উদ্ধার হওয়া নথিপত্র খতিয়ে দেখে তাঁর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপও করা হতে পারে বলে সিবিআই সূত্রে খবর। শনিবার দিনভর অভিযানের পরে গৌতমের সঙ্গে গ্রেফতার করা হয়েছিল দীপু ছেত্রী নামে এক এজেন্টকেও। আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছিল বরুণজিৎ সিং রাঠোর নামে মিডলম্যানকে। বেশি রাতে তাঁকেও গ্রেফতার করেছেন তদন্তকারীরা।
পশ্চিম এশিয়ার বিভিন্ন দেশ-সহ বিশ্বের অন্যান্য প্রান্তেও মহিলা ও শিশু পাচারের জন্য এই ভুয়ো পাসপোর্ট তৈরির কারবার চলছিল কি না, সেটা সিবিআই খতিয়ে দেখছে। রবিবার গৌতম সাহার বেহালার দু’টো বাড়ি ও ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালায় সিবিআই। বিপুল নথিপত্র উদ্ধার হয়েছে সেখান থেকেও। তাঁর ভাই আশিসকুমার সাহা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়াতেন দাদা, কী করতেন–সে সব কিছুই জানতেন না তাঁরা।
২০২১ সালে হরিদেবপুরে জাল পাসপোর্টের আন্তর্জাতিক চক্রের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে নন্দকিশোর প্রসাদ নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে ছিল দিল্লি পুলিশ। হরিদেবপুরের মহাত্মা গান্ধী রোডে ভাড়া নিয়ে থাকছিলেন ওই ব্যক্তি। ধৃতের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছিল ৮৬টি পাসপোর্ট। মিলেছিল ল্যাপটপ, প্রিন্টার, স্ট্যাম্প, ভারত সরকারের হলোগ্রাম, রাশিয়ার ভুয়ো ভিসা এবং টাকা গোনার মেশিনও। তাঁকে জেরা করে কলকাতা পুলিশের এসটিএফও।
এর পরই জানা যায়, এই চক্রটি গোটা ভারতে ছড়িয়ে রয়েছে। এই চক্রের সঙ্গে কলকাতা এবং গ্যাংটকের যোগসূত্র রয়েছে বলে মনে করছেন সিবিআইয়ের তদন্তকারীরা। সিবিআই সূত্রের খবর, বরুণজিতের বাড়ি তল্লাশি চালানোর সময়ে তাঁর বাড়ি সংলগ্ন একটি গাছে উঠেও বেশকিছু নথিপত্র মেলে। পাশেই একটি আবর্জনার স্তূপ থেকেও মিলেছে বিপুল পরিমাণে পাসপোর্ট সহ বিভিন্ন নথি।
তদন্তকারীদের সন্দেহ, ভুয়ো পাসপোর্ট এবং সেই সংক্রান্ত নথি নষ্ট করে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল। নেপালের অনেক বাসিন্দারই ভারতীয় হিসেবে ভোটার কার্ড, প্যানকার্ড সহ বিভিন্ন নথিপত্র তৈরি করে দিতেন বরুণজিৎ এবং তাঁর দলবলের লোকজন। পাসপোর্ট জালিয়াতির এফআইআর-এ ২৪ জনের নামও রয়েছে।
পাসপোর্ট জালিয়াতি প্রসঙ্গে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘সীমান্তবর্তী এলাকায়। কিছু দুষ্টুলোক এমন কাজ করে থাকেন। বিভিন্ন সময়েই তাঁদের ধরা হয়। এখনও ধরা হচ্ছে।’