বিজেপির সহ-সভাপতি সুরজিৎ সেন জানিয়েছেন, “যেভাবে প্রকাশ্য দিবালোকে একজন সাধারণ ব্যবসায়ীকে খুন হতে হলো সে যেই দল করুক না কেন , তা অত্যন্ত দুঃখের। আমরা সাধারণ মানুষের কাছে আবেদন করেছিলাম বনধ সফল করার জন্য। মানুষ আমাদের ডাকে সাড়া দিয়েছে। গভীর রাত্রে বনধের নোটিশ দেওয়ার কারণে অনেকেই হয়তো বন্ধের খবর জানে না, তাই তারা রাস্তায় নেমেছে। আমরা সাধারণ মানুষের দাবিতেও তাদের সুরক্ষার দাবিতে শান্তিপূর্ণ বনধ ডেকেছি। আমরা রাস্তা অবরোধ করে পিকেটিং করে বনধ আরও জোরালো করতে পারতাম। কিন্তু সাধারণ মানুষের কথা ভেবে আমরা তা করছি না। তবে আমাদের একটি মিছিল বেরোবে, তাই ইসলামপুর শহর পরিক্রমা করবে।”
উল্লেখ্য, ইসলামপুর শহরের বীজহাট্টি এলাকায় রতন সাহা নামে এক বস্ত্র ব্যবসায়ীর কাছে দীর্ঘদিন ধরে মহঃ তফিক নামে এক যুবক মিথ্যা গল্প সাজিয়ে বকেয়া টাকার নাম করে জোর করে টাকার জন্য ওই ব্যবসায়ীকে চাপ দিতে শুরু করে বলে অভিযোগ। ওই যুবক কিছুদিন আগে তার কিছু বন্ধু বান্ধবকে নিয়ে ওই বস্ত্র ব্যবসায়ীর কাছে টাকা আদায়ের জন্য দোকানে এসে ঝামেলা সৃষ্টি করে। ওই বস্ত্র ব্যবসায়ীকে দেখে নেওয়ার হুমকিও দেয় অভিযুক্তরা। শনিবার সকালে ওই বস্ত্র ব্যবসায়ীর দোকানে মহঃ সাহিল নামে অপর এক যুবক আবার টাকা আদায়ের জন্য ঝামেলা সৃষ্টি করে। তখন দোকান মালিকের ভাগ্নে অসীম সাহা তাঁর প্রতিবাদ করায় তাকে চাকু দিয়ে একাধিক জায়গায় আঘাত করে বলে অভিযোগ। তাকে বাঁচাতে গেলে এই ঘটনায় স্থানীয় অপর এক যুবক আহত হয়। এরপর ওই অভিযুক্ত ওই যুবক ঘটনাস্থল থেকে চম্পট দেয়। আহতদের উদ্ধার করে ইসলামপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। আহত অসীমের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজে স্থানান্তরিত করা হয়।
পরবর্তী সময়ে শিলিগুড়ির একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে মৃত্যু হয় অসীম সাহার। ইসলামপুর থানার পুলিশ তদন্ত নেমে অভিযুক্ত মহঃ সাহিলকে ৩০ মিনিটের মধ্যেই গ্রেফতার করে। অপরদিকে, অসীম সাহার মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদে ইসলামপুরের শিবডাঙ্গী এলাকায় বিজেপির দলীয় কার্যালয়ের সামনে ৩১ নং জাতীয় সড়ক অবরোধ করে স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব। টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভে সামিল হয় বিজেপির নেতা-কর্মীরা। তাদের অভিযোগ, নিহত অসীম সাহা বিজেপি যুব মোর্চার নগর মণ্ডল কমিটির সম্পাদক ছিলেন। তাকে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা খুন করেছে বলে দাবি বিজেপি নেতৃত্বের। ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে ইসলামপুর থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী। পুলিশের সঙ্গে বাগ-বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে বিজেপি কর্মী সমর্থকেরা। ঘণ্টাখানেক বিক্ষোভের পর অবরোধ তুলে নেয় আন্দোলনকারীরা এবং শনিবার রাতে ইসলামপুর বিজেপি কার্যালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রবিবার ১২ ঘণ্টা বনধের ডাক দেয় বিজেপি নেতৃত্ব। যদিও বনধকে কেন্দ্র করে এখনও পর্যন্ত কোন অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। গোটা ইসলামপুর জুড়ে মোতায়েন রয়েছে বিরাট পুলিশ বাহিনী।