এই সময়: নাগেরবাজারের খুন হওয়া বৃদ্ধ কল্যাণ ভট্টাচার্যের (৭২) পোষা ল্যাব্রাডরটিকে উদ্ধার করে আপাতত লেকটাউনের একটি ক্রেশে রেখেছে পুলিশ। শুক্রবার রাতে বৃদ্ধের বাড়ি থেকে যখন পোষ্যটিকে উদ্ধার করা হয় তখন সে ঝিমিয়ে ছিল। তবে পুলিশ জানিয়েছে, বর্তমানে সারমেয়টি সুস্থ রয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, যিনি ওই পোষ্যটিকে ঠিকভাবে দেখভালের দায়িত্ব নিতে পারবেন, তাঁর হাতেই তুলে দেওয়া হবে। তার আগে লিখিতভাবে মুচলেকা দিতে হবে।

পোষ্যটি তার হাতে তুলে দেওয়ার পরেও সেটি ঠিকঠাক আছে কি না, তার উপর নিয়মিত নজর রাখা হবে বলে জানিয়েছেন ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের এক কর্তা। রবিবার কয়েকজন নাগেরবাজার থানায় যোগাযোগ করেছেন সারমেয়টিকে নেওয়ার জন্য। তবে সবার সঙ্গে কথা বলার পরেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

Dumdum Nagerbazar Murder Update : খুনের পর দিঘায় গিয়ে চলে ফূর্তি, চালককে জালে তুলে নাগেরবাজারে বৃদ্ধ হত্যার কিনারা পুলিশের
কল্যাণ ভট্টাচার্যকে খুনের দিন তাঁর পোষ্য সারয়েমটিকে কীভাবে বাগে এনেছিল আততায়ী, তা নিয়ে ধন্দে ছিল পুলিশ। প্রাথমিকভাবে তদন্তকারীদের অনুমান, খুনের আগে ল্যাব্রাডরটির মুখে ঘুমের ওষুধ জাতীয় কিছু স্প্রে করা হয়েছিল। যদিও ধৃত গাড়িচালক সৌরভ মণ্ডল দাবি করেছেন, খুনের সময়ে পোষ্যটি অন্য ঘরে ছিল। তাকে কোনওরকম ওষুধ দেওয়া হয়নি।

গত বুধবার রাতে নাগেরবাজারের নয়াপট্টির বাড়ি থেকে কল্যাণের দেহ উদ্ধারের সময়ে প্রথমে পোষ্যটিকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। পরে সৌরভকে জেরা করে জানা যায়, ল্যাব্রাডরটি ওই বাড়িতেই রয়েছে। শুধু বিএমডব্লিউ গাড়িটি বেড়াতে যাওয়ার জন্য না-পাওয়ার রাগেই বৃদ্ধকে খুন করা হয়েছিল, নাকি খুনের পিছনে অন্য কোনও মোটিভ আছে, তা নিয়ে নিশ্চিত হতে সৌরভকে দফায় দফায় জেরা করছে পুলিশ।

Dumdum Murder Case: BMW চুরি আটকাতে গিয়েই কি খুন বৃদ্ধ? পোষ্য ও গাড়ি দুইয়ের খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ
তদন্তে উঠে এসেছে, মাসখানেক আগে গাড়ির চালক নিয়োগের জন্য সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দিয়েছিলেন কল্যাণ। সেই বিজ্ঞাপন দেখেই তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেন সৌরভ। প্রৌঢ়ের ফোনের কল লিস্ট থেকে জানা গিয়েছে, ১০ সেপ্টেম্বর প্রথম দু’জনের মধ্যে কথা হয়। তদন্তকারীদের দাবি, বন্ধুদের নিয়ে দিঘা যাওয়ার জন্য গাড়িটি দু’দিনের জন্য চেয়েছিলেন সৌরভ। প্রথমে রাজিও হয়েছিলেন কল্যাণ। সৌরভ সে কথাই জানিয়েছিলেন বন্ধুদের।

কিন্তু সৌরভ যখন গাড়ি আনতে যান, তখন কল্যাণ না করে দেন। তখনই রাগের বশে বৃদ্ধকে খুন করেন সৌরভ। জেরায় তাঁর দাবি, গাড়ি না গিয়ে গেলে বন্ধুদের কাছে তাঁর মুখ পুড়ত। এখনও পর্যন্ত খুনের ঘটনার নেপথ্যে সৌরভ ছাড়া আর কারও যোগ এখনও উঠে আসেনি। ধৃতের কাছ থেকে প্রৌঢ়ের একটি আংটি উদ্ধার করেছে পুলিশ। সৌরভ ওই বাড়ি থেকে আরও কিছু নিয়েছেন কি না, তা নিয়ে নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা।

Uttar 24 Pargana News: তালাবন্ধ বাড়ি, ভিতরে বৃদ্ধের পচাগলা দেহ! চাঞ্চল্য দমদমে
ব্যারাকপুর কমিশনারেটের এক কর্তার বক্তব্য, বৃদ্ধের বাড়িতে কত টাকা বা আরও মূল্যবান কী কী জিনিস ছিল, তা আত্মীয়রা কেউ বলতে পারেননি। ফলে, আরও কিছু চুরি গিয়েছে কি না, তা স্পষ্ট নয়।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version