মৌমিতা চক্রবর্তী: কলকাতায় আচমকাই চলে এলেন কংগ্রেস সমর্থিত ২ নির্দল কাউন্সিলর। উঠল দলত্যাগের জল্পনা। পুরুলিয়ার ঝালদা থেকে ছুটে এলেন কংগ্রেস নেতা নেপাল মাহাত। কংগ্রেসের আশঙ্কা দল বদল করানোর জন্যই নির্দল কাউন্সিলার শীলা চট্টোপাধ্যায়ও রঞ্জন কর্মকারকে কলকাতায় এনেছে তৃণমূল কংগ্রেস। সল্টলেকের এক গেস্ট হাউসে গিয়ে তাঁদের ধরলেন নেপাল মাহাতো ও কৌস্তভ বাগচী।

আরও পড়ুন-পুজোর আগেই এবার দুয়ারে সরকার, মমতার ঘোষণা মতোই মিলবে এই প্রকল্পের সুবিধা!

পুরুলিয়ার ঝালদা পুরসভায় কংগ্রেস ও তৃণমূল উভয়েরই কাউন্সিলরের সংখ্য়া ৫। ফলে দুই নির্দল কাউন্সিলরের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ওই দুই কাউন্সিলরের সমর্থনেই পুরসভায় বোর্ড গঠন করে কংগ্রেস। পরে রঞ্জন কর্মকার কংগ্রেসে যোগ দেন। কংগ্রেসের অভিযোগ ছিল ওই দুই কাউন্সিলরকে দলে যোগ দেওয়াতেই কলকাতায় এনেছে তৃণমূল কংগ্রেস।

এনিয়ে কংগ্রসে নেতা কৌস্তুভ বাগচী বলেন, একটা ভুল বোঝাবুঝির জায়গা তৈরি করে দলত্যাগ করানোর একটা চেষ্টা হয়েছিল যাতে ঝালদা পুরসভাকে শাসক দলের কব্জায় আনা যায়। সেখানে আমাদের ভুল বোঝাবুঝি মিটে গিয়েছে। সকালে নেপালবাবু খবর পাওয়ার পর যা ব্যবস্থা নেওয়ার তা নিয়েছেন। ঝালদা পুরসভা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ঝামেলা চলছিল। এনিয়ে মামলাও হয়েছে। এখনও শীলা চট্টোপাধ্যায় পুর চেয়ারম্যান। নভেম্বর মাস পর্যন্ত তিনি চেয়ারম্যান থাকবেন। আদালতের সেই নির্দেশ রয়েছে। বোর্ড ভেঙে দেওয়ার একটা একটা অসাধু চেষ্টা হয়েছিল। তাতে জল ঢালা গিয়েছে। পুরুলিয়া থেকে এসে নেপালবাবু গোটা বিষয়টি সামাল দেন। ঝালদায় কংগ্রেসের বোর্ড থাকছে।

অন্যদিকে, এনিয়ে কংগ্রেস নেতা নেপাল মাহাতো বলেন, এই বোর্ডটা যেদিন থেকে হয়েছে সেদিন থেকে শাসকদলের ঘুম নেই। গত ৬ মাস আমাদের বোর্ড চলছে। শুনলে অবাক হবেন, যতরকম ফান্ড রয়েছে তা কিছুই এই বোর্ডকে দেওয়া হয়নি। ওখানে কিছু লোক রয়েছে যারা বলছে তোমারা যদি তৃণমূল করো তাহলে কিছু হবে। তা না হলে কিছুই হবে না। এরকম একটা পরিস্থিতি অনেকদিন ধরেই তৈরি করা হচ্ছিল। সেই জন্যই হয়তো ওদের ডাকা হয়েছিল। খবর পেয়ে আমরা এখানে আসি। এখন সবকিছু মিটে গিয়েছে। তারা বহাল তবিয়তেই আমাদের সঙ্গে রয়েছেন।

নোপাল মাহাতো বলেন, রাজ্যের দুটি পুরসভায় বিরোধীদের বোর্ড রয়েছে। একটি ঝালদা ও অন্যটি তাহেরপুরে। ওখানে ওরা কী পায় তা জানি না। কিন্তু ঝালদা পুরসভাকে যে ভাবে বঞ্চিত করা হচ্ছে তাতে আমরা ৭ দিন অপেক্ষা করব। আমাদের পাওয়া না মেটালে আমাদের আন্দোলন যেমন চলছে তেমন চলবে। পাশাপাশি আমরা মামলা করতে বাধ্য হব। সরকার যে ফান্ড দিচ্ছে না তা আমরা কোর্ট থেকেই আদায় করব। আমাদের একটা আশঙ্কা ছিল বলেই আমাকে আসতে হল। ওদেরও ভুল বুঝিয়েছিল।

কলকাতায় আসা নিয়ে কাউন্সিলর রঞ্জন কর্মকার বলেন, ওদের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ করিনি। নিজেদের কাউন্সিলরদের মধ্যে একটা ভুল বোঝাবুঝি ছিল। সেটা মিটে গিয়েছে। আমরা দীঘা গিয়েছিলাম। সেখান থেকে কলকাতায় এসেছিলাম। ব্যক্তিগত কিছু কাজ ছিল কলকাতায়।

প্রশ্ন হল নেপাল মাহাতো বা কৌস্তুভ বাগচীদের ছুটে আসতে হল কেন? রঞ্জনবাবু বলেন, ওঁরা হয়তো ভেবেছিলেন আমরা তৃণমূলে যোগ দেব। তাই ওঁরা এসেছেন। যেটুকু হয়েছিল তা হল আমাদের ৭ কাউন্সিলরের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি। সেটা মিটে গিয়েছে। তৃণমূলের কেউ আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। আমাদের প্রলোভন দেখিয়ে কোনও লাভ হবে না।

ওই ভুল বোঝাবুঝি নিয়ে কৌস্তভ বাগচী বলেন, আমাদের আশঙ্কাটা অমূলক নয়। তাইতো নেপালবাবুকে পুরুলিয়া থেকে ছুটে আসতে হল। দুই কাউন্সিলরকে ভুলে বুঝিয়ে যে ভাবে বোর্ড ভাঙার চেষ্টা হয়েছিল তা আটকাতে আমরা সক্ষম হয়েছি। সরকারের কাছে আমাদের একটাই বক্তব্য, রাজ্যের সব পুরসভা আপনাদের দখলে। কংগ্রসের দখলে একটিমাত্র পুরসভা। তার দিকেও লোলুপ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতে হবে?

(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)

 





Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version