‘এতো বড়! সত্যি?’ ভাদ্র সংক্রান্তি এলেই কয়েক বছর আগে শারদোৎসবের আগে একটি বহুজাতিক সংস্থার বহুল প্রচারিত বিজ্ঞাপনটিকেই যেন মনে করায় বাঁকুড়া- ১ ব্লকের প্রাচীণ ও সমৃদ্ধশালী গ্রাম কেঞ্জাকুড়া। কারণ প্যাঁচে ভরা জিলিপির সাইজ নিয়ে বিতর্ক হতেই পারে৷ কিন্তু এখানে এই সময় তৈরি জিলিপির সাইজের কোনও সীমা নেই, এমনকি জিলিপির প্যাঁচেও যে শিল্প সৃষ্টি সম্ভব তা করে দেখিয়েছেন এখানকার মিষ্টান্ন শিল্পের সঙ্গে যুক্ত কারিগরেরা৷

Vishwakarma Puja 2023 : বিশ্বকর্মা পুজো এলেই বুকটা হু হু করে ওঠে, প্রায় একদশক ধরে কর্মহীন দ্বারিকা শিল্পাঞ্চলের ৫ হাজার শ্রমিক
দশ কেজি ওজনের জিলিপি

আপনি চাইলে দশ কেজি ওজনেরও জিলিপি উপহার দিতে পারেন৷ হেঁয়ালি নয়! ফি বছরই বাঁকুড়ার এই গ্রামে ভাদ্র সংক্রান্তির আগে থেকেই জিলিপি মেলার আয়োজন হয়। সেখানেই মেলে বিশাল আকারের এই জিলিপি। স্থানীয় বাসিন্দা থেকে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, ভাদ্র সংক্রান্তিতে রাঢ় বঙ্গে ভাদু পুজো হয়৷ আর এই পুজোকে কেন্দ্র করেই কেঞ্জাকুড়া গ্রামে বসে জিলিপি মেলা৷

Bankura News : চুরি-ছিনতাই সহ একাধিক অপরাধে যোগ, গ্রেফতার বাঁকুড়া শ্যুট আউটে কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত
স্থানীয়রা কী জানাচ্ছেন?

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এই মেলার প্রধান আকর্ষণ জিলিপির সাইজ৷ জিলিপির নূন্যতম ওজন তিন থেকে চার কেজি। ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী জিলিপির ওজন দশ কেজিও হতে পারে। স্বাভাবিকভাবেই বাঁকুড়া ছাড়াও রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ ভিড় করেন এই জিলিপি মেলায়। এমনকি কে কত বড় সাইজের জিলিপি তৈরি করতে পারেন, তা নিয়ে মেলায় কারিগরদের মধ্যেও প্রতিযোগিতা হয়।

পর্যটকদের ভিড়

‘জাম্বো’ জিলিপির টানে এখানে ছুটে আসেন অসংখ্য মানুষ। তবে এবার সেই ছবির অভাব অনুভব করছেন কারীগর, বিক্রেতা থেকে কেঞ্জাকুড়ার মানুষও। চলতি বছরে অনাবৃষ্টিজনিত কারণে চাষাবাদ না হওয়া ও অন্য দিকে ‘শিল্পগ্রাম’ হাসেবে পরিচিত এই গ্রামের কাঁসা শিল্পও ধুঁকছে। তার মধ্যেও সব কিছুই হচ্ছে নিয়ম মেনে। কিন্ত বিক্রিবাটা তেমন নেই।

লাল, নীল, সবুজ রকমারি জিলিপি

কীভাবে তৈরি এই জিলিপি?

মিষ্টান্ন বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, জিলিপি তৈরির মূল উপাদান বিরির বেসন ও আতপ চালের গুঁড়ি। আগের দিন রাত্রে আতপ চালের গুড়ি, বিরির বেসন, সামান্য পরিমাণে ময়দা একটি বড় পাত্রে জল দিয়ে মেখে রাখা হয়। এই মিশ্রনটিকে বলা হয় ‘খামি’৷ কারিগররা জানান, ‘খামি’ যত পুরনো হবে জিলিপি ততই সুস্বাদু ও মুচমুচে হবে। এরপর ছিদ্র যুক্ত বিশেষ ধরণের কাপড়ের একটি পাত্র থেকে ঘি ভর্তি গরম কড়াইয়ে সাধারণ চলতি জিলিপির মতো তৈরি করা হয়। ভাজা হয়ে গেলে তা চিনির রসে ডুবিয়ে রাখা হয়৷ জিলিপির প্যাঁচ ভেঙ্গে স্বাদ গ্রহণের সুযোগ নিতে এক্ষুনি আপনার গন্তব্য হোক বাঁকুড়া শহর থেকে মাত্র ১৬ কিলোমিটার দূরের প্রাচীণ জনপদ কেঞ্জাকুড়া।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version