বিতর্কের ঝড় তোলা বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর মেয়াদ ফুরোল বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে। গত কয়েকদিন রাজ্য রাজনীতিতে তুঙ্গে জল্পনা। ইউনেস্কো হেরিটেজ ফলক বসানো নিয়ে কার্যত সমালোচনার মুখে পড়েন বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। মেয়াদ বাড়ানোর কথা চললেও শেষ পর্যন্ত জল্পনার অবসান ঘটিয়ে শেষ হল বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর কার্যকাল। বুধবারই বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর মেয়াদ ফুরোতেই বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব গেল সঞ্জয় মল্লিকের কাছে। ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের দায়িত্ব পেলেন বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সঞ্জয় কুমার মল্লিক।

কে এই সঞ্জয় মল্লিক?

বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে বিদ্যুতের মেয়াদ শেষ হতেই ব্যাটন গেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকের হাতেই। ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য হিসেবে স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন সঞ্জয় কুমার মল্লিক। শান্তিনিকেতনের কলাভবনের অধ্যাপক ছিলেন সঞ্জয়। ১৯৬৭ সালে ১০ মে তাঁর জন্ম। শিক্ষাজীবনের পূর্বস্তরে বিশ্বভারতীর কলাভবনেরই ছাত্র ছিলেন তিনি। ১৯৯১ সালে বিশ্বভারতীর কলাভবন থেকেই স্নাতক হন তিনি। এরপর ভদোদরা বিশ্ববিদ্যালয়ে হিস্ট্রি অফ আর্ট নিয়ে স্নাতকোত্তরের পড়াশোনা শেষ করেন। পরে ওই বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই ২০০৩ সালে পিএইচডি সম্পূর্ণ করেন তিনি। তাঁর রিসার্চের বিষয় ছিল, অঞ্চল ভেদে আধুনিক শিল্প এবং ভারতের মিনিয়েচার পেন্টিংয়ের ধারা।

১৯৯৭ সাল থেকে বিশ্বভারতীতে অধ্যাপনা করছেন সঞ্জয় কুমার মল্লিক। মাঝে জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়তেও অধ্যাপনা করেছেন তিনি। ২০১৪ সালে ফের বিশ্বভারতীতে ফেরেন তিনি। তবে থেকে কলাভবনেই অধ্যাপনা করছেন। বিশ্বভারতীর এক্সজিকিউটিভ ফ্যাকাল্টির সদস্য এবং সবথেকে প্রবীণ অধ্যাপক হওয়ার সৌজন্যেই তাঁকে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

এদিন বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর পরিবর্তে সঞ্জয় কুমার মল্লিকের দায়িত্ব পাওয়ার খবরে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া ও অধ্যাপকদের একাংশের মধ্যে উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে পড়ে। শুরু হয়ে যায় মিষ্টি বিলিও। নয়া উপাচার্যের দায়িত্ব নেওয়ার পরই ভেসে আসতে থাকে শুভেচ্ছা বার্তা। অধ্যাপকদের এক হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য সঞ্জয় কুমার মল্লিককে শুভেচ্ছা জানিয়ে লেখা হয়, ‘শুধুমাত্র কাগজের পরিবর্তে ছাত্র ছাত্রীদের কথা ভাবার অনুরোধ রইল।’

এদিন সন্ধেয় বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়াদ শেষ হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়তেই খুশি শান্তিনিকেতন বাসীদের একাংশও। সাধারণ মানুষ, ব্যবসায়ী সমিতি ও তৃণমূল কর্মীদের কয়েকজনকে বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর মরণযাত্রা বের করতে দেখা গেল। হরিনাম সংকীর্তন করতে করতে বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর প্রতীকী শবদেহ কাঁধে করে নিয়ে শান্তিনিকেতন পরিক্রমা করলেন তারা।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version