এক ভীষন বিশৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে দুইদিন কাটানোর পর ১৭ই অগাস্ট বেতারে রাডক্লিফ কমিশনের ঘোষণা প্রচারিত হয় এবং ওই দিনই পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিজ্ঞপ্তি অনুসারে পূর্বের মালদা জেলার ১৫টি থানার মধ্যে দশটি থানা অর্থাৎ ইংরেজবাজার, মালদা, রতুয়া, হরিশ্চন্দ্রপুর, খরবা, গাজোল, হবিবপুর,বামনগোলা, মানিকচক ও কালিয়াচক ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয়।
বাকি পাঁচটি থানা– শিবগঞ্জ, নবাবগঞ্জ, ভোলাহাট, নাচোল ও গোমস্তাপুর পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত হয়। শুক্রবার সকাল ৯ টা নাগাদ মালদা জেলা গ্রন্থাগারের উদ্যোগে বই বাগানে ভারতের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে পালন করা হয় মালদা জেলার প্রকৃত স্বাধীনতা দিবস। উপস্থিত ছিলেন মালদা জেলা গ্রন্থাগার প্রশাসক প্রসেনজিৎ দাস, বঙ্গ রত্ন রাধাগোবিন্দ ঘোষ, জেলা গ্রন্থাগার আধিকারিক সুজিত মিত্র সহ অন্যান্য শিল্পীরা। এদিন মালদা জেলার স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে শিল্পীরা গান ,নাচ পরিবেশন করে অনুষ্ঠান মঞ্চে।
বঙ্গ রত্ন রাধাগোবিন্দ ঘোষ এই বিষয়ে বলেন, ‘সেই ঘোষণার পর একদিকে হতাশা, অন্যদিকে আশঙ্কায় ভুগছিলেন জেলাবাসী। ১৪ই অগাস্ট মালদার আকাশে উড়েছিল পাকিস্তানের জাতীয় পতাকা। শেষ পর্যন্ত জেলার কয়েকজন স্বাধীনতা সংগ্রামী এবং বিদ্বজ্জনের প্রচেষ্টায় ১৬টি থানার মধ্যে ১১টিকে ফের ভারতে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
১৮ই অগাস্ট মালদার তৎকালীন জেলা প্রশাসনিক ভবনের মাথায় উড়ে তেরঙ্গা। সেই দিনটিকে স্মরণ করে প্রতি বছর ১৮ই অগাস্ট এই জেলায় পালিত হয় মালদার ভারতভূক্তি দিবস’। জেলা গ্রন্থাগার প্রশাসক প্রসেনজিৎ দাস বলেন, ‘দেশভাগ সবসময়েই যন্ত্রণার। মালদা জেলার মানুষও সেই সময়ের কথা মনে করলে এখনও যন্ত্রণায় ভোগেন। দেশভাগের সঙ্গে সঙ্গে সেই সময় জেলাকেও ভাগ করা হয়েছিল। সেইসব দিন যাতে আর কোনোদিন ফিরে না আসে, সেই বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে’।