ঐতিহাসিক স্থানে বর্তমানে গড়ে উঠেছে গোরুর খাটাল। জঙ্গলে ঢেকেছে আশপাশ। এলাকাবাসীরা চাইছেন দ্রুত সংস্কার করে হেরিটেজ তকমা দেওয়া হোক এই ঐতিহাসিক স্থল গুলিকে। পর্যটন মানচিত্র যাতে জায়গা পায় এই স্থানগুলি তারও আবেদন জানাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ব্রিটিশ আমলে অশোকনগর ছিল একটি রয়াল এয়ারপোর্ট স্টেশন বা বিমান ঘাঁটি। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে পরিত্যক্ত ইংরেজ আমলের এই এয়ারফিল্ড, ডঃ বিধান চন্দ্র রায়ের পরিকল্পনায় হয়ে ওঠে উদ্বাস্ত কলোনি।
পূর্বে এই শহর হাবড়া আরবান কলোনি নামে পরিচিত ছিল। পরবর্তীতে এর উত্তর পূর্ব অংশের নামকরণ করা হয় কল্যাণগড় এবং দক্ষিণ-পশ্চিম অংশের নামকরণ করা হয় অশোকনগর। স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে ব্রিটিশ সেনাবাহিনী অশোকনগর কল্যাণগড় এলাকায় সামরিক ঘাঁটি তৈরি করেছিল। যুদ্ধবিমান ওঠা নামার জন্য বানানো হয়েছিল রানওয়ে। বর্তমান অশোকনগরের গোলবাজার থেকে নিউমার্কেট পর্যন্ত গেলে এখনো দেখা যায় সেই রানওয়ের অংশবিশেষ। শুধু তাই নয় এই অশোকনগরের মিলেনিয়াম পার্ক সংলগ্ন এলাকায় মাটির নিচে একটি গুপ্ত কক্ষ খুঁজে পাওয়া যায়।
জানা যায়, এই গুপ্ত কক্ষেই রাখা থাকতো যুদ্ধে ব্যবহৃত গোলাবারুদ। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ডঃ বিধান চন্দ্র রায়ের পরিকল্পনায় উদ্বাস্তু নগরী হিসেবে রূপ নেয়া অশোকনগর। স্বাধীনতার ইতিহাসের নানা সাক্ষ্য বহন করলেও তা সংরক্ষণের যথেষ্টই অভাব রয়েছে বলে মনে করেন অশোকনগরবাসীরা। পাশাপাশি, স্থানীয় বাসিন্দারা চাইছেন গরুর ঘাটাল সহ জঙ্গল পরিষ্কার করে দ্রুত হেরিটেজ তকমা দেওয়া হোক ঐতিহাসিক ব্রিটিশ আমলের সেনা ছাউনি অশোকনগরের এই স্থানকে। যদিও জানা গিয়েছে অশোকনগরের বিধায়ক নারায়ণ গোস্বামীর উদ্যোগে এই ঐতিহাসিক স্থানগুলিকে নিয়ে বিশেষ কিছু পরিকল্পনা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এখন দেখার কতটা সংরক্ষণ করা স্বাধীনতার ইতিহাস বহন করা এই বিমান ঘাঁটির ধ্বংসাবশেষকে। স্বাধীনতা দিবসের আগে আবারও ইতিহাসের গায়ে পড়া কালি মুছে তাকে ফের নতুন রূপ দেওয়ার ভাবনা। এলাকার ইতিহাসকে সংরক্ষণের দাবি তুলেছেন বাসিন্দারাই।