কলেজের মধ্যেই TMCP ছাত্র সংসদের বর্তমান সদস্যকে মারধরের অভিযোগ অন্য কলেজের প্রাক্তনীদের বিরুদ্ধে। জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার বিকেল সাতটা থেকে আটটার মধ্যে আনন্দ মোহন কলেজে ঢুকে পড়েন কয়েকজন বহিরাগত। তারা প্রত্যেকেই মদ্যপ ছিলেন বলে অভিযোগ। কলেজ চলাকালীনই আনন্দ মোহন কলেজের TMCP ইউনিট প্রেসিডেন্টের উপর হামলা চালায় বলে অভিযোগ। কলেজ প্রিন্সিপালের সামনেই তাঁকে মাটিতে ফেলে রীতিমতো বুকে, পেটে, লাথি , চড়, ঘুষি মারা হয় বলে অভিযোগ।
প্রহৃতের নাম বিবেক সিংহ। তিনি আনন্দ মোহন কলেজের TMCP ইউনিট প্রেসিডেন্ট। তাঁর অভিযোগ, এই হামলাকারীরা প্রত্যেকেই সিটি কলেজের প্রাক্তনী। কয়েক বছর আগেই তারা সেখান থেকে পাশ করে বেরিয়েছেন। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। আনন্দ মোহন কলেজের TMCP সদস্যদের দাবি, দল করলে তাদের জানে মেরে দেওয়ারও হুমকি দেওয়া হয়েছে।
গোটা ঘটনায় ইতিমধ্যেই আমর্হাস্ট স্ট্রিট থানায় দায়ের করা হয়েছে এফআইআর। হামলাকারীরা সিটি কলেজের প্রাক্তনী বলে সেখানে উল্লেখ এবং এফআইআর-এ কয়েকজনের নামও দেওয়া হয়েছে বলে কলেজের ছাত্র পরিষদ সংগঠন সূত্রে খবর। একইসঙ্গে গোটা ঘটনা যে সিসিটিভি-তে রেকর্ড রয়েছে তাও জানানো হয়েছে পুলিশকে। উল্লেখ্য, একই কলেজ বিল্ডিংয়ে ভিন্ন সময়ে বসে আনন্দমোহন ও সিটি কলেজের ক্লাস। নর্থ সিটি সান্ধ্য শাখার নামই আনন্দ মোহন কলেজ।
ক্লাস চালু থাকাকালীন প্রিন্সিপ্যালের উপস্থিতিতে ছাত্রদের উপর এমন হামলা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। একইসঙ্গে আচমকা TMCP ইউনিট প্রেসিডেন্টের উপর কেন এই হামলা সেই নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। মধ্য কলকাতা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি শিবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘ঘটনায় বিজেপির মদত রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। প্রহৃত ইউনিট প্রেসিডেন্ট বিবেক সিংহ সহ ওই কলেজের ছাত্র পরিষদের সদস্যরা আমাদের জানিয়েছেন গত কয়েকদিন ধরেই তাদেরকে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। সংসদ নির্বাচনের কথা ঘোষণা হতেই শুরু হয়েছে এই হুমকি। আনন্দ মোহন কলেজের ছাত্র পরিষদের সদস্যদের অভিযোগ করেছেন ওই হামলাকারীরা বিজেপির মদতে এমন কাণ্ড ঘটাচ্ছে। তৃণমূল ছাত্র পরিষদ করলে বিপদ হবে এমন হুমকিও তাদের দেওয়া হচ্ছে।’
ঘটনায় দ্রুত দোষীদের চিহ্নিত করে উপযুক্ত পদক্ষেপের আর্জি জানিয়েছেন মধ্য কলকাতা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি। বিষয়টি তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতিকেও জানানো হয়েছে বলে জানান শিবাশিস।
উল্লেখ্য, TMCP-র প্রতিষ্ঠা দিবসের মঞ্চ থেকেই রাজ্যের কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়গুলির ছাত্র সংসদ নির্বাচন নিয়ে বড় ঘোষণা করেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘পুজো মিটে গেল আমি ইলেকশন করিয়ে দেব। তার জন্য একটা বিল সংশোধন করতে হবে। আগামী বিধানসভা অধিবেশনে ওই বিল সংশোধন করা হবে। পুজো মিটলেই নির্বাচন হবে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে।’ TMCP-র দাবি ভোটের ঘোষণা শুনে আগেভাগে ভয় দেখিয়ে নিজের দলে টানতে চাইছে বিজেপি সহ বিরোধীরা। সেই কারণ থেকেই গতদিন আনন্দমোহন কলেজের এই উত্তেজনা।