এই সময়: ডান হাতের কড়ে আঙুলটা আলাদা হয়ে গিয়েছিল কোল্যাপসিবল গেটে আটকে। অসহ্য যন্ত্রণার মাঝেই চিরতরে আঙুল হারানোর মনোকষ্টে ক্রমেই অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়ছিল যুবক। কিন্তু তার মাঝেও কাটা সে অঙ্গের যথাযথ সংরক্ষণ এবং তড়িঘড়ি বড় হাসপাতালে আসার সিদ্ধান্তে বেঁচে গেল ওই আঙুলটি।

একেবারে মাঝরাতে জরুরি ভিত্তিতে টানা ৬ ঘণ্টার অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে কাটা আঙুল সম্পূর্ণ ঠিকঠাক ভাবে জুড়ে দিয়ে অসাধ্যসাধন করলো শহরেরই একটি বেসরকারি হাসপাতাল। মেডিকা সুপার-স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের প্লাস্টিক তথা রিকনস্ট্রাক্টিভ সার্জেন অখিলেশকুমার আগরওয়ালের দক্ষতায় এখন স্বাভাবিক জীবনে ফেরার অপেক্ষায় সাহিলকুমার পাল।

চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কেটে যাওয়া অঙ্গের যথাযথ সংরক্ষণ হয় না বলেই সেটি আর জুড়ে দেওয়ার মতো অবস্থায় থাকে না। জোড়ার চেষ্টা করা হলেও সংক্রমণের কারণে সফল হয় না অস্ত্রোপচার। অখিলেশ জানাচ্ছেন, এ ক্ষেত্রে তেমনটা হয়নি। কাটা কড়ে আঙুলটি যথাযথ ভাবে সংরক্ষণ করে খুব অল্প সময়ের মধ্যে সাহিল হাসপাতালে এসেছিলেন বলেই তাঁরা সফল ভাবে আঙুলটি জুড়ে দিতে পেরেছেন।

প্লাস্টিক সার্জেনরা জানাচ্ছেন, কাটা অঙ্গ যতটা সম্ভব পরিষ্কার জলে (সম্ভব হলে প্যাকেজড স্যালাইন ওয়াটারে) ধুয়ে নিতে হয়। তার পর সেটি একটি পরিষ্কার প্লাস্টিকের প্যাকেটে মুড়ে নিতে হয়। অঙ্গ সমেত সেই প্লাস্টিক প্যাকেটটি একটি বরফকুচি ভর্তি বড় প্লাস্টিকে ভরে নিতে হয়। খেয়াল রাখতে হয়, বরফ যেন সরাসরি অঙ্গের সংস্পর্শে না-আসে।

একটি বিপিও-তে কর্মরত বছর তেইশের সাহিল জানাচ্ছেন, গত ৩০ অক্টোবর অফিস থেকে নরেন্দ্রপুরের ফ্ল্যাটে ফেরার পর তাঁদের অ্যাপার্টমেন্টে এই কাণ্ডটি ঘটে। তখন ঘড়িতে প্রায় রাত ৯টা। দেরি না করে তখনই পরিবারের তরফে মেডিকার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হয়। হাসপাতাল থেকে বলা হয়, আঙুলটি কী ভাবে যথাযথ সংরক্ষণ করে দ্রুত হাসপাতালে আসতে হবে।

রাত ১১টা নাগাদ বাইপাস লাগোয়া মুকুন্দপুরের এই বেসরকারি হাসপাতালে এসে পৌঁছান সাহিল। ততক্ষণে সার্জারি টিম প্রস্তুত। কয়েকটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যপরীক্ষার পরেই রাত সাড়ে বারোটা নাগাদ তাঁরা শুরু করে দেন অপারেশন। সফল অস্ত্রোপচারে স্বাভাবিক ভাবে রক্ত সঞ্চালন শুরু হয় কেটে আলাদা হয়ে যাওয়া আঙুল জোড়ার পর। সাহিল জানাচ্ছেন, ৫ নভেম্বর হাসপাতাল থেকে ছুটি মিললেও নিয়মিত চেক-আপে ছিলেন তিনি। সাপ্তাহিক পর্যালোচনার পর তাঁকে এখন বিপদমুক্ত জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version