কাজের ফাঁকে রিল ভিডিয়ো করছিলেন ২৫ বছরের যুবকটি। আর তার খানিক্ষণের মধ্যেই আচমকা ভেঙে পড়ল ব্রিজ। মৃত্যু হল যুবকের। ঘটনাস্থল মিজোরাম। মৃত যুব মালদার ইংরেজবাজার ব্লকের নরহাট্টা গ্রামের বাসিন্দা নব চৌধুরী। যুবকের সেই শেষ রিল ভিডিয়ো এসেছে প্রকাশ্যে, যা দেখে কান্নায় ভেঙে পড়ল পরিবার।

গত দেড়মাস আগে মিজোরামে ব্রিজ নির্মাণের কাজে শ্রমিক হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন মালদার বাসিন্দি নব চৌধুরী। কাজের ফাঁকে টিকটক করার নেশা ছিল তাঁর। দুর্ঘটনার মুহূর্তের আগেও টিকটক করেছিল সে। আর তার কিছু সময়ের মধ্যেই ভেঙে পড়ে ব্রিজটি। শুক্রবার রাতে নব দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন জেলা পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তারা।

Migrant Workers : বাংলা থেকে দলে দলে ভিনরাজ্যে যাচ্ছেন শ্রমিকরা, আসল কারণ কী?
নবর বোন জানায়, ‘দুর্গাপুজোয় দাদার আসার কথা ছিল। ভাবতে পারিনি এমন হবে। আমার বাবা অসুস্থ, আমার দাদা এতদিন পড়াশোনা করত, এখন সংসার চালাত। আমার দাদা নেই, এখন আমার কী ভাবে চলব? বড় বড় মন্ত্রীরা বলছেন কাজ দেওয়া হবে, কোথায় কাজ? তাই জন্যই তো গিয়েছিল, পেটের জন্যই তো বাইরে গিয়েছিল। আমাদের ৩ জনের মধ্যে একজনকে কাজ দিন। নয়তো আমাদের কী ভাবে চলবে? আমি একটা কাজ চাই।’ এই ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে গোটা এলাকায়। প্রত্যেকে্ই চাইছেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারীকে হারানো ওই পরিবারের পাশে দাঁড়াক সরকার।

মিজোরামের এই দুর্ঘটনায় মালদা জেলার বহু শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। শোকের ছায়া কার্যত গোটা জেলাজুড়ে। দুর্ঘটনায় মৃত অপর এক পরিযায়ী শ্রমিক ঝাল্লু সরকারের পরিবারের সদস্যরা জানাচ্ছেন, মহাজনের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে বাড়ি করেছিলেন তিনি। সেই বাড়ির এখনও অনেক কাজ বাকি। প্লাস্টার ও রং হওয়া বাকি। রাজ্যে সেভাবে কাজ নেই, তাই জেলাতে অনেক শ্রমিক কাজের তাগিদে ভিন রাজ্যে চলে যাচ্ছেন।

Malda News : ‘কেন যে কাজে পাঠালাম?’ মিজোরামে নিহত একই পরিবারের ৬, ‘পুরুষশূন্য’ বাড়িতে শুধুই হাহাকার
ঝাল্লুর পরিবারের সদস্যরা জানান, বাড়ি করার টাকা কী ভাবে শোধ করবে তা নিয়ে চিন্তার মধ্যে ছিলেন তিনি। গ্রামে সেভাবে কাজ নেই, ১০০ দিনের কাজও খুব বেশি পাওয়া যায় না, তাই মিজোরামে গিয়েছিলেন কাজ করতে। সেখানে মজুরি ভালই পাচ্ছিলেন। তাই পঞ্চায়েত নির্বাচনের পরই ঝাল্লু সরকার-সহ তাঁর পরিবারের তিনজন মিজোরামে গিয়েছিলেন রেল ব্রিজের কাজে যোগ দিতে। তবে তাঁর আর বাড়ির ঋণের টাকা পরিশোধ করা হল না। তার আগেই সব শেষ হয়ে গেল।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version