বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের অ্যানাটমি বিল্ডিং থেকে মৃতদেহ পাচার কাণ্ডে গ্রেফতার পাঁচ। ধৃতদের নাম অবিনাশ মল্লিক, গৌতম ডোম, নন্দলাল ডোম, সুমন মিত্র ও শম্ভু মিত্র। বৃহস্পতিবার ধৃত ৫ জনকে আদালতে পেশ করে বর্ধমান থানার পুলিশ। তাদের মধ্যে অবিনাশ মল্লিক, গৌতম ডোম, নন্দলাল ডোমকে ৮ দিনের পুলিশি হেফাজত এবং সুমন মিত্র ও শম্ভু মিত্রকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

ইতিমধ্যেই ঘটনার জোরকদমে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। জানা গিয়েছে, অবিনাশ মল্লিক মেডিক্যাল কলেজের ফরেন্সিক বিভাগের কর্মী। তার বাড়ি দার্জিলিঙে। গৌতম ডোম ও নন্দলাল ডোম মেডিক্যাল কলেজের অ্যানাটমি বিভাগের কর্মী। তাদের বাড়ি বর্ধমান শহরে। আর সুমন মিত্র ও শম্ভু মিত্র শববাহী গাড়ির চালক। তারা বর্ধমানের বাবুরবাগ এলাকার বাসিন্দা। এই পাচার কাণ্ডে ভিন রাজ্যের যোগ আছে বলেই মনে করছে জেলা পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে, গোটা ঘটনায় তদন্তকারীরা উত্তরাখণ্ড যোগ পেয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে।

রাজ্যে কঙ্কাল পাচার চক্র
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়ারা নিজেদের পড়াশোনার জন্য অনেক দাম দিয়ে কঙ্কাল কেনেন। সেই কঙ্কাল সরবরাহ করার জন্য একটি চক্র বহুদিন ধরেই রাজ্যে সক্রিয় রয়েছে। আটক হওয়া ব্যক্তিরা এই চক্রের সঙ্গে যুক্ত কি না, তাও তদন্তকারীরা খতিয়ে দেখছেন। এক্ষেত্রে ওই মৃতদেহগুলি উত্তরাখণ্ডে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল কি না, তা ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করেই জানা যাবে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। পুলিশ আধিকারিকরা মনে করছেন, চক্রের মূল পাণ্ডা কঙ্কাল পাচার চক্রের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারে।

ঘটনার সূত্রপাত বুধবার
প্রসঙ্গত, বুধবার সকালে অ্যানাটমি বিল্ডিং(মর্গ) থেকে একটি শববাহী গাড়িতে করে তিনটি মৃতদেহ পাচারের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু দেহগুলি গেটের কাছে পৌঁছতেই নিরাপত্তারক্ষীরা কাগজ দেখতে চান। কিন্তু গাড়ির মধ্যে থাকা ব্যক্তিরা সঠিক কাগজ দেখাতে না পারায় নিরাপত্তারক্ষীদের সন্দেহ হয়। তারা খবর দেয় বর্ধমান থানায়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে গাড়ি সহ-তিনটি মৃতদেহ এবং দেহাংশ উদ্ধার করে। মৃতদেহগুলি অ্যানাটমি বিভাগে ফেরত পাঠানো হয়।

বেওয়ারিশ লাশ পাচারের চেষ্টা
জানা গিয়েছে, ওই মৃতদেহগুলি খাতায়-কলমে ‘বেওয়ারিশ’ হিসেবে উল্লেখ রয়েছে। সেক্ষেত্রে ওই বিল্ডিং থেকে কী ভাবে মৃতদেহগুলি বের করা হল, তা তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। গতকাল তদন্তের স্বার্থে প্রথমে সাতজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন তদন্তকারীরা। পরে ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version