দোরগোড়ায় লোকসভা নির্বাচন। চারিদিকে সাজ সাজ রব। উন্নয়নের হালহকিকত তুলে ধরা হচ্ছে, ভাঙা গড়ার গুঞ্জন চলছে। কিন্তু, বঙ্গ রাজনীতির ‘চানক্য’ মুকুল রায় নিভৃতেই। মাত্র এক বছর আগের কথা! মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালীঘাটের বাড়িতে ভাইফোঁটার দিন হাজির হয়েছিলেন মুকুল রায়। পদ্ম-ঘাসফুল দুই শিবিরের উথাল পাতাল। তিনি গিয়েছিলেন, ফোঁটা নিয়েছিলেন, বেরিয়ে এসেছিলেন। আর এই তিনটি দৃশ্যপটই বঙ্গ রাজনীতিকে নাড়িয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট ছিল।

স্ত্রীর মৃত্যুর পর থেকেই শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছেন মুকুল রায়। কিন্তু, এপ্রিল মাসে ফের একবার শিরোনামে উঠে এসেছিলেন এই রাজনীতিবিদ। আচমকাই দিল্লি গিয়েছিলেন তিনি। তবে কি ফের একবার পদ্ম শিবিরে তিনি নাম লেখাতে চলেছেন? তা নিয়ে যখন বিস্তর তোলপাড় চলছিল সেই সময় মুকুল পুত্র স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, ‘বাবার মানসিক অবস্থা ঠিক নেই।” এরপর তিনি বাংলায় ফিরেছন। কিন্তু, সেভাবে রাজনীতির ময়দানে সক্রিয় ভূমিকায় দেখা যায়নি তাঁকে। এখন কেমন আছেন তিনি?

মুকুল রায়ের পুত্র শুভ্রাংশু রায় বলেন, “বাবা খুব ভালো নেই। খুব খারাপও নেই। আজ পিসি বাবাকে ভাইফোঁটা দিলেন। তিনি ফোঁটা নেন। কিন্তু, সেই আগের মতো বিষয়টা নেই।” মুকুল রায় নিজে হাঁটতেও পারেন না। কারও সাহায্য লাগে, জানালেন তাঁর ছেলে। তিনি আরও বলেন, “বাবাকে ধরে ধরে নিয়ে যেতে হয়। খাওয়া দাওয়া করছেন। কিন্তু, ব্রেনের সমস্যাটা রয়ে গিয়েছে।”

একা না হাঁটতে পারায় বাড়ি থেকেও খুব একটা বেশি বার হন না দোর্দন্ডপ্রতাপ এই নেতা। শুধু তাই নয়, একসময় রাজ্যের যে কোনও নির্বাচনের আগে তাঁর ক্ষুরধার বুদ্ধি দিয়ে তিনি সবদিক বিবেচনা করতেন। দলের হয়ে স্ট্র্যাটিজি তৈরি করতেন।

কিন্তু, সেই মুকুল রায় আজ রাজনীতি থেকে অনেকটাই দূরে বলে জানাচ্ছেন তাঁর ছেলে শুভ্রাংশু রায়। তিনি বলেন, “বাবা এখন আর রাজনীতির খবর রাখেন না। খবর পড়ার মতো পরিস্থিতিতে নেই। পুরনো লোকদের চিনতে পারছেন। তবে কথা ভুল বলছেন। কোনও কোনও সময় ২০০৪-০৫-এর কথা বলছেন। আবার কিছু কিছু সময় পুরো ভুলে যাচ্ছেন।”

প্রসঙ্গত, স্ত্রীর মৃত্যুর পর মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন মুকুল রায়। তাঁর একাধিক শারীরিক সমস্যা দেখা গিয়েছিল বলে জানিয়েছিলেন ছেলে শুভ্রাংশু। আপাতত নিয়মিত তিনি চিকিৎসকদের পরামর্শ মোতাবেক রয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version