কালী পুজো শেষ হতেই ঘুম লেগে যায় জগদ্ধাত্রী এবং রাস উৎসবের। এই উৎসব নিয়ে নবদ্বীপ এলাকার মানুষ আনন্দে আত্মহারা হয়ে উঠেছে। সারা বছর ধরে সকলেই এই কটা দিনের জন্য অপেক্ষা করে থাকেন। ঠিক তেমনি জগদ্ধাত্রী এবং রাস পূর্ণিমায় অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি প্রসাদ হল মঠ। হিন্দু ধর্মের পুজো শুকনো প্রসাদ হিসেবে ব্যবহার করা হয় মঠ। প্রচুর স্তম্ভের মতো আকারের, ফুটখানেক উচ্চতা বিশিষ্ট চিনি দিয়ে বানানো এই মিষ্টি ব্যবহার করা হয় হিন্দু ধর্মের বিভিন্ন পুজোতে। এছাড়াও সাদা থেকে রঙবেরঙের, কোনওটা ঘোড়া তো কোনওটা পাখি, ছাঁচে ফেলে তৈরি করা এই মিষ্টি বাচ্চাদের খুব আকৃষ্ট করে তাই অনেকে একে খেলনা বলেও চেনে।

এই মঠ সাধারণত তৈরি করা হয় চিনি জ্বাল দিয়ে। তারপর সেই তরল পদার্থ ছাঁচে ফেলে প্রস্তুত করা হয় এই মঠ। নবদ্বীপের অন্যতম শ্রেষ্ঠ উৎসব রাস। এই উৎসবে মঠের চাহিদা অধিক। নবদ্বীপের রাস উৎসবে এই মঠের চাহিদা থাকে অন্য মাত্রায়। রাসের দিন সকালে নবদ্বীপে রয়েছে নবমীর প্রথা। এই দিন প্রত্যেক পুজো কমিটি মাথায় করে বিশালাকার মত নিয়ে বাজনা সহকারে প্রদক্ষিণ করে শহরে রাজপথ। এই মঠের আকার ও আয়তন ভিন্ন রকমের হয়। কোনটির ওজন হয়তো ৭০০ থেকে শুরু করে ছয় কেজি কিংবা তারও অধিক হয়। আবার উচ্চতাও ভিন্ন হয়। দু ফুট থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ পাঁচ ফুটের আকারেও মঠ তৈরি করা হয়।

মাজদিয়া টুঙ্গির মোড়ে রয়েছে সনাতন বাবুর মঠ বানানোর কারখানা। সনাতন বাবু বলেন, এ বছর তাদের তৈরি মঠের চাহিদা অধিক। কিন্তু চিনির দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় তারা কিছুটা সমস্যার সম্মুখীন। সেটা হতে হলেও তারা সে সমস্যা কাটিয়ে মঠ তৈরিতে ব্যস্ত। ফলে দাম বাড়ছে মঠের। এই মঠের মূল্য প্রতি কেজি ১০০ টাকা । আগে এর মূল্য ছিল ৮০ টাকা কিলো। সনাতন বাবু বলেন, চিনির ও জ্বালানির দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় মঠের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। কাঠের জ্বালে চিনি গরম করে মঠ প্রস্তুত করা হয় । এই মঠ তৈরি হয়ে যাওয়ার পর, ব্যবসায়ীরাই এই মঠগুলি পৌঁছে দেন চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্ন বাজারে। রাস থেকে জগদ্ধাত্রী পুজোর উপকরণে খই মুড়কির সঙ্গে অত্যাবশকীয় এই মঠ।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version