বুধবার শববাহী গাড়িতে তিনটি দেহ পাচারের চেষ্টার অভিযোগে আটক পাঁচ জনকে রাতভর জিজ্ঞাসাবাদের পরে গ্রেফতার করে বর্ধমান থানার পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা দেহ পাচারের কথা স্বীকার করেছে। তাদের কাছ থেকেই পুলিশ জানতে পেরেছে, এর সঙ্গে জড়িত রয়েছে বর্ধমান মেডিক্যালের অ্যানাটমি বিভাগের বেশ কয়েকজন।
এমন দু’জনের সন্ধানও পেয়েছে পুলিশ। দেহ পাচারের ঘটনায় ধৃতরা হলো শববাহী গাড়ির চালক সুমন মিত্র, বর্ধমান মেডিক্যালের অ্যানাটমি বিভাগের কর্মী অবিনাশ মল্লিক, গৌতম ডোম, নন্দলাল ডোম ও শম্ভু মিত্র। ধৃতদের বৃহস্পতিবার বর্ধমান সিজেএম আদালতে পেশ করা হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আরামবাগের প্রফুল্লচন্দ্র সেন গভর্নমেন্ট মেডিক্যাল কলেজের অ্যানাটমি বিভাগ সাজানোর বরাত পান সেখানকার কর্মী প্রদীপ মল্লিক। কলকাতার নীলরতন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অ্যানাটমি বিভাগ থেকে প্রদীপ সন্ধান পান অবিনাশ মল্লিকের। প্রদীপ আরামবাগের মেডিক্যাল কলেজের অ্যানাটমি বিভাগের জন্য অবিনাশকে ৬টি দেহ দেওয়ার বরাত দেন।
বিনিময়ে মোটা টাকার রফাও হয়। সেই মতো বর্ধমান মেডিক্যালের অ্যানাটমি বিভাগ থেকে দেহ সরানোর জন্য গৌতম ডোম ও নন্দলাল ডোমকে বলে অবিনাশ। প্রাথমিক ভাবে প্রথমে তিনটি ও পরে আরও তিনটি দেহ নিয়ে যাওয়ার কথা হয়। বুধবার সকালে প্রথম ধাপের তিনটি দেহ পাচার করা হচ্ছিল। কিন্তু কলেজের নিরাপত্তারক্ষীদের তৎপরতায় শেষ রক্ষা হয়নি। কলেজের গেটেই ধরা পড়ে যায় দেহ পাচারের চক্রান্ত।
আরামবাগ মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ রামপ্রসাদ রায় বলেন, ‘প্রদীপ মল্লিক এই কলেজেরই কর্মী। কিন্তু এ ভাবে কলেজের জন্য দেহ নিয়ে আসা সম্ভব নয়। এর জন্য প্রয়োজনীয় চিঠিপত্র করতে হয় দুই মেডিক্যাল কলেজের মধ্যে। এ সব কিছুই হয়নি। আমাদের কলেজে এ ভাবে দেহ নিয়ে আসার কোনও পরিকল্পনা ছিল না।’
আদালতে নিয়ে যাওয়ার সময় নন্দলাল ডোম বলেন, ‘অবিনাশ আমাদের পরিকল্পনা করে ফাঁসিয়ে দিয়েছে। আমরা এসবের মধ্যে কোনওদিনই ছিলাম না।’ অবিনাশের কাছ থেকেই পুলিশ প্রদীপের শ্বশুরবাড়ির সন্ধান পায়। বুধবার রাতেই বর্ধমান থানার পুলিশ অবিনাশকে নিয়ে দক্ষিণেশ্বরে প্রদীপের শ্বশুরবাড়িতে অভিযান চালায়। কিন্তু সেখান থেকেও সে পালিয়ে যায়।