দলে জল্পনা ছিলই। তবে আরও একধাপ এগিয়ে জেলা নেতাই বলে ফেললেন, ‘মেদিনীপুর কেন্দ্রের প্রার্থী হচ্ছেন দিলীপ ঘোষই।’ তাঁকে বিপুল ভোটে জেতানোর কথাও বলা হয়। তারপর থেকেই দলের অন্দরে খোদ জেলা সভাপতির কাজ নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাঁতনে সম্প্রতি একটি বিজয়া সম্মিলনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন দিলীপ। নারায়ণগড় ব্লকের তুতরাঙা পঞ্চায়েতে ছিল এই সম্মিলনী। সেখানে বক্তৃতা রাখতে গিয়ে প্রথমে নারায়ণগড়ের ৩ নম্বর মণ্ডলের সভাপতি তপন কুইলা প্রথম এই কথা বলেন। পরে মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলার জেলা সভাপতি সুদাম পণ্ডিতও বলেন, ‘দিলীপই এ বারে এই লোকসভা থেকে প্রার্থী হচ্ছেন। তাঁকে আমাদের সবাইকে জেতাতে হবে।’ মঞ্চে থাকা দিলীপ ঘোষ এই প্রসঙ্গে তখনও চুপ। পরে বক্তব্য রাখতে উঠেও কিছুই বললেন না এই নিয়ে। দৃশ্যতই বোঝা গেল, একদা আলটপকা মন্তব্য করে হিট হওয়া দিলীপ এখন একটু সামলে চলতে চাইছেন। তবে গোটা বিষয়ে একাধিক প্রশ্ন উঠেছে। এই গোটা ঘটনা ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসের।

কাট টু, ২৩ মে ২০১৯। লোকসভা ভোটের ফলাফলের দিন। এই নারায়ণগড় থেকে ৭০ কিলোমিটারের মধ্যেই খড়গপুর শহর। হেভিওয়েট প্রার্থী মানস ভুঁইঞাকে হারিয়ে দিয়েছিলেন দিলীপ। মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে জয়ী হলেন বিজেপির তৎকালীন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। ৮৭,১৬৮ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছিলেন তৃণমূলের হেভিওয়েট প্রার্থী মানস। তাঁর প্রাপ্ত ভোট ৫,৯৪,৭৬৭। মেদিনীপুর লোকসভার অন্তর্গত সাতটি বিধানসভা এলাকার মধ্যে ছ’টিতেই পিছিয়ে থেকেছেন তৃণমূল প্রার্থী। এমনকি, পূর্ব মেদিনীপুরের এগরাতেও। এই নারায়ণগড় থেকে দিলীপ ‘লিড’ পেয়েছিলেন ৮,৭৫০ ভোটের, দাঁতন থেকে ৬,৬৫১ ভোট, মেদিনীপুর থেকে ১৬,৫২৩ ভোট, খড়গপুর সদর থেকে ৪৫,১৩২ ভোটের লিড পেয়েছিলেন। সেই দিলীপকে মেদিনীপুরে দাঁড় করানোর যে খুব স্বাভাবিক তা মানছেন দলের কর্মীরাই। তবুও কিছু ফ্যাক্টর রয়েছে।

হায় হরকালী! বিধানসভায় ফের উইকেট পড়ল বিজেপির!

দলের বর্তমান রাজ্য সভাপতির সঙ্গে প্রাক্তন সভাপতির মতানৈক্য বিভিন্ন সময়েও সামনে এসেছে। নানান ইস্যুতে খানিক দ্বন্দ্ব মাঝে মধ্যেই প্রকাশ্যে আসে। পাশাপাশি দিলীপকে আরও কোনও কঠিন কেন্দ্র থেকে দাঁড় করানো হতে পারে বলেও রাজনৈতিক মহলের মত। তবে আগাম নাম ঘোষণা নিয়ে দলের নীঁচুতলার নেতারাও খানিক বিভ্রান্ত। জেলার এক নেতা অরূপ দাস এই সময় ডিজিটালকে বলছেন, ‘ উনি তো জেলা সভাপতি। ওঁর কথা আমাদের কাছে অনেকটাই ধ্রুব সত্য হিসেবে গণ্য হয়। তবে দিলীপদা জয়ী প্রার্থী। তাঁকে দাঁড় করালে সবাই খুশি হবে, সন্দেহ নেই।’ কী বলছেন জেলা সভাপতি? মেদিনীপুর সাংগাঠনিক জেলার বিজেপি সভাপতি এই সময় ডিজিটালকে বলেন, ‘এমন কোনও নির্দেশ দলের তরফে এখনও আসেনি। তবে কর্মীদের ইচ্ছাটাকেই আমি গুরুত্ব দিতে এ কথা বলেছি।’ এ নিয়ে যদিও দিলীপ ঘোষকে বার বার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

BJP West Bengal : ‘চাকরি করা দুঃসাধ্য হয়ে যাবে’, বিডিওকে হুঁশিয়ারি বিজেপি নেতার, সমালোচনায় তৃণমূল
অন্যদিকে, বঙ্গ বিজেপির প্রধান মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘দিলীপদা জয়ী প্রার্থী। নাম ওভাবে বলা হয়ে থাকলে সেটা খানিকটা স্বাভাবিক। কিন্তু, আমাদের দলে একমাত্র পার্টি থেকেই সময়ে নাম ঘোষণা করা হয়, এর বাইরে কিছু নয়।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version