ছেলের মৃত্যু সংবাদ শোনার পরেই পূর্বা এক্সপ্রেস ধরে মৃতের বাবা ও কাকা বিহার পৌঁছে যান। কিন্তু মুজাফফরপুর হাসপাতালে পৌঁছনোর আগেই পাটনা কলকাতা হাইওয়ের বক্তিয়ারপুর এলাকায় রাস্তায় অ্যাম্বুল্যান্সে ছাত্রের নিথর দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। সুরম্যর আত্মীয় তিলকচন্দ্র মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘রাত তিনটে নাগাদ ইউনিভার্সিটির পক্ষ থেকে ছাত্রের পরিবারকে ফোন করে জানানো হয় ছাদ থেকে পড়ে গিয়েছে সুরম্য। কি কারণে পড়ে গেল জানতে চাওয়া হলে তখন তাঁরা জানান, কিছুক্ষণের জন্য কলেজে বিদ্যুৎ সংযোগ ছিল না।
সেই সময় কয়েকজন বন্ধু মিলে তিন তলার ছাদের উপরে গিয়েছিল। সেখান থেকেই পড়ে যায় সুরম্য। যদিও কিভাবে পড়ে গেল, তা নিয়ে কেউই কিছু মুখ খুলতে চাইছেন না । পরেরদিন ছাত্রের পরিবার বিহারের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। পাটনা স্টেশনে নামার পরে সেখানে ইউনিভার্সিটি পক্ষ থেকে একটি গাড়ি রাখা থাকে।
সেই গাড়িতে করেই তাঁদের নিয়ে যাওয়া হবে বলা হয়। ছাত্রের পরিবারকে গাড়িতে করে ঘটনাস্থলে নিয়ে যাওয়ার সময় হঠাৎই কলকাতা পাটনা হাইওয়ের ধারে পাটনা থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে এবং ঘটনাস্থল থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরে দেহ ময়নাতদন্ত করে ছাত্রের পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়’।
তিলকচন্দ্র আরও বলেন, ‘ছাত্রের ফোন সহ অন্যান্য জিনিস এখনও পরিবারকে দেওয়া হয়নি। যেভাবে উপর থেকে পড়েছে তা থেকে মনে হচ্ছে কেউ পিছন দিক থেকে ঠেলে ফেলে দিয়েছে। কারণ চিৎ হয়ে পড়ে থাকায় মুখের সামনের অংশে কোন আঘাতের চিহ্ন নেই।
তাই এটা দেখে বোঝা যাচ্ছে কেউ তাঁকে ঠেলে ফেলে দিয়েছে। সঠিক তদন্ত করে দোষী ব্যক্তির শাস্তির দাবি জানাচ্ছি আমরা’। মৃত ছাত্রের বাবা সুশান্ত সাঁতরা বলেন, ‘ঘটনাস্থলে কয়েকজন সিনিয়র ছাত্র ছিল। তাঁরা বারবার বোঝানোর চেষ্টা করছিল এটা নিছক দুর্ঘটনা।
কলেজ খুব দ্রুত সব রকম ব্যবস্থা নিয়েছে। একটা সাদা কাগজে ছেলের নাম লিখে দিয়ে দেয় পুলিশ’। বিহার থেকে মৃতদেহ নিয়ে এসে আজ শেওড়াফুলির শ্মশান ঘাটে দাহ করা হয়। ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে ছাত্রের পরিবারে।