চিরঞ্জিতের ‘বেদের মেয়ে জ্যোৎস্না’, জিতের ‘সাথী’ দেখতে ভিড় উপচে পড়েছিল। রাত থেকে লোকে ইট পেতে লাইন দিয়েছিল। হাউজ়ফুল বোর্ড যে হলের সামনে দিনের পর দিন লেগে থাকত, সেখানে পরে মাছি তাড়ানোরও লোক পাওয়া যেত না। কুড়ি টাকার টিকিট দুশো-আড়াইশোয় বিকিয়েছে। ভিড় সামাল দিতে ও ব্ল্যাকারদের রাশ টানতে বারাসত থানার পুলিশ ডাকতে হতো হল কর্তৃপক্ষকে।
পরে সে সবই ইতিহাস হয়ে যায়। দর্শক সংখ্যা কমতে কমতে একেবারে তলানিতে এসে ঠেকে। কর্মীদের বেতন, বিদ্যুতের খরচ, রক্ষণাবেক্ষণ সামলিয়ে আর পেরে উঠছিলেন না মালিক। তাই বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে নেন। হল বন্ধ হয়ে যাচ্ছে শুনে শেষ দিনে সিনেমা দেখতে এসেছিলেন বারাসতেরই আল্পনা সাধুখাঁ। তিনি বলেন, ‘এ দিনও হাতেগোনা কয়েকজন এসেছেন। ক্ষতি সামাল দিতে না পেরেই মালিক বন্ধ করে দিতে চাইছেন। কিন্তু সরমা হল নিয়ে আমাদের অনেক স্মৃতি।’
বারাসতের বিধায়ক চিরঞ্জিত বলেন, ‘আমিও বিষয়টি জেনেছি। সব সিনেমা হলেরই এক অবস্থা। ব্যবসা হচ্ছে না। আমার বহু সিনেমা সরমা হলে চলেছে। খুব রমরমিয়ে চলেছে। এখন তো সব ওটিটি প্ল্যাটফর্মেই ছবি হচ্ছে। ওটিটি ছাড়া রাস্তা নেই। কমতে কমতে সিনেমা হলের সংখ্যা ৩৯-এ এসে ঠেকল।’ ইমপার সহ সভাপতি সুভাষ সেন বলেন, ‘খুবই বেদনাদায়ক। সিঙ্গল স্ক্রিনের সিনেমা হলকে বাঁচানো প্রায় অসম্ভব। নতুন প্রজন্ম মাল্টিপ্লেক্স ছাড়া সিনেমা দেখার কথা চিন্তাই করতে পারে না। আসলে বিনোদনের এত বিকল্প সামনে এসে গিয়েছে, যে সিনেমা হল থেকে লোকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে।’