‘২০২৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনের আগে নতুন দল করব’, তৃণমূলের তরফে শোকজ করার পরেই ঘোষণা ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীরের। তিনি বলেন, ‘বর্তমানে আমি তৃণমূলের বিধায়ক, ২০২৪ সালে লোকসভা ভোটে দেখব, এটুকু বলতে পারি যে মার্কসবাদী দল আমি করব না। কারণ বিগত দিন থেকে আমি তাদের বিরোধী। তাদের বিরুদ্ধে ৩০ বছর রাজনীতি করেছি। এর মধ্যে ২৭ টি রাজনৈতিক কেস আমার কপালে জুটেছে।’

হুমায়ুন কবীর আরও বলেন, ‘আমি এখন তৃণমূল কংগ্রেস করছি, তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক আছি, যদি আমার কাছ থেকে তৃণমূল কংগ্রেস করার অধিকার ছিনিয়ে নেওয়া হয়, তাহলে ২০২৬ সালের আগে নতুন দল গঠন করব। আমি যে শুধু মুখে বলি তা নয়, ভবিষ্যতে আপনারা দেখতে পাবেন এটুকু বলতে পারি। মুর্শিদাবাদের দল হবে না, দলটা পশ্চিমবঙ্গ ব্যাপী হবে।’

Humayun Kabir Show Cause : হুমায়ুনের বিরুদ্ধে ‘কঠোর’ অবস্থান! মমতার বার্তার পরই তৃণমূল বিধায়ককে শোকজ
প্রসঙ্গত, পঞ্চায়েত ভোটের আগে থেকেই ‘বেসুরো’ শোনাচ্ছিল হুমায়ুন কবীরকে। ভোটের পর কার্যত খোলাখুলি দলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে দিয়েছেন তিনি। দলের জেলা নেতৃত্বকেও নিয়মিত তোপ দাগছিলেন এই বিধায়ক। ভোটের পর সুর আরও চড়িয়ে প্রয়োজনে নির্দলদের সমর্থনে বোর্ড গঠনের হুঁশিয়ারিও দেন হুমায়ুন। এমনকী পঞ্চায়েত নির্বাচনের হিংসা নিয়েও দলকে অস্বস্তিতে ফেলে একের পর এক বেফাঁস মন্তব্য করে গিয়েছেন ভরতপুরের বিধায়ক।

Lakshmi Bhander : বিধানসভায় লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে মুসলিম মহিলাদের হাজার টাকা দেওয়ার দাবি, বাইরে এসে ‘মৌন’ হুমায়ুন
এদিকে হুমায়ুনের এই ধরনের মন্তব্য ভাল চোখে নেয়নি দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। এমনকী বিধানসভায় দাঁড়িয়ে খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলতে শোনা যায়, ‘মুর্শিদাবাদ জেলার রেজিনগরে আমাদের একজন আছেন, যিনি মাঝেমধ্যেই হুঙ্কার দেন, গুন্ডামি করেন, আমাদের দলে থাকলেও তাঁর কাজকর্মকে সমর্থন করি না।’ দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রীর সেই মন্তব্যের পরে শনিবার সকালে হুমায়ুন কবীবের কাছে পৌঁছে গেল কারণ দর্শানোর নোটিশ। সাত দিনের মধ্যে সেই চিঠির জবাবও দিতে বলা হয়েছে তাঁকে। যদিও চিঠি পাওয়ার পরেও ছিটেফোঁটা সুর নরম করেননি হুমায়ুন।

Kabir Suman: ‘মমতাকে সহ্য করতে পারছেন না অনেকে…’, অপর্ণাদের খোলা চিঠির পালটা জবাব সুমন সহ তৃণমূলপন্থী বুদ্ধিজীবীদের
নোটিশ প্রসঙ্গে ভরতপুরের বিধায়ক বলেন, ‘যাঁরা চক্রান্তকারী, তাঁদেরই তো জয়জয়কার। তাঁরা যেটা বলছেন, সেটাই তো রাজ্য নেতৃত্ব শুনছেন। এখানকার জেলা নেত্রী আশায় বুক বেঁধেছেন যে, হুমায়ুনকে বের করে দিলে আমাদের লুঠপাট ভালই হবে। আজ শোকজের চিঠি পেয়েছি, আর চার দিন ধরে শোকজের চিঠি সোশ্যাল মিডিয়াতে ঘুরে বেড়াচ্ছে, আজ বারোটার সময় আমার ছেলে চিঠি রিসিভ করছে।’ ৭ দিনের মধ্যে শোকজ নোটিশের উত্তরও তিনি দেবেন বলে জানিয়ে দেন হুমায়ুন কবীর। তবে নতুন দল তৈরির কথা বলে তিনি কার্যত তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বকেই পালটা চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলেন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version