দুর্গাপুজোর দশমীতে বিষাদের সুর শোনা গিয়েছিল গোটা বাংলায়। আবার এক বছর দেবী দুর্গার জন্য অপেক্ষা। কিন্তু আমাদের রাজ্যেই দশমীর দিন ধরা পড়ল এক অন্য ছবি। বিষাদের উলটো চিত্র ধরা পড়ল উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ শহর থেকে কিছুটা দুরেই খাদিমপুর গ্রামে। দশমীতেই শুরু এখানকার দুর্গাপুজো। দীর্ঘদিন ধরে এই রীতি মেনেই এই গ্রামে পুজো হয়ে আসছে। চারদিন ধরে সাড়ম্বরে হয় দুর্গাপুজো।

বছরের এই একটা সময় আনন্দে মেতে ওঠেন খাদিমপুর গ্রামের আট থেকে আশি সকলেই। পুজোর চারদিন বসে মেলাও। রায়গঞ্জ থানার ১৩ নম্বর কমলাবাড়ি-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের খাদিমপুর গ্রামে এখন শারদীয়ার আনন্দ। তবে দেবী দুর্গাকে এখানে ‘বালাইচন্ডী’ রূপে পুজো করা হয়।

এখানে দেবী দশভূজার বদলে চতুর্ভুজা। চার হাতেই দেবীর অস্ত্র থাকলেও এখানে দেবীর পদতলে নেই মহিষাসুর। তবে অন্যান্য দূর্গামন্ডপের মতো এখানেও দেবী কার্তিক গনেশ, লক্ষী, সরস্বতী নিয়ে রয়েছেন সপরিবারেই। খাদিমপুরের বাসিন্দাদের অধিকাংশই জানেন না কতবছর ধরে এই গ্রামে এই পুজোর রেওয়াজ চলে আসছে। তবে গ্রামের প্রবীণদের কথায়, প্রায় ৫০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে এখানে বালাইচন্ডীর পুজো হয়। দশমীর দিন থেকে শুরু হয়ে পরবর্তী চারদিন নিষ্ঠার সঙ্গে পূজিত হন দেবী।

বালাইচণ্ডীর পুজো চালু রয়েছে বলিপ্রথা। গ্রামবাসীরা দেবীকে ভীষণই জাগ্রত বলে মনে করেন। এই পুজোর সময় বহু দূর দুরান্ত থেকে দর্শনার্থীরা আসেন এই গ্রামে। শারদীয়া উৎসব শেষ হওয়ার পর চারিদিকে এখন বিষাদের সুর বেজে উঠেছে। আর তখনই রায়গঞ্জ শহর থেকে ১৩ কিলোমিটার দূরে খাদিমপুর গ্রামে আগমনীর আগমনে আনন্দে মেতে উঠেছে।

Jagadhatri Puja 2023 : দশমীতে কাঠামো পুজো! বাংলার মন খারাপের দিনে উৎসবের দিনগোনা শুরু চন্দননগরের
পুজো কমিটির কর্মকর্তা নির্মল বর্মন বলেন, ‘কত বছরের পুরানো এই পুজো তা কেউই বলতে পারে না। আনুমানিক ৫০০ বছর ধরে এই একই নিয়মে দশমীর দিনেই শুরু হয় পুজো। বালাইচণ্ডী দেবীর আলোচনায় মেতে ওঠে গোটা গ্রাম। দশমীর রাতে শুরু হওয়া পুজো চলবে তিনদিন। পুজোর পাশাপাশি পুজোকে ঘিরে বসে মেলা। আর এই বালাইচন্ডীরূপী দেবীর মায়ের পুজো খাদিমপুরের মানুষদের কাছে আসল দুর্গাপুজো। এই পুজোকে কেন্দ্র করে আনন্দ উৎসবে মেতে ওঠেন বাসিন্দারা। পুরানো রীতি মেনে আজও খাদিমপুরের এই পুজোয় চলে আসছে দুর্গাপুজো। দেবীকেজাগ্রত মেনে বহু দূর দুরান্ত থেকে দর্শনার্থীরা আসেন খাদিমপুরে। সকলে আনন্দে উদযাপন করি।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version