেডদের।

পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পর যে পরিসংখ্যান পাওয়া গিয়েছে সেই অনুযায়ী, তাহেরপুর থানা এলাকার অন্তর্গত বাদকুল্লা ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত গিয়েছে তৃণমূলের দখলে। বারাসাত গ্রাম পঞ্চায়েতও গিয়েছে তৃণমূলের ঝুলিতে। আর খিসমা গ্রাম পঞ্চায়েতের দখলও নিয়েছে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। পাশাপাশি কালীনারায়নপুর গ্রাম পঞ্চায়েত ও বাদকুল্লা ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত রয়েছে ত্রিশঙ্কু অবস্থায়। অর্থাৎ এই দু’টিতে কারা বোর্ড গড়বে তা এখনও পর্যন্ত নিশ্চিত নয়। এবার আসা যাক পঞ্চায়েত সমিতির কথায়। এলাকায় ২টি পঞ্চায়েত সমিতি। সেগুলি হল হাঁসখালি পঞ্চায়েত সমিতি ও রানাঘাট ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতি। সেই দু’টিই গিয়েছে তৃণমূলের দখলে। আর জেলা পরিষদের ৩টি আসনে মধ্যে ২টি গিয়েছে বিজেপির দখলে। ১টি-তে জয় পেয়েছ তৃণমূল।

Hooghly Panchayat Election: লালে লাল পাণ্ডুয়ার জামনা, হুগলির সবুজ ঝড়ের মাঝে CPIM-এর চমক
এখানেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, গতবছরের পুরভোটে যে তাহেরপুর গোটা রাজ্যের মধ্যে একমাত্র লালঝান্ডাকে টিকিয়ে রাখতে পেরেছিল, সেখানে এবারে এমন অবস্থা কেন বামেদের? এই প্রসঙ্গে সিপিআইএম তথা তাহেরপুর পুরসভার চেয়ারম্যান উত্তমানন্দ দাস বলেন, ‘রাজ্যজুড়ে নির্বাচনের নামে প্রহসন হয়েছে। সকলেই দেখেছে কী হয়েছে! অবাধ নির্বাচন হলে ফলাফল অন্য হতে পারত।’

Kurmi News: ঝাড়গ্রামে বিজেপিকে মুছে মাথা তুলল কুড়মিরা
পুরভোটে কোন ফর্মুলা এসেছিল সাফল্য?
২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যে একটিও আসন পায়নি বামেরা। কিন্তু তারপর বছর ঘুরতে না ঘুরতেই তাহেরপুরে ফল রীতিমতো তাক লাগিয়ে দিয়েছিল। প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল, ঠিক কোন ফর্মুলায় এল সাফল্য? সেক্ষেত্রে রাজনৈতিকমহলের একাংশের পর্যবেক্ষণ ছিল, মূলত নতুন প্রজন্মের ওপরে ভরসা রাখার কারণেই এসেছিল সাফল্য। এছাড়াও ওই পুরসভা এলাকার প্রতিটি ওয়ার্ডেই কাজ করেছিলেন বাম নেতা কর্মীরা। পাশাপাশি সংগঠনকে মজবুত করতে জনসংযোগেও দেওয়া হয়েছিল জোর। এছাড়া প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রেও বেশকিছু বিষয় দেখে টিকিট দেওয়া হয়েছিল। ফলে আস্থা রেখেছিলেন মানুষ। তাহলে কি এবার সেই ফর্মুলা মেনে চলা হয়নি? ফলাফল দেখে খুব স্বাভাবিকভাবেই উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version