২০২১ সাল, চারিদিক ত্রস্ত করোনায়। ভাইরাস ভয়ে মানুষ মানুষকে দেখতে পারছিলেন না। সেই সময় একটি ছোট প্রাণীকে রাস্তায় অসহায়ভাবে পড়ে থাকতে দেখেছিলেন দমদমের পাতিপুকুরের বাসিন্দা মিনাক্ষী মিত্র। প্রথমে তিনি বুঝতে পারেননি কী করবেন। আশাপাশের সকলকে জিজ্ঞাসা করেন, সে কী তাদের? কেউ এগিয়ে আসেনি। এরপর সেই প্রাণীকে কোলে করে বাড়ি ফিরেছিলেন মিনাক্ষী।

আর সেই প্রাণীই এখন আড়াই বছরের। এই মুরগিটিই এখন নতুন ঘর পেয়েছে। মিনাক্ষী তাঁর নাম দিয়েছেন চিকলু। পুজোর সময় যখন চারিদিক আনন্দে মাতোয়ারা সেই সময় বাড়িতে দিব্যি ফ্যানের হাওয়া খেতে খেতে ফুরফুরে মেজাজে রয়েছে চিকলু। মাঝে মধ্যে খাচ্ছে আদর। শহরে সাধারণত সারমেয় এবং বিড়ালরা ‘পোষ্য’-এর মর্যাদা পেলেও মুরগিদের সেই গোত্রে ফেলা হয় না। কেউ কেউ নাক শিঁকটান।

কিন্তু, সেই যাবতীয় ছক ভাঁঙছেন মিনাক্ষী। তিনি জানাচ্ছেন, কলকাতার বুকে দিব্যি বেড়ে উঠছে তার আদরের পোষ্য। কাউকে বলে না দিলে বোঝার উপায় নেই যে তার বাড়িতে একটা মুরগিও রয়েছে।

মিনাক্ষী বলেন, “তখন করোনার সেকেন্ড ওয়েভ। দমদম স্টেশনের নীচে ফ্লাইওভার রেলব্রিজের নীচ দিকে বাজার করে ফিরছিলাম। সেই সময় চিকলুকে দেখেছিলাম। দেখলাম ও পাঁচিলের নীচ দিকে গড়িয়ে পড়ল। অনেক ছোট ছিল ও। সঙ্গে সঙ্গে ওকে কুড়িয়ে নিয়েছিলাম। প্রথমে আশেপাশে সকলকে জিজ্ঞাসা করি যে ও তাদের কিনা। কিন্তু, কেউ এগিয়ে আসেননি। আর সেই সময় আমি বুঝতেই পারিনি ও মুরগির বাচ্চা। কারণ এত ছোট মুরগির বাচ্চা আমি আগে কখনও দেখিনি।”
Durga Puja 2023 : রাত জেগে মণ্ডপ দর্শনে যাবেন, মস্ত চিন্তা বাড়ির পোষ্যরা
তাঁর সংযোজন, “সেই হিসেবে আমি ওকে বাড়ি নিয়ে আসি। বাড়ির সকলকে জিজ্ঞাসা করি ও কীসের বাচ্চা। তারা সেই সময় বলেছিল ও মুরগি। ওকে কোনও জায়গায় দিয়ে আসতে পারিনি। কারণ করোনার জন্য সমস্ত কিছু বন্ধ ছিল। আমার বাপের বাড়িতে অনেকেই মুগরি পোষে। কিন্তু, সেখান পর্যন্ত ওকে পৌঁছে দেওয়ার কোনও উপায় ছিল না। ওর জন্য ফ্যানের ব্যবস্থা রয়েছে যাতে ওর গরম না লাগে ওকে স্নানও করিয়ে দিই।”

ভাড়া বাড়িতে থেকে চিকলুকে লালন পালন করেছেন মিনাক্ষী। তিনি বলেন, “ওর এখন আড়াই বছর বয়স। আমি ভাড়া বাড়িতে থাকি। আমাদের বাড়ির মালিক কোনও আপত্তি তোলেননি। আমি আগে কোনও জীবজন্তু পুষিনি। এখন চিকলুকে দেখভাল করি। তবে ও খুব ভালো। লোককে বলে না দিলে কেউ জানতেও পারবে না এখানে কোনও মুরগি থাকে।”



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version