পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন পর্ব থেকে শুরু করে নির্বাচনের দিন রাজ্যজুড়ে তুমুল সন্ত্রাসের সাক্ষী ছিল বঙ্গবাসী। সবথেকে বেশি অভিযোগ উঠেছিল শাসকদল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ভোটের পর একাধিক জেলায় বিরোধীদলের জয়ী প্রার্থীকে দলে নিয়ে আসার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। কিন্তু বর্ধমান জেলায় ধরা পড়ছে এক অন্য ছবি। মনোনয়ন পর্ব থেকে লড়াকু মেজাজ নিয়ে কংগ্রেসের হয়ে ভোটে জিতেছেন মিনতি মাণ্ডি। তাঁকে ঘিরে গোটা জেলাজুড়ে এখন তুমুল চর্চা। ১৮ টি আসনে জিতেও দোলাচলে শাসক তৃণমূল।

Panchayat Election Result : জিতেও শান্তি নেই, হাইজ্যাক রুখতে ‘সেফ হাউসে’ আশ্রয়
২০১৩ সালে রায়নার নাড়ুগ্রাম পঞ্চায়েতের কুলিয়া গ্রাম থেকে কংগ্রেসের হয়ে জিতেছিলেন মিনতি। শাসকের সন্ত্রাসের কারণে দীর্ঘদিন ধরে তাঁকে বাড়ি ছাড়া থাকতে হয় বলে অভিযোগ। তৃণমূলের দাপটে ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে রায়না ১ ব্লকের বেশিরভাগ পঞ্চায়েতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়নি। কিন্তু ২০২৩-র পঞ্চায়েত ভোটে দাঁড়িয়ে ফের বাজিমাত মিনতির।

নাড়ুগ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান পদটি তফশিলি উপজাতি মহিলাদের জন্যে সংরক্ষিত। ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, নাড়ুগ্রাম পঞ্চায়েতের ২২টি আসনের মধ্যে ১৮টি-তে তৃণমূল জিতেছে। সিপিএম ৩ টি ও কংগ্রেস ১ টি আসনে জিতেছে। ঘটনাচক্রে, সংরক্ষিত আসনেই কংগ্রেস জিতেছে। ওই পঞ্চায়েতের একমাত্র সংরক্ষিত আসন থেকে জিতেছেন মিনতি।

CPIM Congress Alliance : কংগ্রেস আর বামের জোট কিছু এগোল শূন্য থেকে
সংরক্ষণের কারণে প্রধান পদে তাঁর শপথ প্রায় পাকা। সেই কারণে তৃণমূল তাঁকে দলে টানার জন্যে নানা ভাবে ‘হুমকি’ দিচ্ছে বলে অভিযোগ। কংগ্রেসের জয়ী প্রার্থীর দাবি, জয়ী হওয়ার পরও তিনি শান্তিতে থাকতে পারছেন না। তৃণমূলের হুমকির কারণে পরিবারের সদস্য ও স্থানীয় কংগ্রেস কর্মী সমর্থকরা মিনতির বাড়ি পাহার দিচ্ছেন বলে জানা গিয়েছে। যদিও মিনতির অভিযোগকে গুরুত্ব দিতে নারাজ শাসকদল।

Panchayat Election 2023: ‘এই জয় চাই না’, ভোট হিংসার প্রতিবাদে সার্টিফিকেট নিতে নারাজ তৃণমূল প্রার্থী
মিনতি বলেন, ‘মনোনয়ন জমা দেওয়ার পর থেকেই অশান্তি শুরু করে তৃণমূল। ভোট গণনার দিন আমাকে হেনস্থা করা হয়। কিন্তু গণনাকেন্দ্র থেকে বের করে দিতে পারেনি। জয়ের শংসাপত্র নিয়েই বেরিয়েছি। কিন্তু জিতেও শান্তিতে থাকতে পারছি না। সংরক্ষিত আসনে আমার প্রধান হওয়া নিশ্চিত জানার পর থেকে ফের নানাভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। ভয়ের পরিবেশ তৈরি করা হচ্ছে। একা বাড়ি থেকে বাইরে বের হতে পারছি না।’

রায়না ১ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি বামদেব মণ্ডল বলেন, ‘নিরপেক্ষ গণনা হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেস জয়ী হয়েছে। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী প্রধান হলে আমাদের আপত্তি কেন থাকবে। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে চালাতে হবে। কংগ্রেসে থাকার জন্য দরকার হলে আমরা ওঁকে পাহারা দেব। কংগ্রেসের সদস্য অকারণে ভয় পাচ্ছেন। আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version