ভাটপাড়ার স্কুলের ঘটনা
শিক্ষক আর পড়ুয়ার মধ্যে সম্পর্ক কতটা মধুর হয় তা ফের একবার প্রমাণ পেল ভাটপাড়ায়। পুরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের রবীন্দ্রপল্লীর রবীন্দ্রপল্লী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এক অন্য ছবি ধরা পড়ল। নিয়মমাফিক শিক্ষা দফতর ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে অন্যত্র বদলি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেই খবর ছাত্র-ছাত্রী এবং অভিভাবকদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়তেই শুরু হয় এক নতুন বিতর্কের। ছাত্র-ছাত্রীরা যেমন তাদের প্রিয় শিক্ষক সুব্রত স্যারকে ছাড়তে নারাজ। পাশাপাশি অভিভাবকরাও প্রধান শিক্ষককে স্কুল থেকে যেতে দিতে নারাজ।
কী দাবি অভিভাবকদের?
অভিভাবক এবং ছাত্র-ছাত্রীদের দাবি, তাঁরা কোনওভাবেই বরদাস্ত করবেন না প্রধান শিক্ষকের এই বদলি। প্রধান শিক্ষক না থাকলে এই স্কুলে তাঁরা আর পাঠাবেন না তাঁদের বাচ্চাদের। আবেগতাড়িত হতে জানালেন সকলেই। দেখা গেল তাঁদের প্রিয় সুব্রত স্যারের বদলির খবর পেয়ে ক্লাসরুমে বসেই কাঁদছে পড়ুয়ারা। শুধু তাই নয় টিফিনের সময়ও যেন কিছুতেই খাবারও খেতে চাইছে না ছোট ছোট বাচ্চাগুলো।
কী বলছেন তাঁরা?
বিষয়টি দেখার পরেই প্রধান শিক্ষক অভিভাবকদের বোঝাবার চেষ্টা করেন যে এটা নিয়ম অনুযায়ী তাঁকে বদলি নিতেই হবে। কিন্তু কোনও কথা শুনতে রাজি নয় অভিভাবকরা। এক অভিভাবক জানান, তাদের দাবি তারা স্কুলে বাচ্চা পাঠিয়ে নিশ্চিন্তে বাড়িতে কাজ করতে পারেন। তারা জানেন তাদের বাচ্চা সুরক্ষিত আছে এই শিক্ষকের হাতে। এরপরেও যদি শিক্ষককে বদলি করে দেওয়া হয় তাহলে তারা আন্দোলনে নামবেন।এমনকি স্কুলের গেটে তালা ঝুলিয়ে দিতেও তারা প্রস্তুত।
প্রধান শিক্ষকের বক্তব্য
স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সুব্রত মুখোপাধ্যায় জানান, দীর্ঘদিন ধরে এই স্কুলে শিক্ষকতা করছি। এটা শিক্ষকতার পুরস্কার। বদলি নিয়ে আমি কিছু বলতে চাই না। এটা নিয়মমাফিক হয়েছে। তবে দীর্ঘদিন এঁদের সঙ্গে থেকেছি, একটা আবেগ তো থাকবেই। সেইজন্যেই তো আমরা মানুষ। তবে অনেক অভিভাবক বলছেন, স্কুল থেকে ছাড়িয়ে নেবেন, সেরকম হলে স্কুল বন্ধ হয়ে যাবে? সুব্রতবাবু জানান, এটা কোনওভাবেই উচিত নয়। এটা একটি স্কুল। যিনি দায়িত্ব নেবেন, তিনি ভালই চালাবেন স্কুল বলে জানান তিনি।