এই সময়, দুর্গাপুর: ওটিপি স্ক্যাম, সেক্সটরশনের পর আর্থিক প্রতারণায় এবার হাতিয়ার আধারকার্ডের সঙ্গে সংযুক্ত বায়োমেট্রিক। সেই বায়োমেট্রিক ক্লোন করেই দুর্গাপুরের এক ব্যবসায়ীর পৃথক দু’টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে ১০ হাজার করে মোট ২০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে হ্যাকাররা। জানা গিয়েছে, এক্ষেত্রে আধার এনেবল্‌ড পেমেন্ট সিস্টেমকে (এইপিএস) কাজে লাগিয়েছে দুষ্কৃতীরা। এই মাধ্যমে টাকা তুলতে আধার নম্বরের পাশাপাশি দরকার রেটিনা বা ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা ফেসিয়াল স্ক্যানের মধ্যে যে কোনও একটি বায়োমেট্রিক তথ্য। এবার সেই বায়োমেট্রিক হুবহু নকল করেই টাকা হাতানোর নতুন পদ্ধতি বের করছে ডিজিটাল দুষ্কৃতীরা।

Cyber Crime : বায়োমেট্রিক তথ্য চুরি, ফাঁদে কলকাতার বাসিন্দাও
গত ৮ সেপ্টেম্বর রাতে একটি বেসরকারি ব্যাঙ্ক থেকে মোবাইলে মেসেজ পান বিধাননগরের বাসিন্দা বিবেকানন্দ মুখোপাধ্যায় নামে ওই ব্যবসায়ী। তাতে লেখা ছিল, আধার এনেবল্‌ড পেমেন্ট সিস্টেমের (এইপিএস) মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট থেকে ১০ হাজার টাকা তোলা হয়েছে। তখনই ব্যাঙ্কে ফোন করে বিবেকানন্দ জানান, তিনি ওই টাকা তোলেননি। ব্যাঙ্কের কথা মতো অ্যাকাউন্টি বন্ধ করে দেন। পরের দিন আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের সাইবার ক্রাইম বিভাগে অভিযোগ দায়ের করেন।

Cyber Crime : নতুন করে পরিচয়পত্রের নথি না দিলে বন্ধ হবে অ্যাকাউন্ট! লিঙ্কে ক্লিক করতেই টাকা লোপাট
এর পর তিনি তাঁর এসবিআইয়ের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টটি আপডেট করতে গিয়ে দেখেন, ৮ তারিখ ওই একই সময়ে ওই অ্যাকাউন্ট থেকেও ১০ হাজার টাকা তোলা হয়েছে। বিবেকানন্দ বলেন, ‘এই দু’টি অ্যাকাউন্ট ছাড়া আমার আরও একটি ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা হাতানোর চেষ্টা করা হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় বায়োমেট্রিক ব্যবহার করতে হয়। মনে হচ্ছে কোনও এক জায়গা থেকে তথ্য লিক হয়েছে।’ তাঁর অভিযোগ, ‘কেন্দ্রীয় সরকার ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টের সঙ্গে আধার লিঙ্ক করতে বলেছে। এবার তারই সুযোগ নিয়ে আমাদের মতো সাধারণ মানুষের অ্যাকাউন্ট সাফ করে দিচ্ছে হ্যাকাররা।’

Aadhaar Linked Birth Registration : শিশু জন্মালেই আধার রেজিস্ট্রেশন, কোথায় কবে থেকে চালু? জানুন
ওই ব্যবসায়ীর অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সাইবার ক্রাইম বিভাগের এক আধিকারিক। তিনি জানান, সাইবার ক্রাইমের সঙ্গে যারা যুক্ত তারা এবার টাকা হাতাতে বায়োমেট্রিক পদ্ধতি কাজে লাগাচ্ছে। তা হলে, বায়োমেট্রিক তথ্য সুরক্ষিত রাখার উপায় কী? ওই আধিকারিক বলেন, ‘বায়োমেট্রিক সর্বদা লক করে রাখতে হয়। ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তোলার সময়ে বায়োমেট্রিক লক খুলে টাকা তোলার পর ফের লক করে দেওয়া উচিত। বায়োমেট্রিক সংক্রান্ত কোনও কাজের সময় লক খুলতে হবে। অন্য সময় বায়োমেট্রিক লক করে রাখলে তথ্য বাইরে যাবে না।’

Taruner Swapna Scheme 2023 : প্রত্যেক পড়ুয়ারা পাবেন ১০ হাজার টাকা, ​কী ভাবে আবেদন করবেন তরুণের স্বপ্ন প্রকল্প?
১০০ দিনের কাজের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিক ও বিভিন্ন সরকারি ভাতা প্রাপকদের সুবিধার্থে এইপিএস ব্যবস্থা চালু আছে ব্যাঙ্কে। এই পদ্ধতিতে বায়োমেট্রিক ও আধার নম্বর ব্যবহার করে খুব সহজেই অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলতে পারেন গ্রাহকরা। কিন্তু ধিকাংশ গ্রাহকই বায়োমেট্রিক লক করেন না। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়েই হ্যাকররা গ্রাহকদের অ্যাকাউন্ট ফাঁকা করে দিচ্ছে। বর্তমানে রেশন তোলার সময় ও জমি-বাড়ির রেজিস্ট্রি অফিসেও বায়োমেট্রিক প্রয়োজন হয়। সাইবার ক্রাইম বিশেষজ্ঞদের মতে, এইসব জায়গা থেকে কোনও ভাবে বায়োমেট্রিকের তথ্য বেরিয়ে যাচ্ছে। কারও বায়োমেট্রিক তথ্য পাওয়া গেলে সেটা ক্লোন করলে আর আধার নম্বর জানা থাকলে যে কেউ অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলে নিতে পারবে।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version