অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালতের বিচারক সঞ্চিতা সরকার কামদুনির কলেজ পড়ুয়াকে গণধর্ষণ ও খুনে দোষী সাব্যস্ত ছয়জনের মধ্যে তিন জনকে ফাঁসি ও বাকি তিন জনকে আমৃত্যু কারাদণ্ডের সাজা শোনান। ২০০৫ সালে কলকাতার আমেরিকান সেন্টারের সামনে জঙ্গি হামলার ঘটনায় আফতাব আনসারি-সহ ছ’জনের ফাঁসির নির্দেশ দিয়েছিল আলিপুরের বিশেষ আদালত। তারপরে কামদুনির এই ঘটনাতেই প্রথম একসঙ্গে এতজনের ফাঁসির সাজা শোনায় এই রাজ্যের কোনও আদালত।
কেন ফাঁসির সাজা?
কামদুনির ঘটনার নৃশংসতার কথা শুনে কেঁপে উঠেছিল গোটা বাংলা। দিল্লির নির্ভয়ার সঙ্গে তুলনা শুরু হয়েছিল এই কেসের। জনমানসে আলোচনা শুরু হয়েছিল এই কেসও বিরলের মধ্যে বিরলতম। ফাঁসির সাজার পক্ষে সওয়াল করে বিরলতম ঘটনা শব্দের উল্লেখ করা হয় এজলাসে। তার বিরোধিতা করে দোষীদের আইনজীবী বার বার বোঝাতে চেয়েছিলেন এই ঘটনা বিরলতম নয়। বিচারক রায়দানের সময় সে কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘এই ঘটনা যদি বিরলতম না হয় তা হলে কোনটা হবে! এমন নৃশংস অপরাধ বন্ধ করতে সমাজকে কড়া বার্তা দেওয়া দরকার। এমন অপরাধের প্রবণতা অঙ্কুরেই বিনাশ করা দরকার। নইলে এই অপরাধ দাবানলের মতো ছড়িয়ে যাবে।’
এখানেই শেষ নয়, পোস্টমর্টেম করা ডাক্তারের সাক্ষ্য ও রিপোর্টের তথ্য উল্লেখ করে বিচারক সঞ্চিত সরকার রায়দানের সময়ে বলেছিলেন,’ মৃতা তরুণীর নিম্নাঙ্গে আঘাতের ধরন দেখে স্পষ্ট তাঁকে কতটা নৃশংস ভাবে ধর্ষণ করা হয়েছিল।’ অপরাধের বীভৎসতার জন্যই যে এই সাজা তা একরম স্পষ্ট করে দেন বিচারক সরকার। খুন, ধর্ষণ, অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, তথ্যপ্রমাণ লোপাট, জোর করে আটকে রাখার অপরাধের ধারায় দোষীদের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সাজার সংস্থান রয়েছে বলে রায়ের শুরুতেই জানিয়েছিলেন বিচারক সঞ্চিতা সরকার। এই রায়কেই চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে পৌঁছেছিলেন দোষীরা। শুক্রবার সেই মামলায় বদলে গেল দৃষ্টান্তমূলক ফাঁসির সাজা।
দেশ, দুনিয়া ও রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ সমস্ত খবরের জন্য এই সময় ডিজিটালকে ফলো করুন হোয়াটস চ্যানেলে। ক্লিক করুন- https://bit.ly/eisamay-whatsapp-channel