এই নৈশভোজে আমন্ত্রিত হওয়া সত্ত্বেও কয়েকটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তা এড়িয়ে গেলেও বাংলার মুখ্যমন্ত্রী কেন সেখানে গেলেন, তা-ও চিঠি লিখে জানতে চেয়েছেন কংগ্রেসের লোকসভার দলনেতা। পাল্টা কড়া জবাব দিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্বও। জোড়াফুলের রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু সেন অধীরকে নিশানা করে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন, মমতা যেখানে ‘ইন্ডিয়া’ জোটকে শক্তিশালী করছেন, সেখানে অধীর কেন পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির হাত শক্ত করতে চাইছেন।
রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর আমন্ত্রণে জি২০ বৈঠকের নৈশভোজে শনিবার অংশগ্রহণ করেছিলেন মমতা। সূত্রের খবর, শাহ, যোগীদের সঙ্গে এক টেবিলে বসে থাকার সময়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উঠে এসে কথা বলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে। দু’জনে কুশল বিনিময়ও করেন। ওই নৈশভোজে মমতার আমন্ত্রণ রক্ষা নিয়ে রবিবার অধীর বলেন, ‘এক টেবিলে যোগী আদিত্যনাথ, অমিত শাহের সঙ্গে ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই যোগী উত্তরপ্রদেশে থাকা বাঙালিদের বাংলাদেশি বলে অত্যাচার করেছেন। এই নৈশভোজ দেশের মুখ্যমন্ত্রীদের বড় অংশ প্রত্যাখ্যান করেছেন। নৈশভোজে গিয়ে কী বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী? উনি না গেলে মহাভারত অশুদ্ধ হতো না।’
পাল্টা শান্তনুর বক্তব্য, ‘আন্তর্জাতিক মঞ্চে দেশের সম্মানের স্বার্থে মুখ্যমন্ত্রী এই অনুষ্ঠানে গিয়েছেন। তৃণমূল নেত্রী দেশের সম্মানকে সবার আগে রাখেন। অধীর চৌধুরী এই প্রশ্ন তুলে কী প্রমাণ করতে চাইছেন? মমতা ইন্ডিয়া জোটকে সংহত করছেন। সেখানে অধীর বাংলায় সিপিএমের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বিজেপিকে শক্তিশালী করছেন। বিজেপির হাত শক্ত করতেই কি উনি এই সব অবান্তর প্রশ্ন তুলছেন?’ তৃণমূল নেতৃত্বের যুক্তি, রাষ্ট্রপতির নৈশভোজে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর আসন কোথায় থাকবে, তিনি যে টেবিলে বসবেন, সেখানে আর কারা বসবেন–তা রাষ্ট্রপতি ভবন ঠিক করেছে।
রাষ্ট্রপতির আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করলে তা দেশের সাংবিধানিক প্রধানকে অবমাননা করা হতো বলে তৃণমূল নেতৃত্বের যুক্তি। যদিও বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্য, ‘নৈশভোজে অমিতজি অথবা যোগীজির ওঁর সঙ্গে (মমতা) কোনও কথা বলেননি। অধীর চৌধুরী ভুল বলেছেন।’ যদিও এক টেবিলে বসা নিয়ে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সুজন চক্রবর্তীর কটাক্ষ, ‘যোগী-শাহের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী এক টেবিলে। ডাল মে কুছ কালা তো হ্যায়।’ শান্তনুর প্রতিক্রিয়া, ‘এই পঞ্চায়েত ভোটেও রামের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে বাম। ধূপগুড়িতে ভোট কেটে বিজেপিকে সাহায্য করেছে সিপিএম। বাংলায় তৃণমূল-ই যে ইন্ডিয়াকে প্রতিনিধিত্ব করছে তা মানুষ জানেন।’