জয় সাহা

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে আসা কেন্দ্রীয় ফান্ডের ব্যবহার নিয়ে তদন্তের প্রয়োজন রয়েছে বলে জানালেন রাজ্যপাল-নিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত ভিসি বুদ্ধদেব সাউ। গত ক’দিন ধরেই তাঁর নিশানায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষকদের একাংশ। এ বার সেই দ্বৈরথে তিনি ‘দুর্নীতি’র অ্যাঙ্গল যোগ করলেন। কিছুদিন আগেই বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত দু’টি বিভাগে মঞ্জুর হওয়া কেন্দ্রীয় ডিপার্টমেন্ট অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির (ডিএসটি) ‘ফিস্ট’ প্রোগ্রামের টাকা খরচে অনুমোদন দেননি তিনি।

উলটে এ ব্যাপারে নতুন ভাবে আলোচনার জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলির কাছে ফেরত পাঠান। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে এ নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। রবিবার এ প্রসঙ্গে বুদ্ধদেব বলেন, ‘আমি প্রয়োজনে তদন্ত করাব। কিন্তু এ ভাবে টাকা খরচের অনুমতি দিতে পারব না। আমার বিরুদ্ধে যাঁরা প্রশ্ন তুলছেন, তাঁদের জিজ্ঞাসা করে দেখুন, দুর্নীতি বা ওই জাতীয় কিছু না হলে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে কেন!’

Jadavpur University : কর্তৃপক্ষে অনাস্তা, ইস্তফা হস্টেল কমিটির প্রধানের
এ নিয়ে ভিসিকে তীব্র কটাক্ষ করেছে শিক্ষক সংগঠন জুটা। সংগঠনের সহ-সাধারণ সম্পাদক রাজ্যেশ্বর সিনহা বলেন, ‘অধ্যাপক-গবেষকরা অক্লান্ত পরিশ্রমে নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণ করে এই ফান্ড আনেন। শিক্ষা প্রশাসকের দায়িত্ব, তা ব্যবহারের পরিবেশ তৈরি করা। তার বদলে কেউ যদি তদন্তের আগে এর মধ্যে দুর্নীতি খোঁজেন, তা হলে তাঁর উদ্দেশ্য এবং অ্যাকাডেমিক ইন্টিগ্রিটি নিয়ে প্রশ্ন উঠবেই।’

২০২২-এ প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত ও পদার্থবিদ্যা এবং পরে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ‘ফিস্ট’ প্রোগ্রামের অনুমোদন পায়। গণিত ও পদার্থবিদ্যার জন্য প্রথমে ২ কোটির উপরে টাকা বরাদ্দ করে কেন্দ্র। তার ২৫% খরচ করলে তবে পরের কিস্তি মিলবে। বিভাগগুলি ডিএসটি-র নিয়ম মেনে কেনাকাটা সংক্রান্ত নথিপত্র ভিসি-র অনুমোদনের জন্য পাঠায়। কিন্তু টাকা খরচে সম্মতি না দিয়ে বিভাগগুলিকে ফের বোর্ড অফ স্টাডিজে তা আলোচনার জন্য পাঠিয়ে দেন বুদ্ধদেব।

Rabindra Bharati University : বারবার জাতিবিদ্বেষের নালিশ রবীন্দ্রভারতীতে: আতসকাচে কিছু কর্তার ভূমিকা
এই পরিস্থিতিতে থমকে গিয়েছে বিভাগগুলির গবেষণার কাজ। নতুন যন্ত্র কেনা থেকে পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজও থমকে বলে অভিযোগ। এই দুই বিভাগের কারণেই আরও বিভাগের টাকা আসা বন্ধ হয়ে গিয়েছে বলে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের দাবি। এই প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক সংগঠন জুরসা-র তরফে অরুণাভ সেনগুপ্তর বক্তব্য, ‘সবচেয়ে বেশি সমস্যায় গবেষকরা। যন্ত্র নষ্ট হয়ে পড়ে। বন্ধ গবেষণার অনেক কাজ।’

বুদ্ধদেবের বক্তব্য, ‘অনুমোদনের আগে ডিএসটি-র বিষয়ে বোর্ড অফ স্টাডিজের রেজ়লিউশন চেয়েছিলাম। কিন্তু ওরা সেটা দিতে পারেনি। কেন পারল না? নিশ্চই কোনও গোলমাল আছে।’ নিজের বিভাগ অর্থাৎ গণিতের অধ্যাপকদেরও কাঠগড়ায় তুলেছেন। তাঁর কথায়, ‘আমার বিভাগে মিটিংয়ে আমাকে ডাকা হয় না।’

Jadavpur University VC : হঠাৎ ভিসি-আফসু ঝামেলা, ফের বিতর্কে যাদবপুর
ভিসির অভিযোগ, ‘একটা দল আছে, যারা সব জায়গায় নিজেদের লোক ঢুকিয়ে রেখেছে। নিজেরাই সিদ্ধান্ত নেয়। এটা চলতে দিতে পারি না।’ ভিসির অভিযোগ নিয়ে মুখ খুলতে চাননি গণিতের বিভাগীয় প্রধান সাগ্নিক সিনহা। তবে রাজ্যেশ্বরের বক্তব্য, ‘শিক্ষামন্ত্রী যথার্থই বলেছেন — শিক্ষকদের প্রতিপক্ষ না ভেবে সমন্বয়ে জোর দিন ভিসি।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version