আলিপুরদুয়ার
পিনাকী চক্রবর্তী

এই সময়, আলিপুরদুয়ার: হাতিদের কন্ট্রাসেপ্টিভ! হাতি-মানুষের সংঘাত নিত্যদিন সংবাদের শিরোনামে উঠে আসছে। সেই সংঘাত ঠেকাতে হাতিদের বংশবৃদ্ধি রোধ করার ভাবছে বন দপ্তর। আর সে জন্যই হাতিদের কন্ট্রাসেপ্টিভ নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট যাতে হাতিদের বংশবৃদ্ধি রোধে ইমিউনোকন্ট্রাসেপশন (Immunocontraception) পদ্ধতি ব্যবহার করার ছাড়পত্রে সবুজ সংকেত দেয়, সেই বিশেষ আবেদন নিয়ে ইতিমধ্যেই দেশের সর্বোচ্চ ন্যায়ালয়ের দ্বারস্থ হয়েছে রাজ্যের বন দপ্তর। বিষয়টি এখনও বিচারাধীন হলেও বন দপ্তর আশাবাদী যে, অচিরেই হাতি-মানুষ সংঘাত নিয়ে বাস্তব পরিস্থিতির বিচারে সুপ্রিম কোর্ট বন দপ্তরের ওই আবেদন মঞ্জুর করবে।

Elephant Attack : হাতির আক্রমণ বাড়ছে ত্রিপুরায়, একাধিক পদক্ষেপ মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহার
বেশ কিছুদিন আগে রাজ্যে হাতিদের বংশবৃদ্ধি রোধে কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশ মন্ত্রকের কাছে ‘ইমিউনোকন্ট্রাসেপশন’ পদ্ধতি প্রয়োগ নিয়ে আবেদন জানানো হয়েছিল। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টে একটি ইনজাঙ্কশন জারি হয়। এর পর মামলা চলতে থাকে। ‘এই সময়’কে রাজ্যের প্রধান মুখ্য বনপাল (হেড অফ দ্য ফরেস্ট ফোর্স) সৌমিত্র দাসগুপ্ত জানিয়েছেন, সুপ্রিম কোর্টের কাছে বিষয়টি পুনরায় বিবেচনার জন্য আবেদন জানানো হয়েছে।

World Trending News: সন্তান জন্মের পর ভাঙল ভুল, গরিলা শিশুর বাবা খুঁজতে DNA টেস্ট!
তিনি বলেন, ‘হালে সারা রাজ্যে হাতি-মানুষের সংঘাত যে পর্যায়ে পৌঁছেছে, তাতে আর চুপ করে বসে থাকার সময় নেই। তাই আমরা সুপ্রিম কোর্টের কাছে বিষয়টি পুনরায় বিবেচনার জন্য আবেদন জানিয়েছি। আমরা আশাবাদী, অচিরেই সেই সবুজ সংকেত মিলবে এবং নির্দেশ মেলার সঙ্গে সঙ্গেই আমরা দ্রুত গতিতে কাজ শুরু করে দেব। যদিও তার সুফল মিলতে খানিকটা সময় লাগবে। তাই এটাকে আমরা সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা বলছি।’

Divorce: পরকীয়ায় জড়ানোয় ভাঙছে সংসার, পাখিদের মধ্যে বাড়ছে ‘ডিভোর্স’!
বিশ্ব জুড়ে হাতিদের বংশবৃদ্ধি রোধে ‘ইমিউনোকন্ট্রাসেপ্টিভ’ ব্যবহারে সুদূরপ্রসারী সুফল মেলে বলেই দাবি জীববিজ্ঞানীদের। কাজটা খুব একটা সহজ নয়৷ ওই কনট্রাসেপ্টিভ ভ্যাকসিন সিরিঞ্জে ভরে বন্দুকের মাধ্যমে ছোড়া হয়। তবে সে ক্ষেত্রে হাতিটি পুরুষ না মাদি, তা সবার আগে নিশ্চিত হওয়া প্রয়োজন। পুরুষদের ক্ষেত্রে কনট্রাসেপ্টিভ প্রয়োগে কোনও সমস্যা না থাকলেও, মাদি হাতিদের ক্ষেত্রে তা অনেকটাই জটিল। কারণ কোনও মাদি হাতি যদি গর্ভবতী হয়, তবে তার উপর ওই ভ্যাকসিন কখনই প্রয়োগ করা যাবে না।

Elephant Attack : মশাল না জ্বালালেও হাতিদের গতিবিধি সোশ্যাল মিডিয়ায়
তাতে তার দেহে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হতে পারে। হাতিদের মধ্যে মাদি-পুরুষ বাছাই করা এবং মাদি হলে তাদের মধ্যে কত সংখ্যক গর্ভবতী, তা সবার আগে নির্ণয় করে তবেই এই কাজে হাত দিতে হবে। তার জন্য হাতিদের জীবনশৈলী নিয়ে দক্ষতাসম্পন্ন বনকর্মীদের দল গঠন করতে হবে। তাঁদের একটি সামান্য ভুলও বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে। ফলে সব কিছু মিলিয়ে, জন্মনিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে মানুষের মধ্যে সাফল্যের হার যতটা দ্রুত পাওয়া সম্ভব, হাতিদের ক্ষেত্রে তা সময়সাপেক্ষ হবে বলে মতামত জীববিজ্ঞানীদের।

হালে ঝাড়গ্রামে ঘুমপাড়ানি গুলিতে কাবু হয়ে একটি মাদি হাতির মৃত্যুর পর রাজ্যে হাতি-মানুষের সংঘাত নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে ওঠে। কনট্রাসেপ্টিভ নিয়েও নানা প্রশ্ন রয়েছে। বিশিষ্ট হস্তিবিশেষজ্ঞ পার্বতী বরুয়া অবশ্য হাতিদের কন্ট্রাসেপ্টিভ নিয়ে আশাবাদী। তিনি বলেন, ‘মানুষের নিয়ন্ত্রণকে কায়েম করার স্বার্থেই হাতিদের বংশবৃদ্ধি রোধে ইমিউনোকন্ট্রাসেপ্টিভ ব্যবহার করা হচ্ছে সারা বিশ্ব জুড়ে।

Pig Farming : শূন্য থেকে শুরু করে স্বপ্নের উড়ান সিদ্ধার্থর
তাতে যদি হাতি-মানুষের সংঘাতে লাগাম টানা যায়, তবে চিন্তাভাবনাটি মন্দ নয়। কারণ আমরা সংখ্যায় বাড়লেও, ওদের আবাস অর্থাৎ জঙ্গল তো এক ছিঁটেও বাড়ছে না। সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে যদি সীমিত পরিসরে ওরা খানিক খোলামেলা ভাবে আগামীতে থাকতে পারে, তাতে মন্দ কী?’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version