এই সময়, শিলিগুড়ি: প্রায় এক সপ্তাহ সিকিমের লাচুং এবং লাচেনে আটকে থাকার পরে সোমবার থেকে পর্যটকেরা হেলিকপ্টারে ফিরতে শুরু করলেন। বেশির ভাগ পর্যটক যাতে দ্রুত গ্যাংটকে গিয়ে শিলিগুড়িতে নামার বাস ধরতে পারেন, সে জন্য হেলিকপ্টার সোজা গিয়ে নামে পাকিয়ং বিমানবন্দরে। সিকিম রাজ্য প্রশাসন এবং পর্যটন ব্যবসায়ী সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন মোট ৩৫৪ জন পর্যটককে হেলিকপ্টারে পাকিয়ংয়ে নামানো হয়েছে।

তবে আরও কয়েকশো পর্যটক এবং গাড়িচালক হাঁটা পথেই চুঙথাঙয়ে ফিরে আসেন। এদিনই হেলিকপ্টারে ফিরে আসেন বেঙ্গালুরুর বাসিন্দা পেশায় চিকিৎসক নীলম, শীলা এবং নরিন্দর। তাঁরা জানিয়েছেন, সিকিমের এই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পরে সেনা এবং প্রশাসন যে ভাবে পর্যটকদের পাশে দাঁড়িয়েছে, তাতে কোনও প্রশংসাই যথেষ্ট নয়। প্রায় একই মন্তব্য করেছেন বিহারের মুকেশ কুমার এবং সন্তোষ কুমার।

Sikkim Flood News : বাংলার পর্যটকদের ফেরাতে তৎপরতা নবান্নের
শতাধিক গাড়ি চালকদের সঙ্গে সোমবার বিকেলে হাঁটাপথে চুঙথাঙয়ে ফিরেছেন তাঁরা। সন্তোষ কুমার বলেন, ‘সেনাবাহিনীর পাশাপাশি পর্যটন ব্যবসায়ীদেরও প্রশংসা করতে হবে। ওরা নিজেরা কত সমস্যায় রয়েছেন। অথচ আমাদের সার্ভিসে কোনও ঢিলেমি দেখলাম না।’ পর্যটন ব্যবসায়ীরা মনে করছেন, পর্যটকদের এই দিলখোলা প্রশংসাই সিকিমকে ফের ঘুরে দাঁড়াতে সাহায্য করবে।

হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজম ডেভলপমেন্ট নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক সম্রাট সান্যাল বলেন, ‘সিকিমকে ঘুরে দাঁড়াতে সময় লাগবে। তবে পর্যটনের হাত ধরেই ঘুরে দাঁড়াতে হবে। পর্যটকদের এই প্রশংসা তাদের আগামী দিনে পাথেয় হবে।’ গত শুক্রবার থেকেই সিকিম রাজ্য প্রশাসন আটকে পড়া পর্যটকদের ফেরাতে তৎপর হয়। এগিয়ে আসে সিকিমের ট্যুরিজম এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন। প্রথমে বেশ কিছু পর্যটককে কালিম্পং-লাভা হয়ে ফেরত পাঠানো ব্যবস্থা করা হয়।

Sikkim Flash Flood Update: হড়পা বানে উধাও রাস্তা, ভেঙেছে সেতু! সিকিমের কোথায় কোথায় আটকে পর্যটকরা?
কিন্তু প্রতিকূল আবহাওয়ার জন্য লাচুং ও লাচেনে আটকে পড়া হাজার দেড়েক পর্যটকদের নিয়ে সমস্যায় পড়তে হয়। শুক্রবার থেকে পর্যটকদের হেলিকপ্টারে উদ্ধারের জন্য নানা ভাবে চেষ্টা হয়। শেষ পর্যন্ত এদিন সেনাবাহিনীর এম-১৭ এবং চিনুক হেলিকপ্টারে করে লাচুং ও লাচেন থেকে পর্যটকদের নামানো হয়। মঙ্গলবারের মধ্যে বেশির ভাগ পর্যটককে ফেরানো সম্ভব হবে বলে আশা করছেন সেনাবাহিনীর কর্তারা।

তবে কেবল পর্যটকদের ফিরিয়েই থেমে থাকবে না সেনাদের কাজ। সোমবার সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী প্রেম সিং তামাংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেন সেনা আধিকারিকেরা। সেখানে উত্তর সিকিমের যোগাযোগ পুনরুদ্ধার করার ব্যাপারে সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী সেনাবাহিনীর সাহায্য চান। সেনাদের তরফে আশ্বাস দেওয়া হয়।

পাশাপাশি, সেনাদের তরফে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় চলছে তিস্তার প্লাবনে ভেসে যাওয়া গোলাবারুদ উদ্ধারের কাজও। এদিন চুঙথাঙয়ে তেমন প্রচুর বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়। জনবসতি এলাকা থেকে তিস্তার বালিপাথর তোলার আগেই সেনাবাহিনীর তরফে সেই এলাকা পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে, ভিতরে গোলাবারুদ রয়েছে কি না। এদিনই রম্ভিতে জাতীয় জলবিদ্যুৎ নিগমের প্রকল্প এলাকা থেকে বালিপাথর তোলার কাজ শুরু হয়।

Sikkim Airlift : দুর্যোগে আটকে হাজার হাজার পর্যটক, উদ্ধারে এয়ারলিফ্ট শুরু সিকিমে
রবিবার সেখানে সেনা জওয়ানরা পরীক্ষা করে বেশ কিছু বিস্ফোরক সহ অন্যান্য সামগ্রী উদ্ধার করেন। জাতীয় জলবিদ্যুৎ নিগমের এগডিকিউটিভ ডিরেক্টর এল কে ত্রিপাঠী বলেন, ‘কোনও প্রশংসাই সেনাদের জন্য যথেষ্ঠ নয়। তাঁরা আমাদের প্রকল্প এলাকা পরীক্ষা করে গোলাবারুদ উদ্ধার করে নিয়ে না-গেলে দুর্ঘটনা ঘটতে পারত।’

https://whatsapp.com/channel/0029Va9zh58Gk1Fko2WtDl1A



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version